চাঁদরাতে বাংলাদেশিসহ মুসলিম আমেরিকানরা ব্যস্ত সময় পার করেছেন। চমৎকার আবহাওয়ার সুফল হিসেবে মুসলিম তরুণী ও তাদের মা-খালারা ঈদের আনন্দ উপভোগের জন্যে ৫ জুন (বৃহস্পতিবার) বিকাল থেকেই নিউইয়র্ক সিটির মুসলিম অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটস, জ্যামাইকা, ওজোন পার্ক, পার্কচেস্টার, ব্রুকলিনের চার্চ-ম্যাকডোনাল্ড, নিউকার্ক, ফুলটন এলাকায় ভিড় করেন। অলি-গলিতে টেবিল-টুল অথবা টেবিল-চেয়ার বসিয়ে হাত-পায়ে মেহেদি রাঙানোর উৎসবে মেতে উঠেন।
সন্ধ্যা গড়িয়ে তা অব্যাহত ছিল মধ্যরাত অবধি। ঈদুল আজহার আমেজ এভাবেই নিউইয়র্কের গণ্ডি পেরিয়ে নিউজার্সি, পেনসিলভানিয়া, ভার্জিনিয়া, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, মিশিগান, ক্যালিফোর্নিয়া, মিনেসোটা, ওহাইও, বস্টন, কানেকটিকাট, টেক্সাসে বিস্তৃত হয়।
মেহেদি রাঙানোর মধ্যেই সীমিত ছিলেন না অনেকে। একইসাথে ঈদ উপলক্ষে স্বর্ণালংকার, লেটেস্ট ডিজাইনের পোশাক, ইমিটেশনের সামগ্রিও ক্রয় করতে দেখা যায়।
চাঁদরাতের এ আমেজ অন্যসব এলাকা ছাপিয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ এশিয়ানদের রাজধানী খ্যাত নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে। নারী-পুরুষের এ উৎসবের নিরাপত্তায় নিউইয়র্কের পুলিশ বাহিনীর তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো।
জ্যাকসন হাইটসে মেহেদি রাঙাতে দু’হাত ও দু’পায়ের জন্যে সর্বোচ্চ রেট ছিল ৪০ ডলার। শুধু এক হাতের জন্যে মূল্য ছিল ১৫ ডলার করে। ফলে দুপুর থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত কেউ কেউ হাজার ডলার উপার্জনে সক্ষম হন। উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর থেকেই ঈদের আগের দিন বিকাল থেকে মধ্যরাত অবধি চাঁদরাতের আসর বসছে এবং স্কুল-কলেজগামী। তরুণীদের জন্যে এই মেহেদি রাঙানোকে বিশেষ উপার্জনের একটি অবলম্বন মনে করা হচ্ছে।
জ্যাকসন হাইটসে বাংলাদেশ স্ট্রিট, ৩৭ অ্যাভিনিউ এবং ৭৪ স্ট্রিট ছাড়াও ডাইভার্সিটি প্লাজায় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বায়তুল মোকাররম, নিউমার্কেট, গাউসিয়া মার্কেট, নীলক্ষেত, মগবাজার, রামপুরা, বসুন্ধরা সিটির মতো রাস্তার দু’পাশে কাপড়, চুড়ি, ভ্যানিটি ব্যাগ, কসমেটিক্স ইত্যাদির দোকান বসে।
ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আগের মতো এবারও পুলিশ-প্রশাসন এসব কর্ম থেকে কাউকেই বিরত করেনি। চাঁদরাতের গণ্ডি পেরোনোর পরই বাংলাদেশ স্ট্রিটে শুরু হয় ধুমধাড়াক্কা গানের আসর। ঈদের আমেজে সংগীত পরিবেশন করেন প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পীরা।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল