ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

'শিরোপা জিততে না পারাটা হবে বড় হতাশার'
অনলাইন ডেস্ক
ফাইল ছবি

দেশের মাটিতে টানা দ্বিতীয়বারের মত আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। তাই এবার টুর্নামেন্ট জিততে না পারাটা অনেক বড় হতাশার বিষয় হবে বলে মনে করেন স্বাগতিক ইংল্যান্ডের অধিনায়ক ইয়োইন মরগান। 

স্কাই স্পোর্টসে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন কথা বলেন মরগান। সাক্ষাৎকারকালে সাথে ছিলেন টেস্ট ফরম্যাটের নয়া দলপতি জো রুটও। মরগান ও রুটের সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ইংল্যান্ডের সাবেক দুই অধিনায়ক মাইকেল আথারটন ও নাসের হুসেইন। চারজনের চায়ের কাপের আড্ডায় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ছাড়াও, ইংল্যান্ড দল নিয়ে অনেক কথা বলেছেন তারা। 

মাইকেল আর্থারটন : ২০১৫ বিশ্বকাপের পর থেকে ওয়ানডে দলে বেশ পরিবর্তন হয়েছে। মরগানের অধীনে কেমন লাগছে?

জো রুট : অনেক কিছুতে সম্পূর্ণ পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু গেল কয়েক বছর আমাদের সাফল্যের পেছনে তার (মরগান) প্রধান ভূমিকা ছিল। তিনি দলের মধ্যে এমন এক পরিবেশ তৈরি করেছেন যেখানে আমরা শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির উপর বেশি নির্ভরশীল নই। চাপের মধ্যে কিভাবে নিজেকে ঠিক রাখতে হবে তা অনেককেই তিনি শিখিয়েছেন। সাথে গেল বিশ্বকাপের পর দলে বেশ কিছু নতুন মুখ এবং অভিজ্ঞদের একসাথে রেখেছেন। যখন সিনিয়র খেলোয়াড়দের কাছ সেরাটা প্রয়োজন হবে এবং সামনে থেকে তারা নেতৃত্ব দিবে। মরগান হলো একটি যোগ্য উদাহরণ, তিনি শুধুমাত্র মাঠের ভেতরেই নয় সবক্ষেত্রেই নিজেকে তৈরি রাখেন।

নাসের হুসেইন : এটা কি দলের মধ্যে একটা পরিবর্তন আনতে অনুপ্রাণিত করেছে? তোমাকে কখনোই ক্লান্ত মনে হয়নি, তবে তুমি আন্তরিক ছিলে?

মরগান: ক্যারিয়ারের শুরুতে আমার মাথা কিছুটা গরম ছিল এবং সত্যিই আমি কিছু খারাপ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন সেটা অনেকটাই কেটে গেছে। যেটা কখনোই আমার পক্ষে কাজ করেনি। কিন্তু সব সময় সব কিছু সঠিকভাবে কাজে আসেনি। শারিরীক ভাষা দ্বারা অনেক কিছু বুঝা যায়। সুতরাং তুমি কি করতে চাও তা বুঝানোর জন্য ধীরস্থির থাকাটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

মাইকেল আথারটন : যখন ইয়োইন ওয়ানডে দলের দায়িত্ব পেল, তখন এটি স্পষ্ট যে কঠোর পরিবর্তন প্রয়োজন ছিলো। তুমিও (রুট) কি নতুন টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে কঠোর বা সামান্য পরিবর্তন ঘটাবে?

জো রুট : যদি তুমি দেখ, আমাদের দলটি ভারসাম্যপূর্ণ এবং এটি সম্পূর্ণভাবেই তৈরি একটি দল। অবশ্যই, আমরা সামনের কয়েক মাস একটি বা দু’টি জায়গাতে বেশি করে পর্যবেক্ষণ করবো। কিন্তু সবদিক থেকে পরিপূর্ণ থাকা স্কোয়াডটি আমরা বজায় রাখবো। আমাদের এখন এমন একটি মূল দল রয়েছে যারা ৩০টি টেস্ট খেলে ফেলেছে এবং পরবর্তী পর্যায়ের জন্য তারা সেরা অবস্থায় রয়েছে। 

মাইকেল আর্থারটন : তুমি (মরগান) রুটের সাথে খেলেছো। তবে তার অধীনে খেলোনি। সে কেমন অধিনায়ক হবে? বলে তুমি মনে করছ?

ইয়োইন মরগান : সে নিখুত সংমিশ্রন। বেশ ঠান্ডা ও শান্ত মেজাজের এবং এখন সে খেলার প্রতি অনেক আগ্রহী। তার মধ্যে অনেক ভারসাম্য রয়েছে কারন যারা আগ্রহী থাকে তারা অনেক কিছু স্পর্শ করতে পারে।

নাসের হুসেইন : তুমি (মরগান) খেলা ও নেতৃত্ব দেয়ার সময় তুমি অনেক বেশি আবেগী-মনোযোগি। কিন্তু আমি রুটকে দেখি,সে অনেক শান্ত এবং অনেক বেশি চিত্তাকর্ষক। 

মাইকেল আথারটন : (মরগান) সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়ার ব্যাপারে যখন বলছি, আমি বাংলাদেশ সফরের দিকেই ফিরে যেতে চাই। তোমর সিদ্বান্তের সমালোচনা আমরা করেছি। কিন্তু যাওনি?

