গাজায় চলমান ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বের ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল আজহা। শুক্রবার, ৬ জুন নিউইয়র্ক, ক্যালিফোর্নিয়া, ফ্লোরিডা, টেক্সাস, জর্জিয়া, পেনসিলভেনিয়া, নিউজার্সি, ভার্জিনিয়া, মিশিগানসহ যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সব অঙ্গরাজ্যের তিন হাজারেরও বেশি মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
ঈদের জামাত শেষে মুসল্লিরা পশু কোরবানি দেন। অনেকে স্থানীয় খামার থেকে গরু ও ছাগল সংগ্রহ করে নিজেরা কোরবানি দিয়েছেন। আবার অনেকে সুপার মার্কেটের মাধ্যমে কোরবানি সম্পন্ন করেন। কমিউনিটি সূত্রে জানা গেছে, এ বছর প্রায় ৫০ হাজার প্রবাসী এই প্রক্রিয়ায় কোরবানি দিয়েছেন।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের মসজিদগুলোয় ঈদের জামাতে অংশ নেওয়া মুসল্লিদের অনেকেই গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধে মুসলিম বিশ্বের জোরালো ভূমিকার আহ্বান জানান। খুৎবায় ইমামগণ গাজায় নিহতদের জন্য দোয়া করেন এবং মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
নিউইয়র্কের টমাস এডিসন হাই স্কুল মাঠে আয়োজিত বৃহৎ জামাতে অংশ নিয়ে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মেয়র প্রার্থী যোহরান মামদানি বলেন, “ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হয়ে আমরা যেন ন্যায়ের পক্ষে রুখে দাঁড়াই, প্রশাসনিক বৈষম্য দূর করতে ও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করি।”
এ জামাতে নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের স্পিকারসহ আরও কয়েকজন কাউন্সিলম্যানও অংশ নেন এবং সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান। নামাজ পরিচালনা করেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ইমাম শামসী আলী।
কুইন্স, ব্রঙ্কস ও ব্রুকলিনের বিভিন্ন মসজিদ যেমন আল আমান মসজিদ, বায়তুল জান্নাহ, বাংলাদেশ মুসলিম সেন্টার, পার্কচেস্টার জামে মসজিদেও বিপুলসংখ্যক প্রবাসী মুসল্লি জামাতে অংশ নেন।
নিউজার্সির আটলান্টিক সিটিতে আল হেরা মসজিদে অনুষ্ঠিত হয় ঈদের দুটি জামাত। প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্যোগে পরিচালিত এই মসজিদে খতিব আজিম উদ্দিন ইমামতি করেন। এছাড়া ইসলামিক সেন্টার অব আটলান্টিক সিটি ও মসজিদ আল তাকওয়ায়ও বিপুলসংখ্যক মুসল্লি অংশ নেন। তিনটি জামাতেই নারীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা ছিল, ফলে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি নারীও ঈদের নামাজ আদায় করেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শাসনামলের অভিবাসন নীতির ধারা এবং যুদ্ধজনিত বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চাপে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী মুসলিমরা কিছুটা হতাশা নিয়ে ঈদ উদযাপন করেছেন। খুচরা ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশি গ্রোসারি দোকান মালিকরা জানান, এ বছর বিক্রি গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম হয়েছে।
তবে এবারের ঈদে নতুন প্রজন্মের ব্যাপক অংশগ্রহণ প্রবাসীদের মাঝে আশার সঞ্চার করেছে বলে জানিয়েছেন কমিউনিটি নেতারা।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল