রংপুরের কাউনিয় উপজেলায় একটি স্টেপি ঈগল পাখি উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় কাউনিয়ার বরুয়া হাট হতে এটি উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয়দের মাধ্যমে তথ্য পেয়ে রংপুর বন বিভাগের লোকজন এই পাখি উদ্ধার করে। এটি বিপদাপন্ন পরিযায়ী পাখির তালিকায় রয়েছে। এর একদিন আগে পীরগাছা উপজেলায় হিমালিয়ান গৃধিনী প্রজাতির একটি শকুন উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রতি বছর শীত মৌসুমে শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে এবং খাবারের খোঁজে সুদুর সাইরেরিয়া থেকে বিভিন্ন প্রজাতির পরিয়ায়ী পাখি তিস্তা-ব্রহ্মপুত্রসহ বিভিন্ন নদীতে আসে। শীতকালে তিস্তায় কমপক্ষে ৫০ থেকে ৫৫ প্রজাতির পরিযায়ী পাখির দেখা পাওয়া যায়। এদের মধ্যে কোন কোন প্রজাতির পাথি দুর্বল অথবা অসুস্থ হয়ে পড়ে। ওই অবস্থায় বনবিভাগ অথবা কোন স্বেচ্ছাসেবীর দৃষ্টি পড়লে পাখি উদ্ধার করে সুস্থতার ব্যবস্থা করা হয়।
স্টেপি ঈগলকে একটি অদ্ভূত প্রজাতির পাখি বলা হয়। শকুনের মতো খাদ্যাভাসের কারণে গবাদি পশুর মৃতদেহ থেকে ডাইক্লোফেনাকের সংক্রমণ হয় স্টেপি ঈগলের। দলবদ্ধভাবে থাকতে অভ্যস্ত পাখিটি। সারা গায়ে গাঢ় খয়েরি রংয়ের পালক থাকলেও ওদের লেজের দিকটা একেবারে কালো। পায়ের হলদে রং তাদের আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। শীত বাড়তে শুরু করলে এরা মূলত উড়ে আসে রুমানিয়া, দক্ষিণ রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও মঙ্গোলিয়া থেকে। এসময় তাদের গন্তব্য হয় এশিয়ার বিভিন্ন দেশে। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তাসহ বিভিন্ন নদী এলাকায় কদাচিত এদের দেখা পাওয়া যায়। এটি প্রজনন স্থলে কাঠবিড়ালি অন্যান্য ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী শিকার করে। স্টেপি ঈগলকে টেনি ঈগলের সাথেও বিবেচনা করা হয়। এই ঈগল প্রাথমিকভাবে মাটিতে বাসা বাঁধে। সাধারণত এক থেকে তিনটি ডিম পাড়ে।
রংপুর বন বিভাগের রেঞ্জ অফিসার মোশাররফ হোসেন বলেন, পৃথিবীতে স্টেপি ঈগলের সংখ্যা দ্রুত হৃাস পাচ্ছে। এটি বিপদাপন্ন পরিযায়ী পাখি হিসেবে আমাদের এখানে এসেছে। এই পাখিটির যত্ন নেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতে পীরগাছা উপজেলার অন্নদানগর ইউনিয়নের পাশ থেকে একটি হিমালিয়ান গৃধিনী শকুন উদ্ধার করে ওয়াইল্ডলাইফ অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশের সদস্যরা। পরবর্তীতে শকুনটির চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশের একমাত্র শকুন পরিচর্যা কেন্দ্র দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার সিংড়া ফরেস্টে নিয়ে যান সংগঠনটির সদস্যরা।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত