রবিবার, ২২ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

তেলবিহীন প্রযুক্তিতে ঝুঁকছে বিশ্ব

আবদুল কাদের

তেলবিহীন প্রযুক্তিতে ঝুঁকছে বিশ্ব

যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস বৈদ্যুতিক গাড়িতে চার্জ দিচ্ছেন

এক সময় তেল, কয়লার মতো জীবাশ্ম জ্বালানি ছাড়া বিশ্বের পরিবহন ব্যবস্থা কল্পনা করা যেত না। কিন্তু সময় বদলেছে। কমে আসছে পৃথিবীর খনিজ সম্পদ। ফলে আগামীর প্রজন্ম পড়তে যাচ্ছে সংকটে। তাই আগে থেকেই কাজ শুরু করে দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। খুঁজছেন বিকল্প জ্বালানির ব্যবহার। যার ফসল হিসেবে আধুনিক বিশ্বে বেড়েছে বিদ্যুৎচালিত গাড়ি, যা এখন ভাবনার চেয়ে দ্রুত দখল করছে বিশ্ববাজার।  বিজ্ঞানীরা কেবল গাড়ি নয়, তেলের ব্যবহার কমিয়ে ট্রেন, বিমান ও সাব-মেরিনের মতো বাহনেও আনছেন বিদ্যুতের ব্যবহার।

 

দ্রুতগতিতে প্রযুক্তির বিপ্লব

পৃথিবীতে সম্পদ সীমিত। এই সীমিত সম্পদের যথাযোগ্য ব্যবহার না করলে পরবর্তী প্রজন্ম পড়বে সমস্যায়। তাই পৃথিবীজুড়েই জীবাশ্ম জ্বালানি পেট্রোল-ডিজেলসহ খনিজ তেলের ভান্ডার ধীরে ধীরে ফুরিয়ে আসছে। সেই সঙ্গে দিন দিন বেড়েই চলেছে পেট্রোল-ডিজেলের দামও। তাই বিজ্ঞানীরা বিকল্প জ্বালানি হিসেবে বেছে নিয়েছে ইলেকট্রিক ভেহিক্যাল। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, একদিন উঠে যাবে পেট্রোল ও ডিজেলচালিত মোটরগাড়ি। সেই জায়গায় আসবে ইলেকট্রিক ভেহিক্যাল (ইভি) বা বৈদ্যুতিক গাড়ি। ফলে বৈশ্বিক গাড়ির বাজার চলে যাবে পরিবেশবান্ধব ইলেকট্রিক ভেহিক্যাল বৈদ্যুতিক গাড়ির (ইভি) দখলে। সে জন্য দুনিয়ার সব বড় বড় গাড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানি এখন বৈদ্যুতিক গাড়ির নতুন নতুন মডেল তৈরির কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। আর এটা ঘটছে প্রযুক্তিগত বিপ্লবের জন্যই।

