টানা বর্ষণ ও মুহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফেনী জেলায় বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকেল পর্যন্ত মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ১৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জেলার তিনটি উপজেলায় বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত ছয়টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এসব ভাঙনের ফলে মুহুরী নদীর পানি আশপাশের গ্রামগুলোতে ঢুকে পড়েছে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যাদুর্গতদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফুলগাজী উপজেলায় ৯৯টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু রাখা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ৩২টি মাধ্যমিক ও ৬৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। পরশুরাম উপজেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে আরও ৩২টি আশ্রয়কেন্দ্র।
ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছে। ফুলগাজীতে ২টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে ৩৬টি পরিবার, মোট ৮৫ জন। পরশুরামে ২টি কেন্দ্রে রয়েছে ৫টি পরিবার (২০ জন) এবং ফেনী সদর উপজেলার একটি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে ৭টি পরিবার (২৮ জন)।
আবহাওয়াবিদ এম. খো. হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, ফেনীতে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ৪৪০ মিলিমিটার বর্ষণ হয়েছে, যেখানে ৮৯ মিলিমিটার বেশি বৃষ্টি হলে অতিরিক্ত ভারী বর্ষণ হিসেবে ধরা হয়। এছাড়া দেশের অন্যান্য স্থানে মাঝারি থেকে অতিভারী বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম বিভাগের ফেনী, মুহুরী, হালদা, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানির স্তর দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে গোমতী নদীর পানি আপাতত স্থিতিশীল আছে।
তিনি আরও জানান, আগামী একদিনে নদীগুলোর পানি আরও বাড়তে পারে এবং দুই দিনের মধ্যে স্থিতিশীল হতে পারে। বুধবার (৯ জুলাই) নাগাদ মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার উপরে থাকলে জেলার নিম্নাঞ্চল আরও প্লাবিত হতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।
জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে এবং বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল