মঙ্গলবার, ১৫ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

সামরিক শক্তিতে সেরা যুক্তরাষ্ট্র পরবর্তীতে রাশিয়া-চীন

রকমারি ডেস্ক

সামরিক শক্তিতে সেরা যুক্তরাষ্ট্র পরবর্তীতে রাশিয়া-চীন

প্রতি বছরের মতো সামরিক শক্তির বিচারে ১৩৬টি দেশের মধ্যে শীর্ষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তারপর রাশিয়ার অবস্থান। তৃতীয় অবস্থানে চীন। এর পরের অবস্থানগুলোতে ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ফ্রান্স, ব্রিটেন, পাকিস্তান ও ব্রাজিল। সামরিক শক্তির ভিত্তিতে প্রতি বছর র‌্যাঙ্কিং করা প্রতিষ্ঠান ‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার’ এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতি বছর মোট ৪৭টি ক্যাটাগরিতে আলাদা আলাদাভাবে দেশগুলোর সক্ষমতা ও র‌্যাঙ্কিং করে থাকে ‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার’। এগুলোর মধ্যে মোট জনসংখ্যা, সৈন্য, সামরিক সরঞ্জামের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। প্রতিরক্ষা ব্যয়ের হিসাবেও শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি এ বছর প্রতিরক্ষা খাতে ৭৭ হাজার কোটি ডলার ব্যয় করবে, যা শীর্ষ ১০ দেশের মোট সামরিক ব্যয়ের অর্ধেকেরও বেশি। শুধু ব্যয়ের দিক দিয়েই যে যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষে, তা নয়। এই ৪৭টি ক্যাটাগরির মধ্যে ১৮টিতেই আবার যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষে। চীন শীর্ষে রয়েছে ১১টি ক্যাটাগরিতে।

সামরিক ব্যয়ের মতোই আরেকটি ক্যাটাগরিতে যে যুক্তরাষ্ট্রের একচেটিয়া আধিপত্য রয়েছে, সেটি হলো বিমানবাহী রণতরী বা এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ারের সংখ্যার দিক দিয়ে। যুক্তরাষ্ট্রের মোট ১১টি ক্যারিয়ার রয়েছে। আর বিশ্বে মোট ক্যারিয়ারের সংখ্যা হলো মাত্র ২১টি। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যারিয়ারগুলো আবার প্রত্যেকটিই সুপার ক্যারিয়ার, অর্থাৎ যেগুলো আকৃতিতে বিশাল ও অনেক বেশি যুদ্ধবিমান বহন করতে পারে। অন্য আর কোনো দেশেরই একটিও সুপার ক্যারিয়ার নেই। যুক্তরাষ্ট্রের সুপার ক্যারিয়ারগুলোর একটি অংশ সার্বক্ষণিক বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মোতায়েন থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বিমানের মধ্যে আবার ট্যাংকার বিমান রয়েছে ৬২৭টি। এই বিমানগুলো আকাশপথেই অন্য বিমানকে চলন্ত অবস্থায় জ্বালানি তেল সরবরাহ করতে সক্ষম। এর ফলে যে কোনো বিমান, জ্বালানির জন্য অবতরণ করা ছাড়াই, আকাশে থাকতে পারে।

১৩৬টি উন্নত ও কম উন্নত দেশের মধ্যে চালানো এ জরিপে দেশগুলোর ভৌগোলিক অবস্থান, প্রাকৃতিক সম্পদনির্ভরতা, মানবসম্পদ ও চলমান অর্থনৈতিক চিত্রসহ বিবেচনা করা হয়। তবে পারমাণবিক ক্ষমতা এবং বর্তমান রাজনৈতিক বা সামরিক নেতৃত্বকে এ হিসাবে ধরা হয়নি।

সামরিক শক্তি বিবেচনায় শীর্ষ পাঁচ

যুক্তরাষ্ট্র : সেনাবাহিনীর শক্তির নিরিখে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন মুলুকের সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা ১২ লাখ ৮১ হাজার ৯০০ জন। রিজার্ভ আছে ৮ লাখ ১ হাজার ২০০ সৈন্য। যুদ্ধবিমান ১৩ হাজার ৩৬২টি, ট্যাংক ৫ হাজার ৮৮৪টি, যুদ্ধজাহাজ ৪১৫টি। আছে ২০৮৫ ফাইটার্স, ৯৬৭ অ্যাটাক হেলিকপ্টার্স, ৯৪৫টি ট্রান্সপোর্টস এবং ৭৪২টি স্পেশাল মিশন এয়ারক্র্যাফট।

রাশিয়া : রাশিয়ার সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা ১০ লাখ ১৩ হাজার ৬২৮ জন। রিজার্ভ আছে ২৫ লাখ ৭২ হাজার ৫০০ সৈন্য। যুদ্ধবিমান ৩ হাজার ৯১৪টি, ট্যাংক ২০ হাজার ৩০০টি, যুদ্ধজাহাজ ৩৫২টি। ৭৩টি ফাইটার এয়ারক্র্যাফট এবং ৫৩১টি অ্যাটাক হেলিকপ্টার। নৌসেনার কাছে রয়েছে ৬২টি সাবমেরিন।

চীন : চীনের সক্রিয় সৈন্য ২১ লাখ ৮৩ হাজার জন। রিজার্ভ আছে ৫ লাখ ১০ হাজার। যুদ্ধবিমান ৩ হাজার ৩৫টি, ট্যাংক ৭ হাজার ৭১৬টি ও যুদ্ধজাহাজ ৭১৪টি। আছে ৩৩ হাজার সাঁজোয়া গাড়ি, ১২৩২ ফাইটার এয়ারক্র্যাফট ২৮১ অ্যাটাক হেলিকপ্টার, ৭৪টি সাবমেরিন এবং ৫২টি রণতরী।

ভারত : ভারতের সক্রিয় সৈন্য ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ জন। রিজার্ভ আছে ২৮ লাখ ৪৪ হাজার ৭৫০ জন। যুদ্ধবিমান ২ হাজার ১৮৫টি, ট্যাংক ৪ হাজার ৪২৬টি ও যুদ্ধজাহাজ ২৯৫টি, ৪২৯২ ট্যাংক, ৪০৬০ কামান।

ফ্রান্স : ফ্রান্সের সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা ২ লাখ ৫ হাজার। রিজার্ভ আছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৬৩৫ জন। যুদ্ধবিমান ১ হাজার ২৬২টি, ট্যাংক ৪০৬টি ও যুদ্ধজাহাজ ১১৮টি। এ ছাড়াও রয়েছে ৪০টি রণতরী।


সামরিক ব্যয়ে শীর্ষে

বিশ্বে সামরিক খাতে সবচেয়ে বেশি ব্যয় যুক্তরাষ্ট্রের। ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্র সশস্ত্র বাহিনীর পেছনে ৭৭ হাজার ৮০০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পেছনে থাকা ১০টি দেশের সম্মিলিত সামরিক ব্যয়ের চেয়েও বেশি ব্যয় করে যুক্তরাষ্ট্র। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৫ হাজার ২০০ কোটি ডলার ব্যয় করেছে চীন। এরপর যথাক্রমে ভারত ৭ হাজার ৩০০ কোটি, রাশিয়া ৬ হাজার ২০০ কোটি এবং যুক্তরাজ্য ৫ হাজার ৯০০ কোটি ডলার ব্যয় করেছে।

 

সর্বশেষ খবর