তিনবার জীবন পেয়ে ৬৮ রানের ইনিংস খেললেন পাথুম নিসাঙ্কা। শেষের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ফ্রি হিটে ছক্কা মারলেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। শঙ্কা কাটিয়ে হংকংয়ের বিপক্ষে জয় পেল শ্রীলঙ্কা।
‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ৪ উইকেটে জিতেছে চারিথ আসালাঙ্কার দল। হংকংয়ের ১৪৯ রান তারা পেরিয়ে গেছে ৭ বল বাকি থাকতে।
দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করে হংকং। ব্যাটের ভেতর ও বাইরের কানায় লেগে বাউন্ডারি পান জিশান আলি। আরেক ওপেনার আনশুমান রাথ এগোন সাবধানী ব্যাটিংয়ে। পঞ্চম ওভারে জিশানকে ফিরিয়ে ৪১ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন দুশমান্থা চামিরা। অধিনায়ক বাবর হায়াতকে দ্রুত ফেরান লেগ স্পিনার হাসারাঙ্গা।
তৃতীয় উইকেটে ৪৩ বলে ৬১ রানের জুটিতে হংকংকে টানেন রাথ ও নিজাকাত খান। ৪৬ বলে চারটি চারে ৪৮ রানের মন্থর ইনিংস খেলা রাথকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন চামিরা। ভাগ্যকে এদিন পাশে পাওয়া নিজাকাত দলকে নিয়ে যান দেড়শর কাছে। ৩৮ বলে দুই ছক্কা ও চারটি চারে ৫২ রানে অপরাজিত থাকেন এই তিনি।
টি-টোয়েন্টিতে এটি তার দ্বাদশ ফিফটি, পূর্ণ সদস্য দেশের বিপক্ষে প্রথম। এশিয়া কাপে হংকংয়ের কোনো ব্যাটসম্যানের কেবল দ্বিতীয় ফিফটি এটি। ২৯ রানে ২ উইকেট নিয়ে শ্রীলঙ্কার সফলতম বোলার চামিরা।
রান তাড়ায় শুরুতেই কুসাল মেন্ডিসকে হারায় শ্রীলঙ্কা। দুটি চার মেরে শর্ট বলে ধরা পড়েন কিপার-ব্যাটসম্যান। নিসাঙ্কাকে কিছুটা সঙ্গ দিয়ে বিদায় নেন কামিল মিশারা। ১০ ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কা করে ৬৫ রান। একাদশ ওভারে নিসাঙ্কাকে ফেরানোর সুযোগ হাতছাড়া করেন এহসান খান। সে সময় ৪০ রানে থাকা লঙ্কা ওপেনারের ফিরতি ক্যাচ নিতে পারেননি এই অফ স্পিনার।
বেঁচে গিয়ে ঝড় তোলেন নিসাঙ্কা। চতুর্দশ ওভারে ফের জীবন পান তিনি। আইজাজ খানের বলে সীমানায় তার সহজ ক্যাচ ছাড়েন নিজাকাত। বেঁচে যাওয়ার সঙ্গে চারও পান নিসাঙ্কা। পঞ্চদশ ওভারে আরও একবার জীবন পান নিসাঙ্কা। আবারও ফিরতি ক্যাচ নিতে পারেননি এহসান। চলতি এশিয়া কাপে এ নিয়ে ১১টি ক্যাচ ছাড়লেন হংকংয়ের ফিল্ডাররা।
পরের ওভারের প্রথম বলে রান আউট হয়ে ফেরেন নিসাঙ্কা। ৪৪ বলে দুই ছক্কা ও ছয় চারে তিনি করেন ৬৮ রান। ইয়াসিম মুর্তাজার দ্বিতীয় বলে এলবিডব্লিউ হয়ে যান কুসাল পেরেরা। এহসান খানের বলে চারিথ আসালাঙ্কা ক্যাচ দিলে জেগে উঠে হংকংয়ের আশা। ছক্কার চেষ্টায় কামিন্দু মেন্ডিসের বিদায়ে বিপদ আরও বাড়ে শ্রীলঙ্কার। ২ উইকেটে ১১৯ রান থেকে সাবেক চ্যাম্পিয়নদের রান হয় ৬ উইকেটে ১২৭।
চাপের সময়ে 'নো' বল করে বসেন মুর্তাজা। ফ্রি হিটে ছক্কা মেরে হাসারাঙ্গা সরিয়ে নেন চাপ। এরপর আরে পেরে উঠেনি হংকং। দাসুন শানাকাকে নিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান হাসারাঙ্গা। ৯ বলে এক ছক্কা ও দুই চারে ২০ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। তিনবার বেঁচে গিয়ে পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস খেলা নিসাঙ্কা জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
টানা দ্বিতীয় জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে চূড়ায় শ্রীলঙ্কা (১.৫৪৬)। হংকংয়ের বিপক্ষে ৯৪ রানের জয়ে ২ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে আফগানিস্তান (৪.৭০০)। ২ ম্যাচে একটি জয়ে ২ পয়েন্ট নিয়ে তিনে বাংলাদেশ (-২.১৫১)। তিন ম্যাচের তিনটিতেই হেরে শূন্য হাতে বিদায় নিল হংকং।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
হংকং: ২০ ওভারে ১৪৯/৪ (জিশান ২৩, রাথ ৪৮, বাবর ৪, নিজাকাত ৫২*, মুর্তাজা ৫, আইজাজ ৪*; থুশারা ৪-০-৩৬-০, চামিরা ৪-০-২৯-২, থিকশানা ৪-০-২২-০, হাসারাঙ্গা ৪-০-২৭-১, আসালাঙ্কা ৩-০-২২-০, শানা ১-০-৫-১)
শ্রীলঙ্কা: ১৮.৫ ওভারে ১৫৩/৬ (নিসাঙ্কা ৬৮, কুসাল মেন্ডিস ১১, মিশারা ১৯, কুসাল পেরেরা ২০, শানাকা ৬*, আসালাঙ্কা ২, কামিন্দু মেন্ডিম ৫, হাসারাঙ্গা ২০*; মুর্তাজা ৪-০-৩৭-২, শুক্লা ৩-০-৩০-১, আতিক ২.৫-১-১৮-০, এহসান ৪-০-২৫-১, কিঞ্চিত ২-০-১৫-০, আইজাজ ৩-০-২৭-১)
ফল: শ্রীলঙ্কা ৪ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: পাথুম নিসাঙ্কা
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