ঢাকা, বুধবার, ১ মে, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

পৃথিবীর ইতিহাসে ভয়ঙ্কর পাঁচ সিরিয়াল কিলার!
অনলাইন ডেস্ক
প্রতীকী ছবি

সিরিয়াল কিলাররা সাধারণত রাগ, উত্তেজনা, অর্থের প্রভাব ইত্যাদি কারণে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় সিরিয়াল কিলাররা একই নিয়মে তাদের হত্যার কাজ করে থাকে এমনটাই জানিয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই এর গবেষণা।

বিশ্বের দেশে দেশে সিরিয়াল কিলারদের অস্তিত্ব দেখতে পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে পুরুষের পাশাপাশি মেয়েদেরও দেখা যায়। তবে মেয়েদের সংখ্যা খুবই নগণ্য।

চলুন জেনে নিই পৃথিবীর ইতিহাসে ভয়ঙ্কর ৫ সিরিয়াল কিলার সম্পর্কে-

১. জিল দ্য রাই:  জিলকেই পৃথিবীতে আধুনিক সিরিয়াল কিলারদের পথিকৃৎ হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। ১৪০৪ সালে ফ্রান্সে এই কুখ্যাত সিরিয়াল কিলারের জন্ম হয়। তার পুরো নাম জিল দ্য রাই। জিল নিজ হাতে প্রায় শতাধিক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিল যাদের বেশিরভাগই ছিল বালক শিশু এবং এরা সবাই ছিল ব্লন্ড চুল ও নীলচোখের অধিকারী। 

সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে জিল নিজেও ছেলে বেলায় এদের মতোই ব্লন্ড চুল ও নীল চোখের অধিকারী ছিলেন। ধারণা করা হয় জিল তার যৌন ইচ্ছা পূরণ করতে এসব নিরীহ শিশুদের উপর পাশবিক অত্যাচার করতো এবং এরপর তাদের হত্যা করতো। হত্যার করার পর সে বেশিরভাগ শিশুকেই আগুনে পুড়িয়ে ফেলত। জিলের শিকারের প্রকৃত সংখ্যা জানা যায়নি কিন্তু ধারণা করা হয় তার শিকার সংখ্যা প্রায় ৮০ থেকে ২০০টির মতো ছিল। আবার কারও কারও মতে এর সংখ্যা ৬০০টিরও বেশী।

২. টেড বান্ডি

তাকে বলা হয় আমেরিকার সবচেয়ে কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার। ইতিহাসে স্বরণীয় এই সিরিয়াল কিলারের জন্ম ১৯৪৬ সালে। ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত অসংখ্য নিরপরাধ তরুণীকে খুন করে সে। টেড দেখতে অত্যন্ত সুদর্শন ছিল। তার ভিকটিম তরুণীদের সাথে তার পরিচয় হতো পাবলিক প্লেসগুলোতে। যে তরুণীকে সে টার্গেট করত, তার সামনে গিয়ে অসুস্থ হওয়ার ভান করত কিংবা একজন পুলিশম্যানের অভিনয় সাজাতো সে।তার গাড়িতে সবসময় শাবল থাকত। যার মাধ্যমে ভিকটিমকে মারা হত। মেরে ফেলার আগে ভিকটিমকে টেড ধর্ষণ করত। মেরে ফেলার পর তরুণীর সাথে আবার যৌন সম্পর্ক স্থাপন করত সে! পুলিশের হাতে ধরা পড়ার আগ পর্যন্ত ৩০ জনের বেশি তরণীকে খুন করে টেড। পরবর্তীতে তাকে ইলেক্ট্রিক্যাল চেয়ারে শক দিয়ে মারা হয়।

৩. জেফরি ডাহমার

আমেরিকার সিরিয়াল কিলিঙের ইতিহাসে জেফরি ডাহমারও ভয়ঙ্কর একটি নাম! তার সিরিয়াল কিলিং জীবনে অসংখ্য মানুষ খুনের স্বীকার হয়। যাদেরকে সে নিজের বাসায় নিয়ে যেত এবং নির্মমভাবে হত্যা করত। প্রায় সব ভিকটিমকেই মারার পর তাদের অঙ্গহানি করা হতো। তাদের মাথার খুলি সে সাজিয়ে রাখত! কখনোবা মৃত ভিকটিমের মাংস খেত সে! পুলিশের হাতে ধরা পড়ে সে একজন ভিকটিম পালিয়ে যেতে পারায়। তারপর জেফরি-কে ৯০০ বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়! কিন্তু জেলের ভেতর সে আত্নহত্যা করে।

  ৪. এলেকজান্ডার সলোনিক

রাশিয়ান সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার আগে থেকেই খুনোখুনিতে হাত পাকায় সে। দুই হাতে পিস্তল পরিচালনা এবং মল্লযুদ্ধে বিশেষ পারদর্শিতার জন্য তাকে রাশিয়ান সেনাবাহিনীতে নিয়োগ দেয়া হয়। সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেয়ার পর আবার সে তার পুরনো পেশায় ফিরে যায়। দুই হাতে অস্ত্র পরিচালনার দক্ষতার উপর ভিত্তি করে হলিউডে তৈরি হয় “হিটম্যান এজেন্ট-৪৭” সিনেমা সিরিজটি। রাশিয়ান সেনাবাহিনীতে কাজ করার সুবাধে “এজেন্ট-৪৭”, “সুপারকিলার”- নামগুলো নিজের করে নেয় সে।

৫. রিচার্ড কুকলিন্সকি

আমেরিকানদের কাছে “আইসম্যান” হিসেবে পরিচিত এই কুখ্যাত খুনী ২৫০ এরও বেশি মানুষকে হত্যা করে। ভিকটিমবে বরফে জমিয়ে মেরে ফেলত সে! তার এই অভিনব পদ্ধতি যাতে পুলিশের হাতে না যায় সেজন্য, মৃত দেহের আশপাশে বিভিন্ন ধরণের খুনের যন্ত্রপাতি রেখে যেত সে। এতে পুলিশও দ্বিধায় ভুগত! পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর তার নামে ৫ টি খুনের অভিযোগ আনা হয়! কারণ তার বেশিরভাগ খুনেরই কোন প্রমাণ থাকত না! নিজের ভিকটিমদের মারতে গিয়ে খুব কমই নিরাশ হতে হয়েছে তাকে!

বিডিপ্রতিদিন/ ই-জাহান



এই পাতার আরো খবর