ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

প্রদীপ শিখার মতোই মৃত্যুতে যার পরিসমাপ্তি
রিমি রুম্মান, যুক্তরাষ্ট্র

আজ একটি গোটা বিকেল কেটে গেলো মুক্তিযুদ্ধের সময়কার গল্প শুনে। বৈকালিক চা'য়ে চুমুক দিতে দিতে অদূরে রাখা জুতার বাক্সের দিকে দেখিয়ে আম্মা বলেন, ঠিক এতোটুকু মাপের একটি রেডিও ছিল শ্বশুরের (আমার দাদা শ্বশুর)। আশেপাশের গ্রাম থেকে মানুষজন এসে উঠোনে ভিড় জমাতো খবর শুনবে বলে। সকলের চোখে, মুখে আতংক আর ভয় বিরাজ করতো। পাশের গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ছেলেকে না পেয়ে বৃদ্ধ বাবাকে ধরে নিয়ে যাবার সময় স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন সেই বাবা। কিছু পরিবারে মুক্তিযোদ্ধা এবং রাজাকার দু'ভাইয়ের সহাবস্থানও ছিল, যা আরও বিপদজনক। জানালেন, কখনো বা আতংকিত হয়ে লুকাতেন কাছারি ঘরে। আম্মা তখন ২৯/৩০ বছরের যুবতী।

এরপর কেটে গেছে ৪৭টি বছর।

আম্মা সকালের কথা বিকেলে মনে করতে পারেন না, অথচ কী অবলীলায় বলে গেলেন আমাদের স্বাধীনতার সময়কার কথা। মুক্তিযুদ্ধ, বিজয়, স্বাধীনতা যারা দেখেছেন, সম্ভবত মৃত্যুর আগ অবধি তাঁদের স্মৃতিতে সেইসব ঘটনা প্রদীপশিখার মতো জ্বলজ্বল করে জ্বলে। প্রদীপ শিখার নিভে যাবার মতোই মৃত্যুতে যার পরিসমাপ্তি।

চেনা আপনজনদের আত্নত্যাগের কথা বলতে গিয়ে আম্মা যখন আঁচলে চোখ মুছছিলেন, আমার কেবলই কিছু লাইন মনে পড়ছিলো...

" যুগের নিষ্ঠুর বন্ধন হতে মুক্তির এ বারতা আনলে যারা আমরা তোমাদের ভুলবো না ভুলবো না, ভুলবো না... "

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

বিডি প্রতিদিন/২১ মার্চ, ২০১৮/ফারজানা



এই পাতার আরো খবর