বাংলাদেশে সংঘবদ্ধ পাচারচক্র নিশ্চিহ্ন করতে শক্ত আইনি কাঠামোর প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ।
আজ বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের সহায়তায় উইনরক ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃক বাস্তবায়িত আশ্বাস প্রকল্পের আওতায় বিশ্ব মানব পাচার বিরোধী দিবস” উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে ২০০ জনের বেশি সরকারি কর্মকর্তা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, এনজিও, গণমাধ্যমকর্মী মানবপাচারের শিকার সারভাইভার ও তৃণমূল পর্যায়ের মানবপাচার বিরোধী সক্রিয় কর্মীরা বিশ্ব মানবপাচার বিরোধী দিবস ২০২৫-এর বৈশ্বিক প্রতিপাদ্য “সংঘবদ্ধ অপরাধ মানব পাচার; বন্ধ হোক শোষনের অনাচার” এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে আয়োজন করার জন্য একত্রিত হন।
এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক দাউদ মিয়া এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব লুৎফুন্নাহার, মানবপাচার প্রতিরোধ, দমন ও ভিকটিমের সুরক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং নাগরিক সমাজকে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
প্রাণ-আরএফএল গ্রূপের পরিচালক উজমা চৌধুরী মানব পাচারের শিকার ভিকটিমদের অর্থনৈতিকভাবে ক্ষমতায়ন ও এই বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বেসরকারি খাতের ভূমিকা তুলে ধরেন এবং নাগরিক সমাজের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এছাড়াও উদ্বোধনী সেশনে সারভাইভার লিডার ও মানবপাচার প্রতিরোধে সক্রিয় কর্মীদের বক্তব্যের মাধ্যমে মাঠপর্যায়ের বাস্তবতা উঠে আসে এবং পরবর্তীতে আমন্ত্রিত অতিথিরা ফিতা কেটে প্রদর্শনী ও স্টল উদ্বোধন করেন যেখানে সারভাইভারদের তৈরিকৃত পণ্য ও পোশাক প্রদর্শিত হয়।
বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স কহিন অশ পিনইয়ানি তার বক্তব্যে বলেন মানবপাচার প্রতিরোধ বা দমন কোন একক প্রতিষ্ঠান বা প্রকল্প কিংবা মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়। বরং এজন্য প্রয়োজন সরকারের এবং সমাজের সকল স্তরের সক্রিয় অংশগ্রহণ যা মানবধিকার, সাম্যতা ভিত্তিক সমাজ ও তথ্যভিত্তিক জবাবদিহিতার ভিত্তিতে পরিচালিত হবে।
উদ্বোধনী আলোচনা শেষে “মানবপাচার প্রতিরোধ ও বিচারিক প্রক্রিয়ায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও বিচার বিভাগের ভূমিকা” শীর্ষক একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতিনিধি, সরকারি আইনজীবী, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, সারভাইভার প্রতিনিধি এবং মানব পাচার প্রতিরোধে সক্রিয়কর্মীদের সমন্বয়ে গঠিত প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
আনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্য রাখেন দীপ্তা রক্ষিত, কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ বাংলাদেশ ও প্রকল্প পরিচালক-আশ্বাস, উইনরক ইন্টারন্যাশনাল। তিনি তার বক্তব্যে মানবপাচার প্রতিরোধে সম্মিলিত উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরার পাশাপাশি সারভাইভার অধিকার রক্ষায় ও তাদের সফল পুনঃএকত্রিকরণ নিশ্চিত করতে উইনরক ইন্টারন্যাশনাল ও সুইজারল্যান্ড যৌথ অঙ্গিকার পুনঃব্যক্ত করেন।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত