সাড়ে তিন বছরের বেশি সময় পর মিয়ানমারে জারি করা জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করেছে দেশটির সেনা সরকার। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) এ সিদ্ধান্ত নেয় জান্তা প্রশাসন। খবর এএফপির।
এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সামরিক সরকারের প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং লিখিত এক আদেশে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। পরে জান্তার মুখপাত্র জৌ মিন তুন এক অডিও বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘বহুদলীয় গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। সেই ধারাবাহিকতায় দেশে আর জরুরি অবস্থা বলবৎ নেই।’
গত ৮ মার্চ এক অনুষ্ঠানে জেনারেল হ্লেইং ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর অথবা ২০২৬ সালের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মুখপাত্র জৌ মিন তুনের সাম্প্রতিক বক্তব্যেও এই সময়সীমার পুনরায় উল্লেখ করা হয়েছে, যদিও নির্দিষ্ট কোনো তারিখ এখনও ঘোষণা করা হয়নি।
মিয়ানমারে সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচন হয়েছিল ২০২০ সালের নভেম্বরে। সেই নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে এবং জরুরি অবস্থা জারি করে। তখন ক্ষমতাচ্যুত হন গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী ও নোবেলজয়ী অং সান সুচি এবং তাঁর দল এনএলডির নেতৃত্বাধীন সরকার। অভ্যুত্থানের পর সুচিসহ শীর্ষ নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়, যাদের অনেকেই এখনো কারাগারে আটক রয়েছেন।
২০২৩ সালে জান্তা সরকার এনএলডির নিবন্ধন বাতিল করে, ফলে দলটি আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ হারায়।
এদিকে, জেনারেল মিন অং হ্লেইং নিজে নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তিনি সরাসরি নির্বাচনে না দাঁড়ালেও এমন একটি ক্ষমতাকেন্দ্রিক অবস্থান রক্ষা করতে চান, যাতে নির্বাচনের পরও দেশের কার্যকর নিয়ন্ত্রণ তাঁর হাতেই থাকে।
গত বুধবার রাজধানী নেপিদোতে এক অনুষ্ঠানে হ্লেইং বলেন, ‘আমরা প্রথম অধ্যায় শেষ করেছি। এখন দ্বিতীয় অধ্যায়ে প্রবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছি। সেই অধ্যায়ের প্রবেশপথই হচ্ছে নির্বাচন। আমরা ডিসেম্বরেই নির্বাচন আয়োজন করব।’
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