কীভাবে ঘটবে এই প্রযুক্তি বিপ্লব?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাপারটা অনেকটা ইন্টারনেট প্রযুক্তির মতো। ১৯৯০-এর দশকে বা ২০০০ সালের পর প্রথম দশকটিতে ইন্টারনেট যে অবস্থায় ছিল, বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজার এখন মোটামুটি সেই রকম একটা জায়গাতেই আছে। সে সময় একটি কম্পিউটার আরেকটি কম্পিউটারের সঙ্গে কথা বলছে, এটা ছিল এক নতুন জিনিস। একইভাবে বৈদ্যুতিক গাড়ির মোটর, একে পরিচালনাকারী কম্পিউটার, চার্জিংয়ের পদ্ধতি এবং গাড়ির ডিজাইন সব ক্ষেত্রেই ঘটেছে উন্নতি। পরিসংখ্যান ঘাঁটলে দেখা যাবে, সারা বিশ্বে ২০২০ সালে ইলেকট্রিক গাড়ি বিক্রি হয়েছে ৩২ লাখ, শতকরা হিসাবে এই বৃদ্ধির পরিমাণ হচ্ছে ৪৩ শতাংশ যদিও করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সার্বিকভাবেই এক-পঞ্চমাংশ কমে গেছে। পৃথিবীতে যে পরিমাণ গাড়ি বিক্রি হয়, এই সংখ্যা তার মাত্র পাঁচ শতাংশ। কিন্তু গ্রাফে দেখা যায়, এ সংখ্যা ইতোমধ্যেই ওপরের দিকে পৌঁছে গেছে। ইউবিএসের হিসাব অনুযায়ী, যত নতুন গাড়ি বিক্রি হবে তার প্রায় সবই হবে বৈদ্যুতিক গাড়ি। যদিও ধনী রাষ্ট্রগুলোয় কেবল দেখা মিলছে উন্নত প্রযুক্তির গাড়ির। এখনো এসব গাড়ির দাম সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে আসেনি। তবে গাড়ি নির্মাতারা দেখাচ্ছেন আশার আলো। তারা বলছেন, যত বেশি ইলেকট্রিক গাড়ি বানানো হবে, ততই এটা ক্রমশ আরও উন্নত হবে এবং ততই এটা আরও সস্তা হতে থাকবে। সহসাই এসব গাড়ি চলে আসবে সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে। আর নতুন যে মডেল ওয়াই টেসলা বাজারে আসবে তা হবে আরও সুলভ এবং যে কোনো শ্রেণির গাড়ির মধ্যে সর্বাধিক বিক্রীত।

প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের সুবাদে পরিবেশবান্ধব বৈদ্যুতিক গাড়ির (ইভি) প্রবল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বছর কয়েক আগেও বৈদ্যুতিক গাড়ি সম্পর্কে ক্রেতাদের মধ্যে যে ধারণা ছিল তাতে বিরাট পরিবর্তন এসেছে। তবে রাস্তা থেকে পেট্রোল-ডিজেলচালিত গাড়ি বিদায় করতে হলে বৈদ্যুতিক গাড়িকে আরও কিছু কাজ করতে হবে। একটা হলো, সহজে এবং সস্তায় যে কোনো জায়গায় গাড়ি চার্জ করার সুবিধা। সেটিও সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ ১০০ বছর আগে পেট্রোল স্টেশন নেটওয়ার্কও এভাবেই দ্রুত গড়ে উঠেছিল। এর পরও বৈদ্যুতিক গাড়ির ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দেহ থাকার কথা নয়। দেশে দেশে সরকার এখন পেট্রোল ও ডিজেলচালিত গাড়ি বিক্রি নিষিদ্ধ করার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে। একই সঙ্গে তারা ইভির উৎপাদন ও ব্যবহার উৎসাহিত করতে সুবিধা দিচ্ছে। যেহেতু দুনিয়ার বড় গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো এরই মধ্যে বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদনে বড় বিনিয়োগ শুরু করেছে, সেহেতু বাংলাদেশকেও একই পথে হাঁটবে হবে।

 

ইউরোপ আমেরিকার রাস্তায় বাড়ছে বৈদ্যুতিক গাড়ি

ইলেকট্রিক গাড়ির বাজার দখল করে নেওয়ার আর খুব বেশি দিন বাকি নেই। যদিও আপনার মনে হতে পারে, এটা একটু বেশিই হয়ে গেল! কিন্তু আসলে ব্যাপারটা তা নয়। কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে দারুণভাবে বেড়েছে ইলেকট্রিক ভেহিক্যাল (ইভি) বা বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার। ইউরোপের দেশগুলোয়ও কমিয়ে আনছে জ্বালানি তেলের নির্ভরতা। বিকল্প বাহন হিসেবে ডুব দিচ্ছে উন্নত প্রযুক্তির ভেহিক্যালে। ইতিহাস বলছে, ১৯১৩ সালে হেনরি ফোর্ডের প্রথম গাড়ি তৈরির প্রোডাকশন লাইন শুরুর পর আর ঘটেনি। যারা বিশ্বব্যাপী মোটরগাড়ি শিল্পের গতিবিধির ওপর নজর রাখেন সেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শিগগিরই আধুনিক প্রযুক্তির আরেকটি বিপ্লব ঘটতে যাচ্ছে। পেট্রোল ও ডিজেলচালিত মোটরগাড়িকে হটিয়ে পরিবেশবান্ধব বৈদ্যুতিক গাড়িই বাজার দখল করে নেবে। সে রকম পরিকল্পনা নিয়েই এখন গাড়ি নির্মাতারা এগোচ্ছেন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তেলের বিকল্প হিসেবে উন্নত প্রযুক্তির বৈদ্যুতিক গাড়ির মাইলেজ বাড়ছে। ফলে বাড়ছে সেই গাড়ির ব্যবহারও। আর তা দৃশ্যমান হচ্ছে ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোতে। বিখ্যাত গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান জাগুয়ার ২০২৫ সাল থেকে বিদ্যুৎচালিত গাড়িই বিক্রি করবে। সেই তালিকায় ২০৩০ সালে নাম লেখাবে   ভলবো। ফোর্ড ও ফোক্সওয়াগনের মতো কোম্পানি ইতোমধ্যে বিদ্যুৎচালিত গাড়ি এনেছে বাজারে।

বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের কোম্পানি টেসলা সর্বপ্রথম নিয়ে এসেছে বৈদ্যুতিক গাড়ি। টেসলার সর্বশেষ প্রযুক্তিতে তৈরি মডেল থ্রি একবার চার্জ করলে ৩০০ মাইল পর্যন্ত চলতে পারে। আর ৩ দশমিক ১ সেকেন্ডের মধ্যে এই গাড়ির গতি শূন্য থেকে ৬০ কিলোমিটারে ওঠে। আর তাতে উৎসাহিত হচ্ছে বিদ্যুৎচালিত গাড়ি তৈরির প্রক্রিয়া। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক ইউবিএসও বলেছে, ২০২৫ সাল নাগাদ বিশ্বে মোট গাড়ি বিক্রির ২০ শতাংশ হবে বৈদ্যুতিক গাড়ি। এই হার ২০৩০ সালে ৪০ শতাংশে উন্নীত হবে। আর ২০৪০ সালে যত গাড়ি বিক্রি হবে তার সবগুলোই হবে বৈদ্যুতিক গাড়ি।

 

বাড়ির দেয়ালেই হবে বিদ্যুৎ উৎপাদন

বিশ্বজুড়ে বাড়ছে সৌরশক্তির ব্যবহার। আধুনিক বিশ্ব নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে সঞ্চয় করছে সৌরশক্তি। এমনি একটি মাধ্যম আপনার বাড়ির দেয়াল। কাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা জ্বালানি উৎপাদনের এই প্রক্রিয়া নকল করার চেষ্টা করছেন। বিশেষজ্ঞ দলটি এমন এক উপকরণ তৈরি করছেন, যা একদিকে সোলার সেল, অন্যদিকে সেটি আবার সূর্যের আলো বিদ্যুতে রূপান্তরিত করতে পারে। প্রথমেই তৈরি হচ্ছে কন্ডাকটিভ সিমেন্ট। গ্রাফাইট যোগ করে গবেষকরা এই কন্ডাকটিভিটি সম্ভব করছেন। সিমেন্ট শক্ত হয়ে চূড়ান্ত রূপ নিলে পজিটিভ-নেগেটিভ পোল হিসেবে কাজ করে এবং ইলেকট্রন ধারণ করতে পারে। স্থপতি টর্স্টেন ক্লোস্টার ও শিল্পী হাইকে ক্লুসমান-এর মাথায় সিমেন্ট দিয়ে সৌরশক্তি উৎপাদনের এই আইডিয়া আসে। বিশেষজ্ঞ দল বলছেন, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি দেখলে মনে হবে সাধারণ সিমেন্ট। কিন্তু এর বিশেষত্ব হলো- এটি টাচ-সেনসিটিভ। সিমেন্ট কন্ডাকটিভ করে তোলার কারণেই এমনটা ঘটছে। এই কন্ডাকটিভ সিমেন্ট সৌর-সিমেন্টের ভিত্তি। সিমেন্ট কন্ডাকটিভ করে তুলতে গবেষকরা তার ওপর একাধিক রংয়ের প্রলেপ স্প্রে অথবা প্রিন্ট করেন। ফলে এক ‘ডাই সেন্সিটাইজড’ সোলার সেল সৃষ্টি হয়, যা বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে। অর্থাৎ কৃত্রিমভাবে সালোক-সংশ্লেষণ প্রক্রিয়া চলে। তবে কয়েক মাইক্রোমিটার পাতলা রংয়ের স্তরগুলোর নির্দিষ্ট বিন্যাস এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞ দল জানায়, রংয়ের স্তরগুলো ঠিকমতো ক্রমানুসারে সাজালে শেষ পর্যন্ত ফটোভল্টায়িক সেলের মতো কাজ করবে। এগুলোর মধ্যে এমন একটি স্তরে রংয়ের পিগমেন্ট রয়েছে। সূর্যের আলোর সংস্পর্শে এলে ইলেকট্রন বেরিয়ে আসে এবং বিদ্যুৎ সৃষ্টি হয়। একটি সোলার সেল মাত্র কয়েক শ মিলিভোল্ট ভোল্টেজ সৃষ্টি করে। সেই সোলার সেল হাত দিয়ে ঢেকে দিলে পরিমাপের গ্রাফের মধ্যে ভোল্টেজ ড্রপ স্পষ্ট দেখা যায়। সোলার সেলের ওপর আলো পড়লেই ভোল্টেজ আবার বেড়ে যায়। এভাবেই চলে বিদ্যুৎ উৎপাদন।

