ঈদুল আজহার ঠিক আগের দিনেও অসংখ্য মানুষ নানামুখী ভোগান্তি নিয়েই রাজধানী ছাড়ছেন। দূরপাল্লার বাসগুলোতে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়ের পাশাপাশি ভাড়া রাখা হচ্ছে স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ পর্যন্ত বেশি।
এমন অবস্থায় অনেকেই আবার বাসে জায়গা না পেয়ে পরিবার নিয়ে উঠছেন ট্রাক, পিকআপ বা প্রাইভেটকারে। বিশেষ করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে নৈরাজ্য চরমে।
শুক্রবার (৬ জুন) সরেজমিনে দেখা গেছে, রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও অনেক যাত্রী বাস পাচ্ছেন না। আর যেসব বাস মিলছে, সেগুলোর জন্য গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। অনেক পরিবহন কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত ভাড়ার তুলনায় দ্বিগুণ, কেউ কেউ আবার তিনগুণ পর্যন্ত দাবি করছেন।
যাত্রীরা অভিযোগ করছেন, ঈদ সামনে রেখে ভাড়ার লাগামহীন বাড়তি আদায় চলছে। ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ, শেরপুর, নালিতাবাড়ীসহ আশপাশের জেলার বাসগুলোতে সবচেয়ে বেশি অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। সাধারণ সময়ে ৩০০-৩৫০ টাকায় যাওয়া গেলেও এখন সেই ভাড়া ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকায় পৌঁছেছে।
ময়মনসিংহ ও হালুয়াঘাটের বাসের একাধিক চালক ও হেলপার অকপটে স্বীকার করে বলছেন, ঈদের সময় একটু বাড়তি তো নিতেই হয়।
তবে যাত্রীদের এ দুর্ভোগের মধ্যে ভাড়া নিয়ন্ত্রণে বিআরটিএ কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো কার্যকর তদারকি চোখে পড়েনি।
শেরপুরগামী ফিরোজ আলম নামে এক যাত্রী বলেন, আমরা গরিব মানুষ। বছরে একবার পরিবার নিয়ে ঈদ করতে বাড়ি ফিরি। কিন্তু তিনগুণ ভাড়া দিয়ে যেতে হচ্ছে। এটা অন্যায়।
ট্রাক-পিকআপই শেষ ভরসা:
যাত্রাপথে সিট না পাওয়া কিংবা ভাড়া মেটাতে না পেরে অনেকেই পিছু হটছেন না। বিকল্প হিসেবে তারা ভরসা রাখছেন খোলা ট্রাক, ছোট পিকআপ বা মাইক্রোবাসে। গাজীপুর, টঙ্গী, মহাখালী ও উত্তরা ঘুরে দেখা গেছে—নারী-শিশুসহ অনেকেই গাদাগাদি করে এসব বাহনে চড়ে বাড়ি ফিরছেন।
শেরপুরগামী রফিকুল ইসলাম জানান, “বাসে একেকজনের জন্য ১২০০ টাকা চায়। আগে যেখানে ৫০০ টাকায় যেতাম। তাই বাধ্য হয়ে চার হাজার টাকায় একটা পিকআপ ভাড়া করেছি, ১০ জন মিলে যাচ্ছি।”
সাব্বির আহমেদ বলেন, “ভাড়ার ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। রাস্তায় বিআরটিএ বা পুলিশের তেমন কোনো উপস্থিতিও দেখা যাচ্ছে না।”
ঈদযাত্রায় এমন অব্যবস্থাপনা ও ভাড়া নৈরাজ্যে যাত্রীরা পড়েছেন চরম বিপাকে।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম