ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

আন্তর্জাতিক আইন ভাঙতে যাচ্ছে ব্রিটেন
যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি :

উরোপীয় ইউনিয়নের সাথে ব্রিটেনের জোরালো সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কারণ আইন প্রণয়ন করে ব্রেক্সিট চুক্তির কিছু শর্ত ভাঙার উদ্যোগ নিচ্ছে ব্রিটিশ সরকার।

বরিস জনসনের সরকার সত্যি ব্রেক্সিট চুক্তির শর্ত ভেঙে অভ্যন্তরীণ আইন প্রণয়ন করলে তার পরিণাম যে মারাত্মক হতে পারে, সে বিষয়ে সতর্ক করে দিচ্ছেন ইইউ নেতারা। বিশেষ করে উত্তর আয়ারল্যান্ডের শান্তি বিপন্ন করতে পারে, এমন কোনো পদক্ষেপ পরিস্থিতি জটিল করে তুলবে বলে সতর্কবাণী শোনা যাচ্ছে।

পুরোপুরি বিচ্ছেদের পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ব্রিটেনের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে আলোচনায় অগ্রগতির অভাব নিয়ে এতদিন তেমন কোনো বিস্ময় ছিল না। আলোচনা বিফল হলে ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ব্রেক্সিট পুরোপুরি কার্যকর হবার পর দুই পক্ষের মধ্যে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম মেনে লেনদেন হবে, এমনটাই ধরে নেয়া হয়েছিল।

কিন্তু অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে মতবিরোধের পাশাপাশি স্বাক্ষরিত ব্রেক্সিট চুক্তির শর্ত খেলাপের আশঙ্কা কেউ করেনি। সেই আশঙ্কা সত্য প্রমাণ করে ব্রিটেন বুধবার এমন আইনের খসড়া পেশ করতে চলেছে, যার ফলে আন্তর্জাতিক আইন ভেঙে ব্রেক্সিট চুক্তির অংশবিশেষ বাতিল করা হতে পারে।

আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইমন কোভেনি বলেছেন, গত বছরের ব্রেক্সিট চুক্তির শর্ত ভাঙা হলে রাজনৈতিক আস্থার মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। এ অবস্থায় ভবিষ্যৎ বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনায় ইইউ আরো কড়া অবস্থান নেবে বলে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট ডেভিড সাসোলি বলেন, ব্রিটেন বোঝাপড়ার শর্ত ভাঙার কোনো চেষ্টা করলে তার মারাত্মক পরিণাম দেখা দিতে পারে।

ব্রিটিশ সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে উত্তর আয়ারল্যান্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ব্র্যান্ডন লুইস স্বীকার করেন যে, এই পদক্ষেপের ফলে ‘নির্দিষ্ট ও সীমিত আকারে’ আন্তর্জাতিক আইন ভাঙা হচ্ছে। তবে তার মতে, পরিস্থিতি পরিবর্তনের ফলে অতীতেও এমন ঘটনার দৃষ্টান্ত রয়েছে।

আয়ারল্যান্ডে শান্তিভঙ্গ হলে ব্রিটেন যে আন্তর্জাতিক স্তরেও সমস্যার মুখে পড়বে, সে বিষয়ে গত বছরই সতর্ক করে দিয়েছেন মার্কিন সংসদের নিম্ন কক্ষের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। তিনি বলেন, সে ক্ষেত্রে ব্রিটেন ও আমেরিকার মধ্যে কোনো মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সংসদে বিবেচনাই করা হবে না।

মঙ্গলবার ডেমোক্র্যাটিক দলের সংসদ সদস্য ব্রেন্ডন বয়েল বলেছেন, এমন কোনো দেশের সাথে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করা কঠিন হবে, যেদেশ সবে গুরুত্বপূর্ণ এক চুক্তির খেলাপ করেছে। এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে ব্রিটিশ সরকারের আইন বিভাগের প্রধান জনাথন জোনস পদত্যাগ করেছেন বলে শোনা যাচ্ছে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ও বিরোধী লেবার পার্টির নেতারাও এমন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছেন।

এমন উত্তেজনার ফলে পাউন্ডের বিনিময় মূল্য ও ব্রিটেনের পুঁজিবাজার ধাক্কা খেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জনসন চলমান করোনা সঙ্কট ও চুক্তিহীন ব্রেক্সিট ঘটলে অর্থনৈতিক ধাক্কা সামলানোর আশ্বাস দিলেও উত্তেজনা দূর হচ্ছে না। ব্রেক্সিট চুক্তি খেলাপের অভিযোগের জবাবে ব্রিটেনের সরকার জানিয়েছে, আগামী বছর থেকে উত্তর আয়ারল্যান্ডের সাথে ইইউ ও ব্রিটেনের বাকি অংশের বাধাহীন ব্যবসাবাণিজ্যের স্বার্থে কিছু ‘টেকনিক্যাল’ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন  



এই পাতার আরো খবর