রবিবার, ৭ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

অ্যামাজনের ভয়ংকর প্রাণীরা

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জঙ্গল অ্যামাজন। যা অদ্ভুত ও ভয়ংকর প্রাণীদের আবাসস্থল। পৃথিবীর সব রেইনফরেস্টের দ্বিগুণ। যেখানে পুরো পৃথিবীর তিন ভাগের এক ভাগ প্রাণী বাস করে। অ্যামাজনের আকর্ষণীয় ও ভয়ংকর প্রাণীদের আদ্যোপান্ত লিখেছেন- তানভীর আহমেদ

অ্যামাজনের ভয়ংকর প্রাণীরা

ব্ল্যাক কেইম্যান

অ্যামাজনে কত রহস্য লুকিয়ে আছে তা বলে শেষ করা যাবে না। পাশাপাশি আছে ভয়ংকর প্রাণীদের চলাচল। কুমিরকে যতটা ভয় তার চেয়ে ঢের ভয় ব্ল্যাক কেইম্যানকে। অনেকে ব্ল্যাক কেইম্যানকে বলে থাকে কুমিরের চাচাতো ভাই। কুমিরের চেয়েও অনেক বেশি ভয়ংকর ব্ল্যাক কেইম্যানের জলে একক রাজত্ব। একসময় অ্যামাজন জঙ্গল থেকে এই প্রজাতিটি বিলুপ্তির পথে ছিল। কিন্তু শিকারের কঠিন আইন এদের বিলুপ্তির হাত থেকে অনেকটাই বাঁচিয়েছে। গাঢ় রঙের চামড়া ব্ল্যাক কেইম্যানকে খুব সহজে ছদ্মবেশ ধারণ করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে শিকার করার সময় এই ছদ্মবেশ ধরা বেশ কাজের। পিরানহা এদের প্রধান শিকার। তবে পিরানহা ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের মাছও এরা ধরে। কখনো কখনো এরা হরিণ এমনকি অ্যানাকোন্ডাকেও আক্রমণ করে বসে। টিকে থাকার লড়াইয়ে ব্ল্যাক কেইম্যানকে অ্যামাজনের অন্যতম উদাহরণ হিসেবে দেখে অনেকে।

বুলেট পিঁপড়া

নাম শুনে অনেকটাই অনুমান করা যায় এই পিঁপড়া আমাদের পরিচিত পিঁপড়াগুলোর মতো নিরীহ নয়। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পিঁপড়া হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে বুলেট পিঁপড়া। অ্যামাজন রেইনফরেস্টের এই পিঁপড়াগুলো অনেকটা দেখতে বোলতা বা ভিমরুলের মতো। এরা একাকী বসবাস করতে অনেক বেশি পছন্দ করে। সাধারণত এরা গাছের ভিতর বা গোড়ার দিকে বাসা বানায়। এরা আকারে বেশ বড়। বড় আকারের জন্য এদের হুলের শক্তিও বেশি। কামড়ালে অসম্ভব ব্যথা হয়। বুলেটবিদ্ধ হলে যেমন যন্ত্রণা হয় তার চেয়ে কম তো নয়ই- এ জন্য এদের বুলেট পিঁপড়া বলা হয়। হুলে বিষে ভর্তি থাকার কারণে বুলেট পিঁপড়াকে সবাই বেশ সমীহ করে চলে।

 

কুখ্যাত মশা

কোথায় নেই মশা? অ্যামাজনেও আছে কুুখ্যাত মশার আবাস। তবে অনেকেই হয়তো ভাবতে পারবে না তীক্ষè দাঁত ও নখওয়ালা বিশালাকৃতির প্রাণীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অ্যামাজনের সবচেয়ে ভয়ংকর প্রাণীর খেতাবটি মশা-ই দখল করে আছে। অ্যামাজন চিরহরিৎ জঙ্গলের এই ছোট্ট মশাই ম্যালেরিয়ার মতো ভয়ানক সব অসুখের জীবাণু বয়ে নিয়ে বেড়ায়। কামড়ানো মাত্রই সরাসরি রক্তে মিশিয়ে দেয় ভয়ংকর যত অসুখের জীবাণু। প্রতি বছর মশার কামড় থেকে ম্যালেরিয়া-ফাইলেরিয়ায় সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায়। যারাই বিভিন্ন অ্যাডভেঞ্চার করতে অ্যামাজনে যায় তাদের কাছে মশানিরোধী ক্রিম এক নম্বর যাত্রাসঙ্গী। অ্যামাজনের ব্ল্যাক কেইম্যান, কিনকাজো থেকে কোনো অংশেই কম বিপজ্জনক নয় মশা সেটা হয়তো সহজেই অনুমান করা যায়। মশা তাই অ্যামাজনের ভয়ংকর প্রাণী এবং সবচেয়ে কুখ্যাত।

 

ব্ল্যাক জাগুয়ার

ব্ল্যাক জাগুয়ার পৃথিবী থেকে প্রায় হারিয়েই যেতে বসেছে। যে কয়টি অবশিষ্ট আছে তাদের শেষ আশ্রয়স্থল হয়ে দাঁড়িয়েছে অ্যামাজন। অ্যামাজনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় এবং ভয়ংকর প্রাণী জাগুয়ার তাই সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। জাগুয়ারের খাদ্য তালিকায় আছে হরিণ থেকে শুরু করে ইঁদুর। শিকারে দক্ষ এই প্রাণী বাঘের মাসতুতো ভাই বললেও ভুল হবে না। জাগুয়ার প্রায় ৮৭ ধরনের ভিন্ন ভিন্ন প্রাণীকে যোগ করে নিয়েছে তার খাদ্য তালিকায়। দুর্ধর্ষ এই প্রাণী চলার পথে পড়লে আস্ত মানুষকে শিকার করতেও ছাড়ে না। পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েও এ প্রাণীর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় নেই। সাঁতারে দক্ষ জাগুয়ার অনায়াসে সাঁতার কেটে শিকারকে ঠিকই কাবু করে ফেলে। ঝগড়া বেঁধে গেলে জাগুয়ারের চেয়ে হিংস্র প্রাণী অ্যামাজনে মেলা ভার। অ্যামাজনের এ আশ্চর্য সুন্দর কিন্তু ভয়ংকর প্রাণীটি বিলুপ্তির পথে, তাই বিশেষজ্ঞরা চেষ্টা করছেন একে রক্ষা করার। এরা পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী এবং হিংস্র প্রাণী। দক্ষিণ আমেরিকায় এটি পরিচিত জাগুয়ার নামে। আফ্রিকা এবং এশিয়ায় পাওয়া যায় এদের। আর উত্তর আমেরিকার দেশগুলোতে এরা পরিচিত পুমা হিসেবে। বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন, জীবিত বাঘদের মধ্যে এরাই সবচেয়ে দ্রুতগতির এবং এদের শিকারের পিছু লেগে থেকে মারার আগ পর্যন্ত তাড়া করার দারুণ গুণ রয়েছে। জাগুয়ারকে নিয়ে ভয় পাওয়ার আরেকটি কারণ হলো এদের হিংস্রতা। সাধারণত বাঘ জাতীয় প্রাণীরা আক্রমণাত্মক হয় না। শুধু খিদে পেলেই তাদের নিয়ন্ত্রণ হারাতে দেখা যায়। সে দিক থেকে জাগুয়ার অনেক বেশি আক্রমণাত্মক। খিদে না পেলেও জাগুয়ার যদি মনে করে তার পরিবারের অন্য সদস্যদের বা তার আবাসস্থলের দখল নিয়ে কোনো সংকট তৈরি হচ্ছে তাহলে সে শিকারের দিকে ছুটে যায়। অনেক সময় তার শিকারের তালিকায় আরও হিংস্র প্রাণীরাও প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছে। সেক্ষেত্রে জাগুয়ার মোটেও ছাড় দিতে রাজি নয়। বরং আক্রমণে সে-ই এগিয়ে থাকে। এসব কারণ ছাড়াও জাগুয়ারের খাদ্য তালিকা ক্রমশ ছোট হয়ে আসায় তারা অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। জাগুয়ারের অস্তিত্ব বাঁচাতে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সংগঠন এগিয়ে এসেছে। কিন্তু অ্যামাজন থেকে একবার তারা হারিয়ে গেলে তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা আর সম্ভব হবে না এই মত সবারই। অ্যামাজনের এই ভয়ংকর সুন্দর প্রাণীটির দিন শেষ হয়ে আসছে বলে বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন। এখন সময় বলে দেবে তাদের ভবিষ্যৎ কী।

