রাশিয়ার কামচাতকা উপদ্বীপের উপকূলে বুধবার আঘাত হানা ৮.৮ মাত্রার ভূমিকম্পের পর প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে জারি করা সুনামি সতর্কতা প্রত্যাহার করা হয়েছে। সতর্কতা প্রত্যাহারের পর উপকূলীয় এলাকা ছেড়ে যাওয়া লাখো মানুষ নিজ নিজ ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন।
ভূমিকম্পের পর জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, ইকুয়েডরসহ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের এক ডজনেরও বেশি দেশে জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কায় উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়। জলোচ্ছ্বাস চার মিটার পর্যন্ত হতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। ফলে ১২১টি বন্দর কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়, হাওয়াইয়ের মাউই দ্বীপে সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়।
তবে আশঙ্কার তুলনায় বাস্তবে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা অনেক কম ছিল। ঢেউ উঠলেও তা ছিল কম উচ্চতার। ফলে জাপান, চিলি, যুক্তরাষ্ট্রসহ একে একে দেশগুলো সতর্কতা তুলে নেয়। জাপানে ২০ লাখ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হলেও পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তবে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার পথে এক নারী গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত হন।
চিলিতে ১৪ লাখ মানুষকে সরানো হলেও সেখানে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। দেশটির উত্তর উপকূলে মাত্র দুই ফুট উচ্চতার ঢেউ দেখা গেছে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে রাশিয়াতেই। সেভেরো-কুরিলস্ক শহরের বন্দর প্লাবিত হয়েছে এবং স্থানীয় মাছ প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র পানিতে তলিয়ে গেছে। শহরের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত পানি পৌঁছায় বলে জানিয়েছেন মেয়র আলেক্সান্ডার ওভস্যাননিকভ।
রুশ বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের কিছুক্ষণের মধ্যেই ক্লিউচেভস্কয় আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা বলেছে, এটি ১৯০০ সালের পর বিশ্বের ১০টি সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পের একটি। কামচাতকায় ১৯৫২ সালের পর এটিই সবচেয়ে শক্তিশালী ভূকম্পন।
পরাঘাতের আশঙ্কা এখনো রয়েছে। আগামী এক সপ্তাহে ৭ মাত্রার বেশি একটি পরাঘাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ৫৯ শতাংশ। এলাকাজুড়ে জরুরি সতর্কতা বহাল রাখা হয়েছে।
সূত্র: এএফপি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল