সোমবার, ২২ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

বিশ্বে খ্যাতিমান যত বাঙালি

জামশেদ আলম রনি

বিশ্বে খ্যাতিমান যত বাঙালি

বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে আছেন খ্যাতিমান বাঙালিরা। তাঁদের নানা অর্জনকে স্বীকৃতি দিয়েছে গোটা পৃথিবী। বিশ্ব রাজনীতি থেকে শুরু করে বিজ্ঞান, শিল্পকলা, গবেষণা প্রতিটি ক্ষেত্রেই তাঁরা নিজেদের নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। খ্যাতিমান কয়েকজনকে নিয়ে আজকের রকমারি। পরবর্তীতে বিশ্ব পরিসরে সফল বাঙালিদের নিয়ে আরও আয়োজন থাকবে।

 

মুহাম্মদ ইউনূস

ক্ষুদ্র ঋণের প্রবক্তা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৪০ সালের ২৮ জুন চট্টগ্রামের হাটহাজারীর বাথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে দারিদ্র্য মোকাবিলার সুযোগ সৃষ্টির জন্য মুহাম্মদ ইউনূস ও তাঁর সৃষ্ট গ্রামীণ ব্যাংক ২০০৬ সালে যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। এশিয়া, আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকাসহ পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই গ্রামীণ ব্যাংকের মডেলে ক্ষুদ্র ঋণব্যবস্থা প্রচলিত। বিখ্যাত টাইম ম্যাগাজিন ইউনূসকে একজন এশিয়ান হিরো এবং ২০০৮ সালে বিশ্বের ১০০ জন পাবলিক ইনটেলেকচুয়ালের মধ্যে অন্যতম হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। ড. ইউনূস রচিত বইগুলোর মধ্যে তাঁর আত্মজীবনী ব্যাংকার টু দ্য পুওর, ক্রিয়েটিং অ্যা ওয়ার্ল্ড উইদাউট পোভার্টি ও বিল্ডিং সোশ্যাল বিজনেস আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক স্বীকৃতি লাভ করেছে। দারিদ্র্য দূরীকরণে গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্র ঋণের সাফল্য এবং সামাজিক ব্যবসার মানবিক অর্থনৈতিক তত্ত্ব ইউনূসকে ভূষিত করেছে ১১২টি আন্তর্জাতিক পুরস্কারে।  এর মধ্যে রয়েছে আমেরিকার প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম, আমেরিকার কংগ্রেশনাল গোল্ড মেডেল, র‌্যামন ম্যাগসাইসাই অ্যাওয়ার্ড, ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ, আগা খান অ্যাওয়ার্ড, সিডনি পিস প্রাইজ, সিউল পিস প্রাইজ প্রভৃতি।

 

অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

২০১৯ সালে অভিজিতের সঙ্গে যুগ্মভাবে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন এসথার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইকেল ক্রেমার

অর্থনীতিবিদ বাবা-মায়ের সন্তান অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৬১ সালে মুম্বাইয়ে। হার্ভার্ডে পড়তে গিয়ে শুরু করেন সমাজবিজ্ঞানের সমান্তরালে অর্থনীতিকে দেখতে শেখার অভ্যাস। ২০০৩ সালে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (এমআইটি) ‘আবদুল লতিফ জামিল পভার্টি অ্যাকশন ল্যাব’ বা ‘জেপ্যাল’ গঠন করেন। এ কাজে অভিজিতের সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী এসথার ডুফলো ও সেনথিল মুলাইনাথান। ২০১৯ সালে অভিজিতের সঙ্গে যুগ্মভাবে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন এসথার ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইকেল ক্রেমার। ২০০৮ সালে নিউইয়র্ক টাইমস সমকালীন বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্থনীতিবিদদের একটি সমীক্ষা চালায়। সেখানে দেখা যায়, সব পরিমাপেই তালিকার শীর্ষে রয়েছেন অভিজিৎ, এসথার ও তাঁদের চিন্তার ফসল ‘জেপ্যাল’। ১৬ বছর ধরে তাঁদের গবেষণা থেকে উঠে এসেছে বেশ কিছু যুগান্তকারী চিন্তাধারা।  ২০১৯ সালে প্রকাশিত হয় অভিজিৎ ও এসথারের ‘হোয়াট দ্য কান্ট্রি নিডস নাও’ শীর্ষক বইটি।

 

সত্যজিৎ রায়

বাঙালি কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায় তাঁর অপু ট্রিলজি পায় বিশ্বপরিচিতি

