ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

বগুড়ার ১১ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের ১৯ বিদ্রোহী মাঠে
নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

আগামী ১১ নভেম্বর বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন অনেকেই। এসব বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। বিদ্রোহীদের নিয়ে অনেকটাই বেদায়দায় রয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এ নিয়ে শঙ্কিত আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনীত প্রার্থীরাও।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিবগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ১৯জন বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। বিদ্রোহী প্রার্থীদের সবাই স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগ অথবা যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।

দ্বিতীয় ধাপে এই নির্বাচন হতে যাচ্ছে। নির্বাচনে ১১ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে ১১ জনকে। এর বাইরে দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও মূলত আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বিপরীতে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর ভূমিকায় আছেন।

জানা যায়, ময়দানহাট্টা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান এসএম রুপম। এখানে স্বতন্ত্র হিসেবে বিদ্রোহী হয়েছেন এক নারীসহ ৫ জন। তারা হলেন আওয়ামী লীগ নেতা মেজবাউল আলম, আব্দুস সামাদ, যুবলীগ নেতা খন্দকার মো. মাহবুব মোর্শেদ, যুব মহিলা লীগের নেত্রী মোছা. শাহানা খাতুন ও যুবলীগের বহিস্কৃত নেতা আবু জাফর। 

কিচক ইউনিয়নে মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান এবিএম নাজমুল কাদির চৌধুরী। বিদ্রোহী হয়েছেন  আওয়ামী লীগ নেতা  শাহজাহান আলী ও  যুবলীগ নেতা মোমিনুল ইসলাম চৌধুরী লিটন।  

আটমূল ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছে মিজানুর রহমান মিজান। বিদ্রোহী হয়েছে আওয়ামী লীগের বেলাল হোসেন। পিরব ইউনিয়ন দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন আব্দুল করিম। বিদ্রোহী হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা মোজাম্মেল হক মন্ডল ও প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা মকবুল হোসেনের ছেলে আসিফ মাহমুদ মিল্টন ও তার স্ত্রী শামিমা আকতার। বুড়িগঞ্জ ইউনিয়নে নৌকার টিকিট পেয়েছেন রেজাউল করিম চঞ্চল। তার বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগনেতা সাইদুর রহমান। শিবগঞ্জ ইউনিয়ন দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন শহিদুল ইসলাম শহীদ। তার বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন রাকিব আকন্দ নামের এক যুবক। দলে কোনো পদ না থাকলেও তিনজনের মধ্যে তার নাম ছিল। 

বিহার ইউনিয়নে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা মোনায়েম হোসেন ইকবাল। যুবলীগের নেতা মতিউর রহমান মতিন। রায়নগর ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন শাহজাহান কাজী। তার বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন যুবলীগ নেতা তাজুল ইসলাম। সৈয়দপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন মাহাতাব উদ্দিন। তার বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছে ছাত্রলীগ নেতা ছানোয়ারুল ইসলাম।  দেউলী ইউনিয়নে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছে জাহেদুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়েছেন যুবলীগ নেতা ও বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল হাই প্রধান, যুবলীগ নেতা সাজ্জাদ হোসেন সরকার টুটুল।  

পিরব ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থী আব্দুল করিম বিদ্রোহী প্রার্থী প্রসঙ্গে বলেন, আমার ইউনিয়নের দুইজন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। বিষয়টি দলের নেতাদের মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে।  শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তা জানান, দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যারা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবেন, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, আগামী ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচন হতে যাচ্ছে। ১৭ অক্টোবর ছিল মনোয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৬ অক্টোবর, প্রতীক বরাদ্দ হবে ২৭ অক্টোবর। 

বিডি প্রতিদিন/এএ



এই পাতার আরো খবর