কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে মাদক নিয়ে বিরোধের জেরে এক তরুণকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষ লোকজনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ সময় প্রায় ৯ কোটি টাকার এলএসডি ও ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিবি।
শুক্রবার (২৭ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের মহিষকুণ্ডি গ্রামের ঠোঁটারপাড়া মাঠে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মহন আলী জামালপুর গ্রামের মৃত মদন আলীর ছেলে এবং আহত হৃদয় একই গ্রামের মৃত মসুর আলীর ছেলে।
জানা যায়, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্ত এলাকায় মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে পুরোনো বিরোধের জেরে মহন আলী (২৫) নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষ মাদক কারবারীরা। এ ঘটনায় হৃদয় (২৫) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের পর শনিবার বিজিবি সদস্যরা অভিযান চালিয়ে প্রায় ৯ কোটি টাকার মাদকসহ হত্যাকারী এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মহন ও হৃদয়ের সঙ্গে ঠোঁটারপাড়া ও জামালপুরের কিছু মাদক ব্যবসায়ীর দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। ঘটনার দিন মহন ও হৃদয় জনি নামের এক বন্ধুর অসুস্থ দাদাকে দেখতে ঠোঁটারপাড়ায় যান। সেখান থেকে ফেরার পথে ঠোঁটারপাড়া মাঠে প্রতিপক্ষরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। গুলির শব্দে জনি পালিয়ে গেলেও মহন ও হৃদয় ধরা পড়ে এবং পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়।
পরে টহলরত বিজিবির একটি দল তাদের উদ্ধার করে প্রথমে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মহন আলী মারা যান।
পরে শনিবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে বিজিবি-৪৭ ব্যাটালিয়নের একটি দল অভিযান চালিয়ে ঠোঁটারপাড়া এলাকা থেকে সোহেল হোসেন নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে ৭৫ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল ও ১৭ বোতল এলএসডিসহ আটক করে। উদ্ধারকৃত মাদকের বাজারমূল্য আনুমানিক ৮ কোটি ৮৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা। বিজিবির প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক সোহেল মহন আলী হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া একজন বলে স্বীকার করেছে।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, ‘নিহতের লাশ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। মাদক ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পুরোনো বিরোধের জের ধরে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে এক মাদক ব্যবসায়ীকে প্রায় ৮ কোটি ৮৪ লাখ ৩০ হাজার টাকার মাদকসহ আটক করে বিজিবি সদস্যরা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া বাকিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।’
এদিকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত মহনের চাচা কদম আলী আজ শনিবার দুপুরে পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ আরও পাঁচ-ছয়জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
অপরদিকে, বিপুল পরিমাণ মাদকসহ আটক সোহেলের বিরুদ্ধে হত্যা ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে এবং হত্যাকানণ্ডের ঘটনায় দুটি মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