 

জ্বালানিবিহীন বিমান

কেবল গাড়ির জন্য জ্বালানির বিকল্প খোঁজা হচ্ছে না। আকাশে উড়াল দেওয়া বিমানের ক্ষেত্রেও জ্বালানিবিহীন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। উদ্দেশ্য ছিল, জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কাটিয়ে দূষণহীন পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্রযুক্তির ব্যবহার। আর সে লক্ষ্যেই বার্ট্রান্ড পিকার্ড এবং আন্দ্রে বরশবার্গ বানিয়েছিলেন সৌরশক্তিচালিত বিমান ‘সোলার ইমপালস ২’। ২০১৩ সালে প্রথম দূরপাল্লার যাত্রা করেছিল বিমানটি। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার একটি বিমানঘাঁটি থেকে ভোর ৬টায় যাত্রা শুরু করে টানা ১৮ ঘণ্টা পাড়ি দিয়ে রাত সাড়ে ১২টায় পৌঁছেছিল অ্যারিজোনা প্রদেশের রাজধানী ফিনিক্সে। ২০১৫ সালে তাঁদের তৈরি বিমান নিয়ে বিশ্ব পরিক্রমায় বেরিয়েছিলেন পিকার্ড এবং বরশবার্গ। সোলার সেলের সারি থাকার কারণে সৌরশক্তিচালিত এই বিমানের ডানার বিস্তার প্রায় একটি বোয়িং-৭৪৭ জেটের সমান। কিন্তু কার্বন ফাইবারের তৈরি বলে ওজন খুবই কম। বিমানের পিঠের ওপর রয়েছে ৭২ মিটার টানা লম্বা ডানা। তার ওপর বসানো ১৭,২৪৮টি সোলার সেল বা সৌরকোষ। যারা শুষে নিতে পারে সূর্যের শক্তি। আর সেই শক্তিকে পুঁজি করেই পাড়ি দেয় এই জ্বালানিবিহীন বিমান।

 