ইয়োইন মরগান : এটি খুবই সহজ ব্যাপার। বাংলাদেশ সফর নিয়ে আমি অনুভব করেছি, সেখানে নিরাপত্তা ঝুঁকি ছিলো এবং আমাদের একটা পর্যায়ের সুরক্ষা প্রয়োজন ছিলো। আমাকে বাইরে যেতে অনুমতি দেয়া হয়নি এবং একজন আন্তর্জাতিক খেলোয়াড় হিসেবে আমাকে সেরাটাই করতে হতো। আমি অনুভব করি, আমি যেতে পারবো না এবং আমার কাজটি করতে পারবো না। যদি আমি যেতাম তবে আমি ভুল-ভাল কিছু করতে পারতাম না। 

মাইকেল আর্থারটন : কেউ কেউ বলে লন্ডনে বর্তমনে সন্ত্রাসী হুমকি বেশি। পার্থক্যটা কি?

ইয়োইন মরগান : এটি খুবই ভালো প্রশ্ন। যদিও, আমি ১৫টি গাড়ী, দু’টি হেলিকপ্টার, তিনটি ¯িœপার ও একটি অ্যাম্বুলেন্স সাথে লন্ডন ভ্রমন করি না। 

মাইকেল আর্থারটন : এই গ্রীষ্মের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে আত্মবিশ্বাস ও প্রত্যাশা কি?

জো রুট : অবশ্যই। গত কয়েক বছর ধরে ওয়ানডে ক্রিকেটে আমাদের পারফরমেন্সের কারনে এটি নিয়ে অনেক বেশি কথা হচ্ছে। আমরা অনেক উন্নতি করেছি। তাই কাগজে-কলমে আমরা টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা একটি দল। এতে আমাদের উপর চাপ সৃষ্টি হবে কিন্তু এই চাপের মধ্যেই সেরাটা দিতে হবে। তাই আমাদের অনুশীলনে আসল ফোকাস হলো, চাপের মধ্য থেকে কিভাবে বেরিয়ে আসা যায়। 

নাসের হুসেইন : জো রুট ভালো একটি পয়েন্ট বের করেছে, কিভাবে চাপের মধ্যে পারফরমেন্স করা যায়। টুর্নামেন্টে এটি কি একটি ভিন্ন ধরনের এক চাপ? একটি খারাপ ম্যাচ এবং বাদ পড়ে যেতে পারেন। এজন্য কি তোমার ভিন্ন মানসিকতার প্রয়োজন রয়েছে?

ইয়োইন মরগান : আমার কাছে, ভিন্ন ধরনের মানসিকতার প্রয়োজন নেই। একই মানসিকতায় পরিকল্পনা করা যেতে পারে। প্রথম বছর আমরা দল হিসেবে উন্নতি করেছি। আমরা ভালো খেলার দিকে বেশি ফোকাস করছি এবং আগের চেয়ে আরও ভালো ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করছি। আমাদের খেলাটি প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছি এবং একটি বড় টুর্নামেন্ট জয় করার জন্য যথেষ্ট ভালো। আমি এখন তিন বা চারের মধ্যে খেলছি, যখন প্রতিপক্ষ ৩৫০-৩৬০ করে ফেলছে তারপরও আমরা ম্যাচের মধ্যে ছিলাম। এটি আমাদের বিশ্বাসের বাইরে ছিলো। কিন্তু এই টুর্নামেন্টে আমরা বিশ্বাস নিয়েই যাচ্ছি এবং গত ১৮ মাস ধরে এই বিশ্বাসটিই বহাল রেখেছি। 

নাসের হুসেইন : ইতোমধ্যেই আপনি (মরগান) ইংল্যান্ড অধিনায়ক হিসেবে অনেক সাফল্য অর্জন করেছেন, দলের সংস্কৃতি পরিবর্তন করে দিয়েছেন। কিন্তু আইসিসি’র কোন ইভেন্টে জিততে না পারলেও কি সফল?

ইয়োইন মরগান : না, পরে কি ঘটে সেটিই অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা অনেক পরিশ্রম করেছি, তাই আমরা উচ্চতায় যেতে পারি। আমরা দেখেছি, এই স্কোয়াডটি উচ্চতায় যেতে পারে। তাই তাদের এখন সেটিই করে দেখাতে হবে। যদি আমরা আইসিসির এ টুর্নামেন্টটি জিততে না পারি, তবে তা হবে বিশাল হতাশার।

বিডি প্রতিদিন/২৭ মে ২০১৭/এনায়েত করিম



এই পাতার আরো খবর