ইরান সরকারের পক্ষ থেকে পাবলিক প্লেসে কুকুর নিয়ে হাঁটায় নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সরকার বলছে, জনস্বাস্থ্য, সামাজিক শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর আগেও ২০১৯ সালে তেহরানে একই ধরনের নির্দেশনা দিয়েছিল পুলিশ। এবার সেই নিষেধাজ্ঞা আরও বিস্তৃত করে অন্তত ১৮টি শহরে কার্যকর করা হয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিমাঞ্চলের ইলাম, মধ্য ইরানের ইসফাহান এবং দক্ষিণের কিরমান শহর উল্লেখযোগ্য।
১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর থেকেই ইরানে কুকুর পোষা ও নিয়ে চলাফেরা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। যদিও কুকুর মালিকানা নিয়ে আইনগতভাবে কোনো সরাসরি নিষেধাজ্ঞা নেই, তবুও ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কারণে বিষয়টি অনেকের কাছে স্পর্শকাতর।
ধর্মীয় নেতাদের মতে, কুকুরের লালা ‘নাপাক’ বা ধর্মীয় দৃষ্টিতে অশুচি। অনেকে একে পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবে দেখেন। এ কারণে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে অনেক সময় কুকুর পোষার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়। সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও অনেক কুকুর মালিক তেহরানসহ বিভিন্ন শহরে কুকুর নিয়ে হাঁটা অব্যাহত রেখেছেন।
তবে এবার ইলামের এক কর্মকর্তা স্থানীয় সংবাদপত্রকে বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
রাষ্ট্রীয় দৈনিক ইরান পত্রিকা জানায়, এবারের সিদ্ধান্তের মূল উদ্দেশ্য হলো জননিরাপত্তা বজায় রাখা, নাগরিকদের শান্তি নিশ্চিত করা এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানো।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ২০১৭ সালে বলেছিলেন, শিকার বা পাহারার বাইরে কুকুর পোষা নিন্দনীয়। তিনি আরও বলেন, যদি কুকুর পোষার অভ্যাস অমুসলিমদের অনুকরণ হয়, তাদের সংস্কৃতি ছড়ায় বা প্রতিবেশীদের বিরক্তির কারণ হয়— তবে তা ধর্মীয়ভাবে নিষিদ্ধ।
এর আগে ২০২১ সালে দেশটির ৭৫ জন সংসদ সদস্য কুকুর বা অন্য পোষা প্রাণী পালাকে ‘বিধ্বংসী সামাজিক সমস্যা’ বলে মন্তব্য করেন। তাদের মতে, এটি ধীরে ধীরে ইরানি ও ইসলামি জীবনধারায় পরিবর্তন আনতে পারে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল