তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে স্পষ্টভাবে বলেছেন, তাদের দেশ কখনোই চীনের প্রস্তাবিত ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ গ্রহণ করবে না। তিনি জোর দিয়ে বলেন, তাইওয়ান তার স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা রক্ষায় সর্বদা দৃঢ় থাকবে এবং প্রয়োজনে আত্মরক্ষার জন্য প্রস্তুত।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) উত্তর তাইওয়ানের হুকো সামরিক ঘাঁটিতে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আগ্রাসীর দাবি মেনে সার্বভৌমত্ব বিসর্জন দিয়ে শান্তি আনা যায় না। প্রকৃত শান্তি আসে শক্তি ও আত্মরক্ষার সক্ষমতা থেকে। তিনি আরও বলেন, আমরা ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ প্রত্যাখ্যান করি,। আমরা আমাদের স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক সংবিধান চিরদিন ধরে রাখব।
সম্প্রতি এক বক্তব্যে চীন বলেছে, তারা তাইওয়ানের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বলপ্রয়োগের সম্ভাবনা ‘সম্পূর্ণ বাতিল করছে না’। এটা বেইজিংয়ের আগের তুলনায় অনেক বেশি কঠোর অবস্থান। চীন দাবি করে, তাইওয়ান তাদের ভূখণ্ডেরই অংশ।
প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তেকে বেইজিং ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ বলে অভিহিত করে। তিনি স্পষ্ট জানান— তাইওয়ানের ভবিষ্যৎ শুধুমাত্র তাইওয়ানের জনগণই নির্ধারণ করবে। তিনি বলেন, তাইওয়ান ও চীনের মধ্যে কোনো অধস্তন সম্পর্ক নেই। আমাদের সার্বভৌমত্ব কেউ লঙ্ঘন বা দখল করতে পারে না।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, জাতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় বিনিয়োগ মানে শান্তিতে বিনিয়োগ। সেই লক্ষ্যেই তার সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় মোট দেশজ উৎপাদনের ৫ শতাংশে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
হুকো ঘাঁটির এই অনুষ্ঠানে তাইওয়ানের প্রথম এম১এ২টি আব্রামস ট্যাংক ব্যাটালিয়ন আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। এই ট্যাংকগুলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠান জেনারেল ডাইনামিকস ল্যান্ড সিস্টেমস তৈরি করেছে। তাইওয়ান যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১০৮টি ট্যাংক কেনার চুক্তি করেছিল, যার মধ্যে এখন পর্যন্ত ৮০টি হাতে পেয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, দেশটি তাইওয়ানকে আত্মরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সামরিক সহায়তা দিতে বাধ্য। যদিও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে নতুন কোনো অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন এখনো দেননি।
অন্যদিকে, মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এবং চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডং জুন–এর বৈঠকে তাইওয়ান প্রসঙ্গও উঠে আসে। যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ান ঘিরে চীনের সামরিক কর্মকাণ্ড ও দক্ষিণ চীন সাগরে উত্তেজনা বৃদ্ধির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে।
প্রতিবাদে চীনা মন্ত্রী বলেন, তাইওয়ান–চীন পুনর্মিলন একটি ‘অপরিবর্তনীয় ঐতিহাসিক ধারা’, এবং যুক্তরাষ্ট্রের উচিত তাইওয়ানের স্বাধীনতার বিরোধিতা করা।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল