রবিবার, ৮ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত যত চত্বর

আবদুল কাদের

বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত যত চত্বর

রেড স্কোয়ার

ঐতিহাসিক এবং দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যে সমৃদ্ধ পর্যটন কেন্দ্র মস্কোর রেড স্কোয়ার (লাল চত্বর)। রাশিয়ার রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে চৌরাস্তাটি অবস্থিত। রেড স্কয়ারের প্রতিটি ভবনই সুউচ্চ, স্থাপত্যশৈলী, শৈল্পিক কারুকার্য সজ্জিত ও নান্দনিক সৌন্দর্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।  একসময় এটি ছিল মস্কোর প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র। তবে বর্তমানে ঐতিহাসিক রেড স্কোয়ার রাশিয়া তথা বিশ্বের অন্যতম সেরা পর্যটন কেন্দ্র। রেড স্কোয়ার সংলগ্ন রাশিয়ার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান ক্রেমলিন চত্বর।

 

টাইমস স্কোয়ার

যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র নিউইয়র্ক সিটির টাইমস স্কোয়ার। নিউইয়র্ক সিটির কেন্দ্রস্থল ম্যানহাটানে অবস্থিত এটি। গুরুত্বপূর্ণ স্থানটিকে বলা হয় ‘পৃথিবীর সড়ক সংযোগস্থল’। বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত পথচারী সংযোগস্থল এবং বিশ্ব বিনোদনের প্রধান কেন্দ্র টাইমস স্কোয়ার। এলাকাটি রং-বেরঙের আলোকসজ্জা ও প্রোজ্জ্বল সাইনবোর্ডের কারণে বিখ্যাত। ইংরেজি নতুন বছর বরণের জন্যও বিখ্যাত এই টাইমস স্কোয়ার।  পাশাপাশি এটি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন ও দর্শনীয় স্থান।

 

ওল্ড টাউন স্কোয়ার

চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাগের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ঐতিহাসিক ওল্ড টাউন স্কোয়ার। বিখ্যাত চার্লস ব্রিজ এবং ওয়েন্সেসলাস স্কোয়ারের মাঝামাঝি এর অবস্থান। বিখ্যাত চত্বরটি ১২ শতাব্দীতে নির্মিত। চত্বরটির আশপাশের ভবনের নকশায় ফুটে আছে প্রাচীন গথিক, বারোক, রোকোকো স্থাপত্যের নান্দনিক কারুশিল্প। বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীনতম অ্যাস্ট্রোনোমিক্যাল ক্লকটিও (জ্যোতির্বিদ্যা ঘড়ি) এই বিখ্যাত ওল্ড টাউন স্কোয়ারে আজও স্বগৌরবে দাঁড়িয়ে। যা ৬০০ বছরেরও বেশি পুরনো।

ট্রাফালগার স্কোয়ার

আগে চত্বরটির নাম ছিল চেরিং ক্রস। এখন লোকে চেনে ট্রাফালগার স্কোয়ার নামে। লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এ চত্বরে সারা বছরই লেগে থাকে পর্যটকদের ভিড়। এর কেন্দ্রস্থলে রয়েছে নেলসনস কলাম। এর চারপাশের চারটি সিংহের ভাস্কর্য সবাইকে চমকে দেয়। মূর্তি ও ভাস্কর্যে সাজানো স্থানটি রাজনৈতিক সমাবেশ, আন্দোলন, সামাজিক মিলনমেলা ও  নববর্ষ উদযাপনে সারা বছরই মুখর থাকে। পর্যটকরা এখানে কবুতরের সঙ্গে ছবি তুলতে ও তাদের খাওয়াতে পছন্দ করেন।

পিৎজা সান মারকো

ইতালির ভেনিসে পিৎজা সান মারকো চত্বর পর্যটকদের কাছে ভীষণ প্রিয়। জায়গাটির পরিচিতি কিন্তু অন্য নামে। লোকে বলে ইউরোপের ড্রয়িং রুম, মানে ইউরোপের অভ্যর্থনা কক্ষ। চত্বরটি সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয়ভাবে আলাদা গুরুত্ব বহন করে। স্থানীয় প্রাচীন চার্চের কারণে এখানে শত শত বছর ধরে মানুষের জমায়েত ও চলাচল রয়েছে। দিনরাত ২৪ ঘণ্টা জেগে থাকে এ জায়গাটি। ঐতিহাসিক স্থাপনা, দালানের চূড়ায় ঘড়ি, শহরঘেঁষা নদী-লেক সবমিলিয়ে চত্বরটি বেশ আকর্ষণীয়।

 

গ্র্যান্ড প্লেস

বেলজিয়ামের ব্রাসেলসের অন্যতম আকর্ষণ ও বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর স্কোয়ার গ্র্যান্ড প্লেস স্কোয়ার। জায়গাটি স্থানীয়দের কাছে গ্রোট মার্কেট হিসেবেও পরিচিত। চত্বরটির চারপাশে রয়েছে বেশ কয়েকটি ঐশর্য্যমন্ডিত গিল্ড হাউস, ঐতিহাসিক ভবন, টাউন হল এবং মিউজিয়াম। এর সামনে রয়েছে ঐতিহাসিক ফ্লেমিশ ভবন। ১৯৯৮ সালে চত্বরটিকে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করে। প্রতি দুই বছর অন্তর  আগস্টের মাঝামাঝি এখানে বিশালাকার ফুলের কার্পেট তৈরি করা হয়।

তিয়েনআনমেন স্কোয়ার

চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে অবস্থিত ঐতিহাসিক তিয়েনআনমেন স্কোয়ার। এটি চীনের সর্ববৃহৎ চত্বর। যা শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। এটি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম চত্বর হিসেবে স্বীকৃত। যা চীনের ইতিহাসের বহু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সাক্ষীও। বিশ্বজুড়ে এটি ১৯৮৯ সালের মুক্তবাজার অর্থনীতি এবং গণতন্ত্রের দাবিতে আয়োজিত গণঅভ্যুত্থানের আন্দোলনের জন্যই অধিক পরিচিত।  যেখানে তৎকালীন সামরিক আইন জারির মাধ্যমে গণহত্যা চালানো হয়েছিল। প্রতি বছরই এখানে নববর্ষ উদযাপন করা হয়।

সর্বশেষ খবর