 

ইলেকট্রিক ইল

কোনো কারণে যদি এই শক মানুষের গায়ে  লাগে তবে সে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যাবে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই...

ইলেকট্রিক ইলের মতো ভয়ানক কিছু জলতলে দ্বিতীয়টি নেই। এ পর্যন্ত প্রায় ৬০০ ভোল্ট মাত্রার ইলেকট্রিক শক দিতে সক্ষমতার কথা জানান দিয়েছে ইলেকট্রিক ইল। অ্যামাজনের স্বাদুপানিতে এদের অবাধ বিচরণ। তবে বেশির ভাগ সময় এরা জলাশয়ের কর্দমাক্ত তলদেশে বাস করে। যদিও পানির ওপরও এদের দেখা পাওয়া যায়। ছোট প্রাণী শিকার করতে গিয়ে ইলেকট্রিক শক ব্যবহার করে থাকে বলে এদের অনেকেই ইলেকট্রিক ইল ডেকে থাকে। তবে কোনো কারণে যদি এই শক মানুষের গায়ে লাগে তবে সে হƒদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যাবে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই। ইলেকট্রিক ইলকে কাবু করতে তাদের সবটুকু ইলেকট্রিক শক বের করে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই।

 

পিনাট হেড বাগ

কত প্রকার কীট যে অ্যামাজনে ঘুরে বেড়ায় তার সঠিক হিসাব এখনো পাওয়া যায়নি। তবে অদ্ভুত কীটগুলোর মধ্যে পিনাট হেড বাগের কথা আলাদা করেই বলতে হয়। অদ্ভুত পিনাট হেড বাগ পোকাটির মাথা থেকে কন্দযুক্ত স্ফীত যে চিনাবাদাম বের হয়েছে সেটি সবার চোখে পড়ার মতো। এই বাদামটি কীভাবে মাথায় গজালো তার ব্যাখ্যা অনিশ্চিত, যদিও বিজ্ঞানীদের মতে এটি টিকটিকির মাথার মতো। এই অদ্ভুত অঙ্গটি ছাড়া শিকারিকে এরা নিরস্ত করতে পারে না অর্থাৎ এই জাতীয় পোকা মুখের সামনের বাদাম ছাড়া অসহায় যদিও তাদের পাখার মধ্যে পেঁচার চোখের  মতো যে দাগ রয়েছে, তাও প্রতিরক্ষার কাজে করে। শিকারিকে ধাঁধায় ফেলে দিতে এদের জুড়ি নেই। মাথার সামনের ওই বাদামটুকু দেখে হঠাৎ ভাবাই যায় না এটি আসলে একটি জীবিত কীট। নড়নচড়ন বন্ধ রেখে শিকারিকে বোকা বানিয়ে দিতে পিনাট হেড বাগের তুলনা নেই। গাছের বাকলের সঙ্গে গা মিলিয়ে থাকতে পারে এরা। এদের গায়ের রং আর স্থির বৈশিষ্ট্য ছদ্মবেশ ধরতেও বেশ কার্যকরী। অনেকেই ভুল করে এটাকে গাছের মরা বাকল ভেবে থাকে যেটা পিনাট হেড বাগের সবচেয়ে মজার বিষয়।

