সাম্প্রতিক সময়ে সাগর উত্তাল হওয়ায় তীব্র ভাঙনে বিলীন হচ্ছে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের ঝাউবাগান। বিশেষ করে গেল কয়েক দিনে টানা বৃষ্টিপাত, লঘুচাপ ও ভরা পূর্ণিমার জোয়ার অব্যাহত থাকায় বেড়েছে ভাঙনের তীব্রতা। এতে হুমকির মুখে পড়েছে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, বালিয়াড়িতে লাগোয়া ছোট-বড় স্থাপনা। দ্রুত টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা ও সচেতন মহল।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সৈকতের ডায়াবেটিক পয়েন্ট, কবিতা চত্বর, শৈবাল পয়েন্ট, লাবণী পয়েন্টসহ কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, বর্ষাকাল এলে প্রতি বছরই ছোট-বড় ভাঙন দেখা দেয়। তবে এবারের ভাঙন বেশি তীব্র। টানা বৃষ্টিপাত, পূর্ণিমার জোয়ার ও লঘুচাপের কারণে কক্সবাজার সৈকতে সাগরের পানির ঢেউয়ের তীব্রতা বেড়েছে কয়েকগুণ। যা সজোরে আঘাত করছে জিও ব্যাগে। এসব জিও ব্যাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সমুদ্রের পানি ঝাউবাগানে পড়ছে। ফলে মাটি নরম হওয়ায় নুইয়ে ভেঙে যাচ্ছে ঝাউগাছগুলো। এ কারণে হুমকির মুখে পড়েছে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও বালিয়াড়িতে লাগোয়া ছোট-বড় স্থাপনা। দ্রুত সময়ের মধ্যে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা না গেলে ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ সরওয়ার আলম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সাগর উত্তাল। যার কারণে জোয়ারের পানির ধাক্কায় নাজিরার টেক, সৈকতের ডায়াবেটিক পয়েন্ট, কবিতা চত্বর, শৈবাল পয়েন্ট, লাবণী পয়েন্টসহ কয়েক এলাকায় ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সম্প্রতি ১৫০ থেকে ২০০ বড় চারা এবং ১ হাজার থেকে ৪ হাজার ছোট চারা উপড়ে পড়ে গেছে। বন কর্মকর্তা সরওয়ার আলম বলেন, গাইড ওয়াল ও টেকসই বনায়ন করলে ভাঙন রোধ হবে। এদিকে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মিথুন ওয়াদ্দাদার জানান, তীর ভাঙন প্রতিরোধে ৬ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে শিগগিরই অত্যাধুনিক ফ্লাড ওয়াল ও ব্লক নির্মাণ করা হবে। এ কাজ সম্পন্ন হলে যেমন রক্ষা পাবে ঝাউবাগান তেমনি বেড়াতে আসা পর্যটকরাও ঘুরাফেরা করতে পারবেন স্বাচ্ছন্দ্যে। উল্লেখ্য, কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত রক্ষায় শহর থেকে টেকনাফ পর্যন্ত দৃষ্টিনন্দন ঝাউবন গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যার অনেকটাই এখন নষ্ট হয়ে গেছে।