চট্টগ্রামের একমাত্র প্রাকৃতিক বিনোদন কেন্দ্র পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত। তবে সেটি মূল শহর থেকে অনেক দূরে। তা ছাড়া, নগরের প্রাণকেন্দ্রে তিনটি পার্ক থাকলেও সেগুলো বন্ধ। ফলে নাগরিক জীবনে এতটুকু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার ফুরসত নেই। তবে এবার চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) কর্ণফুলী নদীর তীরে নির্মাণ করবে ‘কর্ণফুলী রিভারভিউ পার্ক’। কর্ণফুলী নদীর তীরঘেঁষে চাক্তাই থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত আউটার রিং রোড প্রকল্পের অংশে কর্ণফুলী রিভারভিউ পার্কটি করা হবে। এটি হবে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতের আদলে একটি পরিকল্পিত নতুন বিনোদন কেন্দ্র।
সিডিএ সূত্রে জানা যায়, ‘কর্ণফুলী নদীর তীরঘেঁষে নগরীর চাক্তাই থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত আউটার রিং রোড’ শীর্ষক প্রকল্পের অধীন ‘কর্ণফুলী রিভারভিউ পার্ক’ পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। চাক্তাই-কালুরঘাটের প্রায় ৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে নদীতীরে বাঁধ কাম চার লেন সড়কে গড়ে তোলা হচ্ছে নতুন বিনোদন কেন্দ্র। কর্ণফুলী নদীর তীরঘেঁষে প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে থাকবে ওয়াকওয়ে, সাইকেল লেন, বেঞ্চ, গ্যালারি, কিড জোন ও ফুটওভার ব্রিজ। স্লুইস গেটের পাশেই রাস্তার ঢালে দ্বিতল কিছু স্থাপনা নির্মাণ করা হবে। ছোট আয়তনের এই স্থাপনাগুলোর নিচে থাকবে টয়লেট ও ওপরের অংশে থাকবে ফুড জোন। ওপরের অংশে বসে দর্শনার্থীরা নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।
গ্যালারির কিছুদূর পরপর ময়লার বিন থাকবে। থাকবে পার্কিং সুবিধা। এর মাধ্যমে নগরের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তের এলাকার বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য নতুন একটি বিনোদন কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে। সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী হাসান বিন শামস বলেন, নগরবাসীর বিনোদনের জন্য খোলা জায়গার বড় অভাব। এখন চাক্তাই থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত আউটার রিং রোড প্রকল্পের একটা নয়নাভিরাম ভিউ তৈরি হয়েছে। সেখানে এখনই প্রতিদিন বিকালে দর্শনার্থীর ভিড় দেখা যায়। তাই এখানে ‘কর্ণফুলী রিভারভিউ পার্ক’ তৈরির পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। পার্কটির জন্য নকশা তৈরিসহ প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে পুরো বাকলিয়া এলাকার চিত্র বদলে যাবে। এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার মানও উন্নত হবে।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নেওয়া ‘কালুরঘাট-চাক্তাই সড়ক ও বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প’
২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল একনেকে অনুমোদন পায়। ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এতে ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ৩১০ কোটি টাকা। পরে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ৭৭৯ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেকট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড।