চট্টগ্রাম তল্লাশির নামে বাসচালককে গাড়ি থেকে নামিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগের ঘটনায় মামলা (নম্বর ৫৪) দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার বিকেলে নিহত চালক জালাল উদ্দিনের ভাই জুয়েল হোসেন কর্ণফুলী থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলায় ৮ থেকে ১০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। দণ্ডবিধির ১৪৩, ৩৪১, ৩২৩, ৩২৫ ও ৩০২ ধারায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে।
কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর মাহমুদ বলেন, ‘নিহত চালকের ভাই বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে, শ্রমিককে হত্যার প্রতিবাদে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে পরিবহন শ্রমিক সংগঠনগুলো। সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সংগঠনের নেতাদের বৈঠকে প্রত্যাহারের কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় ধর্মঘট বহাল আছে বলে জানা যায়। সংগঠনগুলোর দাবি, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা না হলে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সন্ধ্যা ৬টা থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রামে পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়। সন্ধ্যার পর থেকে দুরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম থেকে আন্তঃজেলার ৬৪টি রুট এবং আরাকান সড়ক সংশ্লিষ্ট ১৯টি রুটে একযোগে ২৪ ঘণ্টার যাত্রীবাহী পরিবহন ধর্মঘট পালন করা হবে। দ্বিতীয় দফায় আগামী রবিবার সকাল ৬টা থেকে পরদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত বৃহত্তর চট্টগ্রামের পাঁচ জেলায় ২৪ ঘণ্টার যাত্রী ও পণ্যবাহী পরিবহন ধর্মঘট চলবে।
জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মো. মুসা বলেন, ‘মামলা হলেও আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক ফলপ্রসু না হওয়ায় আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। যতক্ষণ পর্যন্ত হত্যাকারী চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’
প্রসঙ্গত, গত সোমবার রাতে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার নতুন ব্রিজ এলাকায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্য পরিচয়ে একটি বাসের চালক জালাল উদ্দিনকে (৫০) পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। ওই বাসে থাকা পরিবহনের সুপারভাইজার আজিম উদ্দিনের অভিযোগ, রাত সাড়ে ১১টার দিকে সাদা পোশাকে ৭-৮ জন লোক বাস থেকে ইয়াবা উদ্ধারের নামে তল্লাশির একপর্যায়ে চালককে নামিয়ে রাস্তার পাশে নিয়ে বেধড়ক পেটায়। দুইদফা পিটিয়ে আধমরা করে তাকে আবারও বাসে তুলে দেওয়া হয়। রাত আড়াইটার দিকে জালালকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলনে নামে পূর্বাঞ্চলীয় সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন ও জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন