রবিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

নাশকতার আশঙ্কা দুই দলের

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

নাশকতার আশঙ্কা দুই দলের

নির্বাচনী উৎসবে ভাসছে দেশ। এই সুযোগে ভোটের দিন সিলেটে নাশকতা বা জঙ্গি হামলার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা। তবে যে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী ও জঙ্গি তৎপরতা রুখতে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

২০০৬ সালে তৎকালীন জেএমবি প্রধান শায়খ আবদুর রহমান আস্তানা গেড়েছিল সিলেট নগরীর শাপলাবাগের আলোচিত ‘সূর্যদীঘল বাড়িতে’। আর ২০১৭ সালে জনবহুল এলাকা দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ির ফ্ল্যাটবাড়ি ‘আতিয়া মহলে’ সন্ধান মিলেছিল জঙ্গি আস্তানার। সর্বশেষ দিনদুপুরে শাহজালাল বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর জঙ্গি হামলার মতো ঘটনাও ঘটেছে। সাম্প্রতিক সময়ে সিলেটের বিভিন্ন স্থান থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিশেষ করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় এবং সিলেট কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় নির্বাচনে সিলেটে নাশকতার শঙ্কায় রয়েছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা। তারা মনে করছেন, জাতীয় নির্বাচনে যে উৎসব কিংবা ব্যস্ততা, এই সুযোগে কোনো গোষ্ঠী পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালাতে পারে। এ জন্য উভয় দলের স্থানীয় পর্যায়ের শীর্ষ নেতারা নাশকতা ঠেকাতে নিজদলীয় নেতা-কর্মীদের সজাগ ও সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের শামীম বলেন, ‘নাশকতার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তৃতীয় কোনো পক্ষ সুযোগ নিতে পারে। আমরা সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ঠেকাতে প্রশাসনকে সহযোগিতা করব।’

সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, ‘সিলেটে অতীতে বিভিন্ন ঘটনা ঘটেছে। এবারের নির্বাচনে নাশকতার শঙ্কা নিয়ে গণমাধ্যমে গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে এ সংক্রান্ত খবর আমরা দেখতে পাচ্ছি। এ বিষয়টাকে একদমই উড়িয়ে দেওয়া যাবে না।’

নির্বাচনকে ঘিরে যাতে কেউ কোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটাতে না পারে, সে ব্যাপারে প্রশাসনকে বিশেষ নজরদারি রাখার দাবি জানাচ্ছেন নাগরিক সমাজ। এ প্রসঙ্গে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সিলেট বিভাগীয় প্রতিনিধি শামসুল আলম সেলিম বলেন, ‘নির্বাচনের পরিবেশকে বিনষ্ট করার জন্য, গণতন্ত্রের গতিকে থামিয়ে দেওয়ার জন্য জঙ্গি গোষ্ঠী অপতৎপরতা চালাতে পারে। সিলেটে পরিস্থিতি যাতে শান্ত থাকে, সে জন্য প্রশাসনকে বিশেষ নজরদারি চালাতে হবে।’

আইনশৃৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, কেন্দ্রে ভোটারদের নির্বিঘ্ন উপস্থিতি ও যে কোনো ধরনের নাশকতার চেষ্টা প্রতিরোধে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জেদান আল মুসা বলেন, ‘নাশকতা ঠেকাতে আমাদের সর্বাত্মক প্রস্তুতি আছে।

পোশাকধারী পুলিশ, সাদাপোশাকের পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন মাঠে সতর্কভাবে কাজ করছেন।’

র‌্যাব-৯ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আলী হায়দার আজাদ বলেন, ‘আমাদের সর্বাত্মক প্রস্তুতি আছে। গত কয়েক দিন ধরে আমরা চেকপোস্ট বসিয়েছে, আবাসিক হোটেলগুলোতে তল্লাশি করছি, আসনভিত্তিক টহল দলগুলো গ্রামে গ্রামে কাজ করছে।’

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর