রবিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

৬ আসনে ৮০৫ কেন্দ্র : ঝুঁকির আশঙ্কা

রাহাত খান, বরিশাল

৬ আসনে ৮০৫ কেন্দ্র : ঝুঁকির আশঙ্কা

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল জেলার ছয়টি সংসদীয় আসনের ৮০৫টি কেন্দ্রের ৪ হাজার ৪৭টি কক্ষে মোট ভোটার ১৭ লাখ ৮১ হাজার ৬২৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮ লাখ ৯৯ হাজার ৫৮৫ এবং ৮ লাখ ৮২ হাজার ৪৪ জন নারী। যদিও ৮০৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪১৬টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ (অধিক গুরুত্বপূর্ণ) হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে তিনজন পুলিশ ও ১৩ জন আনসারসহ ১৬ জন এবং প্রতিটি ঝুঁকিপূর্ণ চারজন পুলিশ ও ১৩ জন আনসারসহ দায়িত্ব পালন করবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ১৭ জন সদস্য। এ ছাড়া জেলার ৬টি আসনে ছয়জন করে ৩৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ৬০০ জন সেনা সদস্য, ৪২০ জন বিজিবি, জেলা ও মহানগরীতে ২ হাজার ৮৫০ জন পুলিশ, ৯ হাজারের বেশি আনসার সদস্য এবং প্রতিটি আসনে র‌্যাবের দুটি করে টহল দল আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করবে। টহল ছাড়াও র‌্যাবের স্ট্রাইকিং ফোর্স এবং সাদা পোশাকধারী সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবে। আজ সকাল ৮টায় বিরামহীন ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হবে বিকাল ৪টায়।

বরিশাল জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নুরুল আলম জানান, জেলার ৬টি সংসদীয় আসনে ৮০৫টি ভোট কেন্দ্রের ৪১৬টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন।

বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৫৮ হাজার ৩৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২৯ হাজার ৪২৮ এবং নারী ভোটার ১ লাখ ২৮ হাজার ৬০৬ জন। এই আসনের ১১৫ কেন্দ্রের ৫৭৮টি কক্ষে ভোট গ্রহণ করা হবে। ১১৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৬ অধিক গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এখানে আওয়ামী লীগের আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এবং বিএনপির জহিরউদ্দিন স্বপনসহ মোট প্রতিদ্বন্দ্বী চারজন। বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসনের ১৩৬টি কেন্দ্রের ৬৮৫টি কক্ষে ভোট দেবেন ৩ লাখ ২৬ হাজার ৪৪ জন ভোটার। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫৩ হাজার ৫০৬ জন এবং ১ লাখ ৪৯ হাজার ১৩৮ জন ভোটার নারী। এই আসনের ৫৯টি কেন্দ্রকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। এখানে আওয়ামী লীগের মো. শাহেআলম এবং বিএনপির সরদার সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টুসহ প্রতিদ্বন্দ্বী সাতজন।

বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে ১২৩টি কেন্দ্রের ৫৮৭টি কক্ষে মোট ভোটার ২ লাখ ৫৪ হাজার ২৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২৭ হাজার ৩৯৯ জন এবং ১ লাখ ২৬ হাজার ৬২৫ জন ভোটার নারী। এই আসনে ৪৮টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। এই আসনে বিএনপির অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ওয়ার্কার্স পার্টির টিপু সুলতান এবং জাতীয় পার্টির গোলাম কিবরিয়া টিপুসহ মোট প্রতিদ্বন্দ্বী ছয়জন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী না থাকলেও এখানে নৌকা পেয়েছেন ১৪ দলের টিপু সুলতান।

বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জ) আসনের ১৪৮টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে ৮৯৫টি কক্ষে। এখানে ১ লাখ ৬৫ হাজার ১৭৯ জন পুরুষ এবং ১ লাখ ৫৮ হাজার ৩৯৪জন নারীসহ মোট ভোটার ৩ লাখ ২৩ হাজার ৫৭৩ জন। এই আসনের ৫১টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। এই আসনে আওয়ামী লীগের পংকজ নাথ এবং ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে নাগরিক ঐক্যের জেএম নুরুর রহমানসহ মোট প্রতিদ্বন্দ্বী সাতজন।

বরিশাল-৫ (সদর ও সিটি করপোরেশন) আসনে ১৭৪টি কেন্দ্রের ৮৯৫টি কক্ষে ভোট দেবেন ৩ লাখ ৯৭ হাজার ৫১৪ জন ভোটার। এর মধ্যে ২ লাখ ৬১৯ জন পুরুষ এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৯৬ হাজার ৮৯৫ জন। এই আসনে অর্ধেকেরও বেশি ১২৯টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। এখানে আওয়ামী লীগের কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম এবং বিএনপির অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ারসহ প্রতিদ্বন্দ্বী মোট সাতজন।

বরিশাল-৬ (বাকেরগঞ্জ) আসনের ১০৯টি কেন্দ্রের ৫৫৮টি কক্ষে মোট ভোটার ২ লাখ ৪৫ হাজার ৮৪০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২৩ হাজার ৪৫৪ জন এবং ১ লাখ ২২ হাজার ৩৮৬ জন ভোটার নারী। এই আসনের ৯৩টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। এই আসনে নৌকার প্রার্থী না থাকলেও মহাজোট প্রার্থী জাতীয় পার্টির নাসরিন জাহান রত্না এবং বিএনপির আবুল হোসেন খানসহ মোট প্রতিদ্বন্দ্বী সাতজন। বরিশালের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা এস এম অজিয়র রহমান জানান, গতকাল বিকালের মধ্যে জেলার ৮০৫টি কেন্দ্রের সব ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা যাবতীয় নির্বাচনী সরঞ্জামসহ অবস্থান নিয়েছেন। আজ রবিবার ভোট গ্রহণের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ ছাড়া জেলার সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা এস এম অজিয়র রহমান।

সর্বশেষ খবর