গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ধর্ষণচেষ্টার ঘটনার এক সালিশ বৈঠকে বিচারপ্রার্থী নারী ও তার স্বজনদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। হামলায় নারীসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
রবিবার বিকালে উপজেলার শুয়াগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (০৫ জুন) রাতে শুয়াগ্রামের খগেন মধুর ছেলে রিপন মধু (২৫) সহ আরেক যুবক পাশের একটি বাড়িতে ঢুকে এক গৃহবধুকে (১৯) ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় ওই গৃহবধূর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে রিপন মধু ও তার সঙ্গী পালিয়ে যায়। পরের দিন সকাল বেলা ওই গৃহবধূর স্বামী বাড়িতে আসলে ঘটনাটি স্বামীকে জানান।
বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হওয়ার পর ওই গৃহবধূর স্বামী থানায় মামলা করার উদ্যোগ নেন। এ সময় অভিযুক্ত রিপন মধুর কাকা, স্থানীয় ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা অমল মধু সামাজিকভাবে বিচারের আশ্বাস দেন। এ ঘটনায় রবিবার বিকেলে শুয়াগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ, তার স্বামী ও স্বজনদের নিয়ে ইউপি সদস্য অমল মধুর শালিস বৈঠকে বসেন। শালিস বৈঠকে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে অমল মধুর ভাতিজা রিপন মধু ও যুবলীগ নেতা রাজিবুল বিশ্বাস লোকজন নিয়ে ওই গৃহবধূ ও তার স্বামী এবং স্বজনদের ওপর হামলা চালায়।
এই হামলায় কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। গুরতর আহত ওই গৃহবধূ ও তার স্বামী। এছাড়াও ওই গৃহবধূর স্বজন ওসমান শেখ (২৬), ইয়াদুল শেখ (২২), হাসিবুল শেখ (২৮), আলী শেখ (১৮) ও হাকিম আলী শেখ (২৫) আহত হন। তাদেরকে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। আহত বাকিরা বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ভূক্তভোগী ওই গৃহবধূর স্বামী বলেন, আমি একটি আলিয়া মাদ্রাসায় নৈশ প্রহরীর চাকরি করি। গত বৃহস্পতিবার রাতে আমি ডিউটিতে গেলে রিপন মধু তার এক সঙ্গীকে নিয়ে আমার ঘরের টিনের বেড়া কেটে ঘরে প্রবেশ করে। এসময় আমার স্ত্রীকে ঘরে একা পেয়ে রিপন ও তার সঙ্গী ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। আমার স্ত্রীর আর্তচিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এলে রিপন ও তার সঙ্গী পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পর আমি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিলে রিপনের কাকা ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা অমল মধু আমাকে সামাজিকভাবে বিচার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। রবিবার বিকেলে বিচার সালিশে বসলে অমল মধুর ভাতিজা রিপন ও যুবলীগ নেতা রাজিবুল বিশ্বাস দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে অভিযুক্তদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম