প্রতি বছর ১৬ সেপ্টেম্বর মালয়েশিয়া দিবস উদযাপিত হয়, যা দেশটির জাতীয় ঐক্য, স্থিতিশীলতা ও বহুসংস্কৃতির সম্মিলনের এক গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক। ১৯৬৩ সালের এই দিনে মালয়েশিয়া ফেডারেশন গঠিত হয়, যখন মালয়, সাবাহ, সারাওয়াক এবং সিঙ্গাপুর একত্রিত হয়ে একটি নতুন জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। যদিও পরবর্তীতে ১৯৬৫ সালে সিঙ্গাপুর আলাদা হয়ে যায়, এই দিনটি মালয়েশিয়ার ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসেবেই বিবেচিত হয়।
মালয়েশিয়ার স্বাধীনতা (মেরদেকা দিবস) ১৯৫৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তির স্মরণে পালিত হয়, তবে মালয়েশিয়া দিবস মূলত একটি নতুন ফেডারেশনের জন্মদিন হিসেবে পরিচিত। ২০১০ সাল থেকে দিনটি সরকারিভাবে ছুটির ঘোষণা পায় এবং সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপন শুরু হয়। তবে সাবাহ ও সারাওয়াকের জনগণের কাছে এই দিনটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে, কারণ এটি পূর্ব মালয়েশিয়াকে জাতীয় কাঠামোয় অন্তর্ভুক্তির প্রতীক।
এ বছরের মালয়েশিয়া দিবসের থিম নির্ধারিত হয়েছে ‘মালয়েশিয়া মাদানি: রাকয়াত দিসানতুনি’, যার মূল বার্তা হল—অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের মাধ্যমে জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করা। দিবস উপলক্ষে সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়েছে দিনব্যাপী নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রদর্শনী।
উপমন্ত্রী দাতুক সেরি আর রামানান বলেন, ‘আমাদের বৈচিত্র্যই আমাদের শক্তি। নানা চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও আমাদের ঐক্য অটুট থাকবে, যতদিন জাতীয় পতাকা—জালুর জেমিলাং- আকাশে উড়বে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মালয়েশিয়া দিবস কেবল অতীতের একটি স্মারক নয়, এটি সমতা, অন্তর্ভুক্তি এবং সকল নাগরিকের জন্য ভাগ করা একটি ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি বহন করে।’
তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মালয়েশিয়া দিবসের তাৎপর্য তখনই পূর্ণতা পাবে, যখন মালয়েশিয়া এগ্রিমেন্ট ১৯৬৩ (MA63) পুরোপুরি বাস্তবায়িত হবে। তাঁদের মতে, সাবাহ ও সারাওয়াকের স্বীকৃত অধিকার, পর্যাপ্ত উন্নয়ন তহবিল ও সমান অংশীদারিত্ব নিশ্চিত না হলে, ঐক্যের বার্তা কেবল প্রতীকী রয়ে যাবে।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