ইনফিনিটি ট্রেন

তেল, কয়লার মতো জ্বালানি ছাড়াই চলবে ট্রেন। অবাক হচ্ছেন? ২০৩০ সালের মধ্যে আসছে এমন এক অভিনব ট্রেন। নাম ‘ইনফিনিটি ট্রেন’। মূলত পরিবেশ দূষণ কমানোর লক্ষ্যেই এই ট্রেন প্রস্তুত করা হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার একটি মাইনিং কোম্পানি ফোর্টেসকু বিশ্বে প্রথম এই ট্রেন প্রস্তুত করতে চলেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই ট্রেন চালু হলে যেমন জ্বালানি বাবদ খরচ কমে যাবে, তেমনি পরিবেশ দূষণও কমবে। একই সঙ্গে ব্যাটারি চার্জ দেওয়ার জন্য সময় নষ্ট হবে না। পাশাপাশি বারবার জ্বালানি ভরার কষ্টও থাকবে না। কারণ, এই ট্রেন চলার সময়ে নিজের থেকেই ব্যাটারি চার্জ করে নেবে। জানা গেছে, ট্রেনটিতে থাকবে ২৪৪টি বগি। ৩৪ হাজার টন লৌহ আকরিক ভরা থাকবে ট্রেনে। ফোর্টেসকুর সিইও এলিজাবেথ জেইনস গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ইনফিনিটি ট্রেন হবে বিশ্বের সেরা শক্তিশালী বিদ্যুৎচালিত ট্রেন, যা থেকে কোনো দূষণ হবে না।

 

প্রযুক্তিতে এগিয়ে যে দেশগুলো

জীবাশ্ম জ্বালানির বদলে ইলেকট্রিক এবং হাইব্রিড গাড়িতে ঝুঁকছে বিশ্ব। ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্য, ভারত, ফ্রান্স এবং নরওয়ের পাশাপাশি আরও কয়েকটি দেশের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, গ্যাস এবং ডিজেলের ওপর থেকে নির্ভরতা কমিয়ে আনতে চায় তারা। ২০১৯ সালের পরিসংখ্যান মতে, বিশ্বজুড়ে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি ইলেকট্রিক ভেহিক্যাল  (ইভি) বা বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি হয়েছে। যা ২০১৮ সালের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেশি। যুক্তরাজ্য, চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, কানাডা, নরওয়ে, ভারত, জার্মানি, সুইডেন এবং নেদারল্যান্ডস ইলেকট্রিক গাড়ির দিকে ঝুঁকছে। বিশ্বের উৎপাদিত বিদ্যুৎনির্ভর গাড়ির ৯৫ শতাংশই বিক্রি হয় এই ১০টি দেশে। নরওয়ে হচ্ছে বিশ্বের প্রথম দেশ যারা তাদের পুরো পরিবহন ব্যবস্থাকে বৈদ্যুতিক জ্বালানিনির্ভর ব্যবস্থায় রূপান্তরের পরিকল্পনা নিয়েছে। ২০৪০ সাল নাগাদ নরওয়ের সব স্বল্প দূরত্বের প্লেন ইলেকট্রিক ব্যাটারি দিয়ে চালাবে। ২০২৫ সাল নাগাদ দেশটিতে বৈদ্যুতিক গাড়ি ছাড়া সব গাড়ি নিষিদ্ধ করা হচ্ছে।   জ্বালানির বিকল্প হিসেবে একই পথে হাঁটছে ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বের উন্নত দেশগুলো।

 

তেলবিহীন গাড়ির সবচেয়ে বড় বাজার এখন যুক্তরাষ্ট্র। রাস্তায় বেরোলেই দেখা মিলছে এসব ইলেকট্রিক গাড়ির। রাস্তার পাশে বসে  গেছে গাড়ি চার্জ নেওয়ার মেশিন

ইংল্যান্ড ইলেকট্রিক গাড়ির জন্য আরও আধুনিক প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকছে। এসব গাড়ির জন্য এমন রাস্তা বানানো হচ্ছে যেগুলো রাস্তায় চলার সময় নিজে থেকেই চার্জ হবে

উন্নত দেশগুলোর মতো চীনও বুঝতে পেরেছে বৈদ্যুতিক গাড়ির ভবিষ্যৎ। তেলের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে বাড়াচ্ছে বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার

 

টেসলার ইলেকট্রিক গাড়িগুলো এখন আধুনিক ফ্যাশন। ধীরে ধীরে এসব গাড়ির দাম বাড়ছে। তেলবিহীন চলা এসব গাড়ির দিকে ক্রেতারাও  আগ্রহী হচ্ছেন দিনদিন

সর্বশেষ খবর