ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

কোয়ারেন্টাইন সেন্টার তৈরির জন্য জায়গা দিল মসজিদ কর্তৃপক্ষ
দীপক দেবনাথ, কলকাতা
বেঙ্গলি বাজার মসজিদ

কলকাতায় ক্রমশই বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। কিন্তু সন্দেহজনক আক্রান্তদের আলাদা করে রাখার জন্য শহরে সেই তুলনায় নেই পর্যাপ্ত পরিমান কোয়ারেন্টাইন সেন্টার। কারণ জায়গার অভাব। 

একাধিক জায়গায় স্থানীয় বাসিন্দারাই এই সেন্টার তৈরিতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন অবস্থায় এগিয়ে এল কলকাতার গার্ডেন রিচ এলাকার জামিয়া মসজিদ গাউসিয়া, যা স্থানীয়দের কাছে বেঙ্গলি বাজার মসজিদ নামেই পরিচিত। 

কোয়ারেন্টাইন সেন্টার তৈরির জন্য প্রায় ৬ হাজার বর্গফুট জায়গা নিয়ে তৈরি ওই মসজিদের চতুর্থতলা (থার্ড ফ্লোর) ছেড়ে দেওয়ার কথা জানাল মসজিদের ইমাম মৌলানা কোয়ারি মোহম্মদ মুসলিম রাজভি। ইতিমধ্যে কলকাতা পুরসভার কাছে প্রস্তাবও পাঠিয়েছে তারা। 

মৌলানা কোয়ারি জানান, শহরে করোনার সংখ্যা বাড়ার ফলে সরকার কোয়ারেন্টাইন সেন্টার তৈরির জন্য জায়গার সন্ধান করছে। তখন আমরা ভাবলাম যে আমাদের মসজিদের চতুর্থতলাটি কেনত দেওয়া হবে না। এরপরই মসজিদে ৬ হাজার বর্গফুটের পুরো চতুর্থতলাই খালি করে দেওয়া হয়েছে। আরও বেশি জায়গার প্রয়োজন হলে সেই ব্যবস্থাও করে দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে মসজিদের অন্য দুইটি তলা এবং স্থানীয় স্কুলগুলিও খালি করে দেওয়া হবে। কলকাতা পুরসভা এই জায়গাগুলোকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার হিসাবে ব্যবহার করতে পারে। আমরা আমাদের সাধ্য মতো প্রচেষ্টা চালিয়েছি।

তিনি আরও জানান, এখানে এই ধরনের কোয়ারেন্টাইন সেন্টার তৈরি করতে গেলে বাধা আসতে পারে-এই আশঙ্কা থেকেই আমি বেঙ্গলি বাজার, আয়রন গেট রোড এবং বিচলি ঘাট রোড'র বাসিন্দাদের সাথে কথা বলেছিলাম। এই অঞ্চলের বাসিন্দারাই মূলত এই মসজিদে নামাজ পড়তে আসে। যদিও করোনা ও লকডাউনের আবহে আপাতত মসজিদে জমায়েত নিষিদ্ধ আছে। প্রত্যেকেই এখন বাড়ি থেকেই নামাজ আদায় করছেন। এরপরই স্থানীয়দের সাথে আলোচনা করে মসজিদ কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং স্থানীয় প্রশাসন ও বন্দর কর্তৃপক্ষকে আমাদের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।   মসজিদ কর্তৃপক্ষের এই প্রস্তাবে অনেকটাই স্বস্তি পেয়েছে কলকাতা পুরসভা। কলকাতা পুরসভার এক কর্মকর্তা জানান, পুরসভার ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের অধীন রামনগর লেন ফতেপুর ও মাহেল মঞ্জিল এবং ১৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের অধীন পাহারপুর, শ্যামলাল লেন, কসাই মহল্লা, বেঙ্গলি বাজার, আয়রন গেট রোড, বিচলি ঘাট রোডসহ একাধিক জায়গায় কন্টেনমেন্ট জোন হিসাবে ঘোষনা করা হয়েছে।

ঘনবসতি পূর্ণ এই এলাকাগুলিই এখন প্রশাসনের মাথা ব্যাথার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইমাম বলেন, কোয়ারেন্টিন সেন্টারে যাওয়ার ব্যাপারে অনেকেরই সংকোচ বোধ কাজ করে। সেক্ষেত্রে এখানকার মানুষরা যাতে ভাবেন যে এখানে তাদের জন্য একটা ঘর রাখা আছে।   বিষয়টি খতিয়ে দেখতে খুব শীঘ্রই সেখানে পরির্দশনে আসবেন কলকাতা পুরসভার কর্মকর্তারা। এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, মসজিদ কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে আমরা সত্যিই অভিভূত। আমরা চাই অন্যরাও এভাবে এগিয়ে আসুক, বিশেষ করে তিললা ও পর্ণশ্রী এলাকায় যেখানে এই সেন্টার তৈরিতে স্থানীয় মানুষজনদের কাছ থেকে বাধা এসেছে। আমরা আগে দেখবো যে এই মসজিদটি জনবসতিপূর্ণ এলাকায় নয় এবং তার পরই আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত নেবো।

বিডি-প্রতিদিন/সিফাত আব্দুল্লাহ



এই পাতার আরো খবর