বাঙালি কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়। চলচ্চিত্র, নাটক, সাহিত্য, চিত্রকলা এমনকি সংগীতে ছিল তাঁর অবাধ বিচরণ। বাংলা চলচ্চিত্রকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন সত্যজিৎ। ১৯২১ সালের ২ মে কলকাতার বিখ্যাত রায় পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন সত্যজিৎ রায়। বাবা সুকুমার রায় এবং পিতামহ উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী। তাদের পৈতৃক নিবাস কিশোরগঞ্জে। সত্যজিৎ রায় ১৯৫২ সালে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিখ্যাত উপন্যাস ‘পথের পাঁচালী’ নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ১৯৫৫ সালে ছবিটির নির্মাণ সম্পন্ন হয় এবং সে বছরই ছবিটি মুক্তি দেওয়া হয়। মুক্তি পাওয়ার পর ছবিটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। পরবর্তীতে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্প-উপন্যাস অবলম্বনে ‘অপরাজিত’ ও ‘অপুর সংসার’ নামে আরও দুটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন।  এ তিনটি চলচ্চিত্র অপু ট্রিলজি হিসেবেই পরিচিত।

 

পণ্ডিত রবি শঙ্কর

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনিকনসার্ট ফর বাংলাদেশ আয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন

রাগ সংগীতের কিংবদন্তি, বাঙালি সংগীতজ্ঞ ও প্রখ্যাত সেতারবাদক পণ্ডিত রবি শঙ্করের জন্ম ১৯২০ সালে। তাঁর পৈতৃক বাড়ি নড়াইলের কালিয়ায়। শৈশব থেকেই বাদ্যযন্ত্রের পরিবেশে বেড়ে ওঠেন এবং বিভিন্ন ধরনের বাদ্যযন্ত্রে আগ্রহী ছিলেন। নাচের মাধ্যমে শিল্পের জগতে প্রবেশ করেন তিনি। এক্ষেত্রে তাঁর ভাই উদয় শঙ্কর অনেক সহায়তা করেন। ১৮ বছর বয়সে তিনি নাচ ছেড়ে দিয়ে সেতার শিখতে শুরু করেন। তাঁর মাস্টার আলাউদ্দিন খানের কাছ থেকে নেন দীক্ষা। তাঁর বাবা শ্যাম শঙ্কর চৌধুরী ছিলেন একজন রাজনীতিবিদ এবং আইনজ্ঞ। একুশ বছর বয়সে পণ্ডিত রবি শঙ্কর তাঁর গুরু আলাউদ্দিন খানের কন্যা অন্নপূর্ণা দেবীকে বিয়ে করেন। পশ্চিমে ভারতীয় সংগীতকে জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে তাঁর অবদান অনেক।  বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সহায়তার লক্ষ্যে ১৯৭১ সালের ১ আগস্ট জর্জ হ্যারিসনের সঙ্গে ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ আয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

 

মনিরুল ইসলাম

স্পেনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাঁর বহু একক যৌথ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলাম। তাঁর জন্ম জামালপুরের ইসলামপুরে, ১৭ আগস্ট ১৯৪৩ সালে। বিশেষ খ্যাতিমান ছাপচিত্রের জন্য তিনি বিশ্বব্যাপী পরিচিত। তিনি ঢাকা চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে চারুকলার পাঠ শেষে সেখানেই শিক্ষকতা শুরু করেন ১৯৬৬ সালে। পরবর্তীতে স্পেন সরকারের বৃত্তি নিয়ে সে দেশে যান উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের জন্য। স্পেনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাঁর বহু একক ও যৌথ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৯৭ সালে তিনি স্পেনের রাষ্ট্রীয় পদক পান। ২০১০ সালে তিনি ভূষিত হন স্পেনের মর্যাদাপূর্ণ সম্মাননা দ্য ক্রস অব দি অফিসার অব দি অর্ডার অব কুইন ইসাবেলায়, ২০২০ সালে স্পেনের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান রয়েল মেরিট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। তিনি দেশে ১৯৯৯ সালে একুশে পদক, শিল্পকলা একাডেমি পদকসহ বিভিন্ন পদক ও সম্মাননা লাভ করেন।

 

পার্থ প্রতিম মজুমদার

তিনি বাংলাদেশের মূকাভিনয় শিল্পের পথিকৃৎ পেয়েছেন ফ্রান্স সরকারের শেভালিয়র উপাধি

পার্থ প্রতিম মজুমদার বাংলাদেশের মূকাভিনয় শিল্পের পথিকৃৎ। ফ্রান্স প্রবাসী এ শিল্পী মূকাভিনয়ের বিচারে বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন। সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ফ্রান্স সরকারের শেভালিয়র উপাধি পান তিনি। তিনিই প্রথম বাংলাদেশি, যিনি ফ্রান্স সরকারের এ বিরল সম্মান অর্জন করেন। তাঁর অভিনীত একটি ফরাসি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ২৬টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার পায়। ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, নাইকি, আইবিএম ও ম্যাকডোনাল্ডের মতো বিশ্বখ্যাত কোম্পানির পণ্যের প্রচারে মডেল হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। তাঁর মাধ্যমেই বাংলাদেশে মূকাভিনয় পরিচিতি লাভ করে। তিনি ১৯৫৪ সালের ১৮ জানুয়ারি পাবনা জেলার কালাচাঁদপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত ঢাকা মিউজিক কলেজ থেকে স্নাতক হন। মূকাভিনয়শিল্পে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১০ সালে একুশে পদক পান তিনি।

 

জামাল নজরুল ইসলাম

তাঁর লেখাদ্য আলটিমেট ফেইট অব দ্য ইউনিভার্স সারা বিশ্বে হইচই ফেলে

বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী ড. জামাল নজরুল ইসলামের জন্ম ১৯৩৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহে। তিনি ১৯৬০ সালে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করেন। ১৯৬৪ সালে সেখান থেকেই প্রায়োগিক গণিত ও তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। জামাল নজরুল ইসলাম মৃত্যুর আগ পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ সেন্টার ফর ম্যাথমেটিক্যাল অ্যান্ড ফিজিক্যাল সায়েন্সের গবেষক এবং চুয়েটের সিন্ডিকেট সদস্য ছিলেন। ১৯৮৩ সালে তাঁর লেখা গবেষণাগ্রন্থ ‘দ্য আলটিমেট ফেইট অব দ্য ইউনিভার্স’ সারা বিশ্বে হইচই ফেলে। রোটেটিং ফিল্ডস ইন জেনারেল রিলেটিভিটি, অ্যান ইন্ট্রোডাকশন টু ম্যাথমেটিক্যাল কসমোলজি, কৃষ্ণ বিবর তাঁর উল্লেখযোগ্য বই। বিশ্বের স্বনামধন্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি শিক্ষকতা করেন। ২০১৩ সালের ১৬ মার্চ এই মহান বিজ্ঞানী মৃত্যুবরণ করেন।

 

এম জাহিদ হাসান

ভরহীন কণা ভাইল-ফার্মিয়ন আবিষ্কার করে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সাড়া ফেলেন তিনি

বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ড. এম জাহিদ হাসান যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছেন। ভরহীন কণা ভাইল-ফার্মিয়ন আবিষ্কার করে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সাড়া ফেলেন তিনি। এ ছাড়াও চলতি বছর জিতেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সম্মানজনক দ্য আর্নেস্ট অরল্যান্ডো লরেন্স অ্যাওয়ার্ড। গত ১২ অক্টোবর তিনি মুসলিম বিশ্বের নোবেল খ্যাত ইরানের মুস্তফা (সা.) পুরস্কার লাভ করেন। বিজ্ঞানী জাহিদ হাসানের বাড়ি গাজীপুরের শ্রীপুরে। ঢাবির গণিত বিভাগে ভর্তি হওয়ার কিছুদিন পরই তিনি বৃত্তি নিয়ে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। অস্টিনের টেক্সাস ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন পদার্থবিজ্ঞানে। এরপর মাস্টার্স ও পিএইচডি করতে চলে যান স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০২ সালে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টরেট করেন। আমেরিকান একাডেমি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সের নির্বাচিত ফেলো হাসান ২০১৪ সাল থেকেই ওয়াশিংটন ডিসিতে ‘অ্যাসপেন ইনস্টিটিউট’-এরও ফেলো।

 

জাওয়েদ করিম

ভিডিও শেয়ার করতে তৈরি করেন ইউটিউব বিশ্বব্যাপী হয়ে ওঠেন আলোচিত প্রযুক্তিবিদ

ইউটিউবের সহপ্রতিষ্ঠাতা জাওয়েদ করিম। জন্ম তাঁর জার্মানিতে। তাঁর বাবা প্রবাসী বাংলাদেশি। ইউটিউবের ধারণা নিয়ে জাওয়েদ যখন তাঁর দুই সহকর্মীর সঙ্গে কাজ শুরু করেন তখন তিনি স্টেনফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে লেখাপড়া করছিলেন। ছাত্র থাকা অবস্থায় তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। পেপালে চাকরি শুরু করেন। পাশাপাশি পড়াশোনাও চালিয়ে যান। ১৯৯৮ সালে জাওয়েদ একজন ইন্টার্ন হিসেবে সিলিকন গ্রাফিক্স ইনকরপোরেটে কাজ করেন। সেখানে গবেষণায় সাফল্যের দেখা পান। ইউটিউব তৈরির আইডিয়া তাঁর মাথায় আসে হুট করে। ২০০৪ সালের ঘটনা। এক অভিনেত্রীর ভিডিও ক্লিপ অনেক খুঁজেও অনলাইনে পাচ্ছিলেন না জাওয়েদ। তখনই ভেবে বের করেন,  এমন একটি ভিডিও শেয়ার ওয়েবসাইট তৈরি করলে কেমন হয়, যেখানে সহজেই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যাবে। অন্যরাও চাইলে ভিডিও আপলোড করতে পারবে।

 

আরিফ রেজা

বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমানের নকশা তৈরিতে যুক্ত রয়েছেন বাংলাদেশি

সর্বাধুনিক বিমানের তালিকায় রয়েছে বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার। এই বিমানেরই নকশা ও তৈরিতে যুক্ত রয়েছেন বাংলাদেশি ডিজাইনার আরিফ রেজা। সঙ্গে রয়েছে বোয়িংয়ের বিমান নকশা ও প্রকৌশলীর বিশাল একটি দল। বুয়েট থেকে পাস করা এই বাংলাদেশি তরুণ যুক্তরাষ্ট্রের সেরা এরোনটিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করেন। প্রবাস জীবনে দারুণ অর্থকষ্ট মেটাতে দিনরাত কাজ করেছেন রেস্টুরেন্টে, মুদির দোকানে, টোয়িং কোম্পানিতে (গাড়ি টেনে নেওয়ার কাজ)। লড়াই করেছেন অধরা স্বপ্নকে ছুঁতে। বিমান বানানোর সেই স্বপ্ন তাঁর পূরণ হয়েছে। মেধাবী আরিফ রেজা এখন যুক্তরাষ্ট্রের সেরা বিমান নির্মাতা কোম্পানি বোয়িংয়ের সিনিয়র লিড। অত্যাধুনিক বিমান তৈরির নেতৃত্ব দিয়ে তিনি বাংলাদেশের নাম ছড়িয়ে দিয়েছেন গোটা বিশ্বে।  তিনি বোয়িংয়ের সর্বশেষ সিরিজ ৭৮৭ এক্স তৈরির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।

 

নাফিস বিন জাফর

প্রথম বাংলাদেশি ব্যক্তি হিসেবে ২০০৭ সালে অস্কার পুরস্কার জেতেন

‘২০১২’ মুভিতে প্রথম ড্রপ ড্রেসট্রাকশন টুলকিট ব্যবহারের জন্য একাডেমি অ্যাওয়ার্ড অব সায়েন্স-২০১৪ পুরস্কার পেয়েছিলেন নাফিস বিন জাফর। এ সফটওয়্যার প্রকৌশলী ভিজুয়াল ইফেক্টস বিভাগে এ পুরস্কার পেয়েছিলেন। নাফিস ১৯৭৮ সালের ৮ অক্টোবর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। নাফিস প্রথম বাংলাদেশি ব্যক্তি হিসেবে ২০০৭ সালে অস্কার পুরস্কার জেতেন। হলিউডের পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান- অ্যাট ওয়ার্ল্ডস অ্যান্ড চলচ্চিত্রে ফ্লুইড অ্যানিমেশনের জন্য সায়েন্টিফিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল বিভাগে ডিজিটাল ডোমেইন নামে ভিজুয়াল ইফেক্টস ডেভেলপার কোম্পানির হয়ে দুই সহকর্মী ডাগ রোবেল ও রিয়ো সাকাগুচির সঙ্গে নাফিস এ পুরস্কার জিতেছিলেন। বাবার এমবিএ পড়ার সুবাদে ১১ বছর বয়সে ১৯৮৯ সালে সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলিনার চার্লসটনে চলে যান তিনি।  সেখান থেকেই তাঁর বিশ্বজয়।

 

শাহ এম ফারুক

ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া থেকে কীভাবে মারাত্মক কলেরা হয় তার কারণ আবিষ্কার করেছেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানী

ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া থেকে কীভাবে মারাত্মক কলেরা হয় তার কারণ আবিষ্কার করেছেন বাংলাদেশের এ বিজ্ঞানী। আন্তর্জাতিক কলেরা রোগ গবেষণা কেন্দ্র বা আইসিডিডিআরবির আণবিক জেনেটিক্স বিভাগের প্রধান ডাক্তার শাহ এম ফারুক ও তাঁর গবেষণা দল এটি আবিষ্কার করেছে। যখন বিশ্বব্যাপী কলেরার কারণ হিসেবে নতুন ধরনের ব্যাকটেরিয়াকে দায়ী বলে ধারণা করা হতো তখন গবেষক দলটি এ সাফল্য অর্জন করেছিল। তাদের মতে, ‘ভিবরিও’ নামে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে মানুষ আক্রান্ত হয় এবং অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ গবেষণায় দেখানো হয়েছে কীভাবে অন্যান্য ব্যাকটেরিয়া ভিবরিওর সংস্পর্শে এসে একে আরও কার্যকরী বা শক্তিশালী করে তোলে। শাহ এম ফারুক থার্ড ওয়ার্ল্ড একাডেমি অব সায়েন্সেস এবং বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির একজন ফেলো।

সর্বশেষ খবর