 

পয়জন ডার্ট ব্যাঙ

পয়জন ডার্ট ফ্রগ অ্যামাজনে বসবাসকারী ব্যাঙদের সেরা প্রতিনিধি। এই ক্ষুদ্রাকৃতির উজ্জ্বল রঙের ব্যাঙকে শিকারিদের দূরে রাখার এক সতর্কবার্তা হিসেবে বিবেচিত। এর বিষ শিকারিরা শিকারের জন্য ব্যবহƒত তীরের মাথায় লাগায়। এ কারণেই এ বিষাক্ত প্রাণীটির নাম দেওয়া হয়েছে পয়জন ডার্ট ব্যাঙ। ব্যাঙগুলো আকৃতিতে বেশ ক্ষুদ্র। সোনালি রঙের পয়জন ডার্ট ব্যাঙ মাত্র ২ ইঞ্চি লম্বা, কিন্তু এর বিষ ১০ জন শক্ত-সমর্থ মানুষকে মেরে ফেলার জন্য যথেষ্ট। এই ব্যাঙের বিষ সংগ্রহ করে তা চিকিৎসার কাজে ব্যবহারের চেষ্টা করা হয়েছে। অনেকে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট পরিমাণে বিষ সংগ্রহ করারও চেষ্টা করেছে, কিন্তু সম্ভব হয়নি। বেদনানাশক হিসেবে পয়জন ডার্ট ব্যাঙের বিষ থেকে তৈরি ওষুধ আবিষ্কারের কাজ চলছে ধীরে ধীরে। পয়জন ডার্ট ব্যাঙ তার শিকারকে ধরতে বিষের ব্যবহারটা ভালো করেই জানে। প্রথমে জিভ দিয়ে শিকারকে আটকিয়ে ধরে এবং ধীরে বিষ ঢুকিয়ে দেয় শিকারের বুকে।

 

বিস্ময় কিনকাজো

কিনকাজোকে অ্যামাজনের বিস্ময় বললে কম বলা হবে। অ্যামাজনে যত বিস্ময়কর প্রাণী আছে তাদের একটি কিনকাজো। কিনকাজো আসলে রেকনের মতো। এ প্রাণীর আছে সোনালি নরম মোটাসোটা ঘন লোম এবং আরও রয়েছে লম্বা লেজ, যা দিয়ে তারা গাছকে শক্ত করে আটকে ধরে রাখতে পারে। এদের মধু ভাল্লুকও বলে। গাছের ডালে এরা বাস করে। সাধারণত ফলমূল খেয়ে বাঁচে। এদের জিহ্বাটি থাকে তাদের শরীরের তুলনায় বেশ লম্বা। গাছের ঝুলন্ত ফলকে ধরতে এবং ফুলের মধু চাটতে এই ৫ ইঞ্চি লম্বা জিহ্বা তারা ব্যবহার করে। এত বড় জিহ্বা থাকার কারণে এদের সহজেই বনে চিনে নেওয়া যায়। তবে এই পরিচিতি তাদের অস্তিত্বকে আরও সংকটে ফেলে দিয়েছে। শিকারির প্রথম পছন্দের তালিকায় তারা চলে এসেছে। অনেকে গোপনে তাদের সংগ্রহ করে ঘরে ব্যক্তিগত চিড়িয়াখানায় পোষে। এ কারণেও বন থেকে ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে। বিস্ময় কিনকাজো পরিবারের সঙ্গে থাকতে বেশি পছন্দ করে। তাদের বাচ্চাদের বুকে জড়িয়ে ছোটাছুটির দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি অ্যামাজনের সেরা দৃশ্যগুলোর একটি। অ্যাডভেঞ্চারে আসাদের প্রধান আকর্ষণও কিনকাজো। বাচ্চা কিনকাজো খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ভ্রমণকারীদের কাছে।

