শনিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

জোটের প্রার্থী হয়েও লড়তে হবে একা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

জোটের প্রার্থী হয়েও লড়তে হবে একা

সিলেটে রয়েছে ছয়টি সংসদীয় আসন। এসব আসনে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা নিজেদের প্রার্থীই দেখতে চান জাতীয় নির্বাচনে। কিন্তু জোট-মহাজোটের সমীকরণে তাদের আশা পূর্ণতা পাচ্ছে না। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সিলেটে দুটি করে আসন জোট ও মহাজোটের শরিকদের ছেড়ে দিচ্ছে বলে জোর গুঞ্জন। আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে এবং বিএনপি জামায়াতকে দুটি করে আসনে ছাড় দিচ্ছে। জাতীয় পার্টি ও জামায়াত এসব আসনে নিজেদের প্রার্থীও দিয়েছে। কিন্তু দলীয় প্রার্থী না পেয়ে ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতা-কর্মীরা শরিক দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে নারাজ। ফলে জাপা ও জামায়াতের প্রার্থীরা যদি জোটের প্রার্থী হন, তারপরও তাদের লড়াই করতে হবে একা।

সংল্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে একাদশ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সিলেট-২ ও সিলেট-৫ আসন জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিচ্ছে। আর বিএনপি সিলেট-৫ ও সিলেট-৬ আসন দুটি জামায়াতকে ছাড়ছে। সিলেট-২ আসনে জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া ও সিলেট-৫ আসনে জাপা চেয়ারম্যানের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা সেলিম উদ্দিন প্রার্থী হচ্ছেন। অন্যদিকে সিলেট-৫ আসনে জামায়াত নেতা মাওলানা ফরিদ উদ্দিন ও সিলেট-৬ আসনে মাওলানা হাবিবুর রহমান প্রার্থী হচ্ছেন বলে জানা গেছে।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের দাবি হচ্ছে, সিলেটের সব আসনেই নিজেদের প্রার্থী দিতে হবে। তারা বলছেন, বছরের পর বছর এলাকায় রাজনীতিতে তারা সক্রিয় থাকেন, কিন্তু নির্বাচন এলে ‘সুযোগসন্ধানীরা’ জোটের শরিক হিসেবে প্রার্থী হয়ে যান। এর ফলে তৃণমূলে আওয়ামী লীগ-বিএনপি নেতা-কর্মীদের মনোবল ভেঙে পড়ে। তারা সক্রিয় রাজনীতি থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেন। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দলের সাংগঠনিক গতিশীলতা।

আগামী নির্বাচনে সিলেট-২ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী আর সিলেট-৫ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ মনোনয়নলাভের জোর দাবিদার ছিলেন। অন্যদিকে বিএনপি থেকে সিলেট-৫ আসনে জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও কানাইঘাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি মামুনুর রশীদ মামুন এবং সিলেট-৬ আসনে জেলা বিএনপি নেতা ফয়সল আহমদ চৌধুরী মনোনয়ন পেতে সক্রিয়। কিন্তু এসব আসন শরিকদের ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি প্রায় নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। তারা জোটের শরিক হলেও অন্য দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে নারাজ। ফলে ওই চারটি আসনে জোটের শরিক দলের নেতারা প্রার্থী হলেও নির্বাচনী মাঠে তাদের একা একাই লড়াই করতে হবে বলে মনে করছেন সংশ্ষ্টরা।

এ বিষয়ে সিলেট জেলা বিএনপির সহসভাপতি মামুনুর রশীদ মামুন বলেন, ‘সিলেট-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছাড়া অন্য কারও পক্ষে কাজ করতে রাজি নন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা।’

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগের প্রার্থীই চায়। কারণ তারা সারা বছর আওয়ামী লীগের রাজনীতিই করে, অন্য দলের নয়। কিন্তু জোটের সমীকরণে আসন ছাড়তে হয়।’

সর্বশেষ খবর