 

ব্রাজিলিয়ান মাকড়সা

মাকড়সা আসলে অমেরুদন্ডী শিকারি কীট। আট পা ওয়ালা মাকড়সার একটি বিশেষ গুণ হলো, এরা জাল তৈরি করে এবং জালের মাধ্যমে অন্যান্য কীটপতঙ্গ শিকার করে। তবে সব মাকড়সাকে ছাড়িয়ে যায় ব্রাজিলিয়ান মাকড়সা। মাকড়সার বিভিন্ন প্রজাতি, কেউ জাল বোনে, কেউ লাফিয়ে শিকার ধরে। সব মাকড়সার একজোড়া বিষগ্রন্থি আছে। তবে ব্রাজিলিয়ান মাকড়সার কামড় খুব বিষাক্ত। ব্রাজিলিয়ান মাকড়সা নিঃসঙ্গ শিকারি- এরা জাল বোনে না। লাফিয়ে শিকার ধরে। এদের চেনার উপায় হলো নিচ দিকে বাঁকা দাঁড়া যা সোজা ওপর-নিচ নড়ে।

এই মাকড়সাটি যেমন বিখ্যাত এর সৌন্দর্যের জন্য, তেমনি বিখ্যাত পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বিষধর মাকড়সা হিসেবে। এর একটা কামড় একজন মানুষকে মেরে ফেলার জন্য যথেষ্ট। গবেষণায় দেখা গেছে, তৃতীয়বার কামড়ানোর পর মাকড়সাটি তেমন একটা বিষ পুনরুৎপাদন করতে পারে না। ষষ্ঠবারের কামড়ে মাকড়সাটি যে পরিমাণ বিষ ঢালে তা খুবই নগণ্য। ব্রাজিলিয়ান মাকড়সা এতই বিষাক্ত যে, ফটোগ্রাফাররাও এর কাছ ঘেঁষে ছবি তুলতে ভয় পান। তবে ব্রাজিলিয়ান মাকড়সা শিকার ধরা ছাড়া অকারণে আক্রমণাত্মক নয়।

 

র‌্যাটল স্নেক

সাপ এমনিতেই বেশ আতঙ্কজনক প্রাণী। সাপের কামড়ের ভয় বনে-বাদারে কতটা বেশি সেটা সবাই অনুমান করতে পারে। কিন্তু গোখরা বা র‌্যাটল স্নেকের কামড়ের ভয় সবচেয়ে বেশি আতঙ্কের বিষয়। অ্যামাজন জঙ্গল বিভিন্ন ধরনের সাপে পরিপূর্ণ। সেখানে মানুষের জন্য সবচেয়ে বেশি ভয়ংকর সাপ র‌্যাটল। লাতিন আমেরিকার সাপের কামড়ের মধ্যে ৯ শতাংশ সাপের কামড়ই র‌্যাটন স্নেকের। প্রজাতি ভেদে র‌্যাটল স্নেকের কামড়ের ধরনও ভিন্ন হয়। এ জন্য প্রায়ই অনেক সময় ডাক্তারদেরও সঠিক চিকিৎসা দিতে সমস্যা হয়। হঠাৎ করে কামড় চিনে নিয়ে উপযুক্ত চিকিৎসা দিতে না পারলে মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী। দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চলে এ সাপ পাওয়া যায়। তবে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় অ্যামাজনের সাভানা অঞ্চলে। সম্ভবত এ কারণেই সাভানা অঞ্চলকে এড়িয়ে চলতে চান অনেকে। কিন্তু অ্যামাজনে পা রেখে র‌্যাটল স্নেককে ফাঁকি দেওয়া প্রায় অসম্ভব। একসময় ঠিকই পায়ের সামনে পড়ে যাবে নয়তো হুটহাট গাছ থেকে ছিটকে পড়বে গায়ে।

সর্বশেষ খবর