রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসিন্দাদের জন্য উদ্বোধন করা হয়েছে ‘বসুন্ধরা কমিউনিটি পার্ক’।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় বসুন্ধরা আবাসিকের এন ব্লকে পার্কটির উদ্বােধন করা হয়। এসময় বসুন্ধরা গ্রুপের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাসহ আবাসিকের বাসিন্দারা উপস্থিত ছিলেন।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পার্কটি বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় যারা বসবাস করেন, যারা বসুন্ধরায় প্লট-ফ্ল্যাট-এপার্টমেন্ট কিনেছেন এবং যারা ভাড়া থাকেন সবার জন্য উন্মুক্ত আছে। তবে তাদেরকে অবশ্যই বসুন্ধরা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সদস্য হতে হবে। ভালোভাবে পরিচালনার জন্য এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
দেখা যায়, পার্কের মাঝ দিয়ে বিস্তৃত একটি লেক। লেকটির বিস্তার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। লেকের চারপাশ ঘিরে গড়ে তোলা হয়েছে নান্দনিক জগিং ট্র্যাক ও সাইক্লিং লেন। পাশাপাশি শিশুদের জন্য রয়েছে নিরাপদ ও আনন্দদায়ক প্লে জোন। আর স্বাস্থ্য সচেতনদের জন্য স্থাপন করা হয়েছে শরীরচর্চার বিভিন্ন আধুনিক সরঞ্জাম।
বসুন্ধরা গ্রুপের ডিএমডি ও হেড অব দ্য ডিপার্টমেন্ট (সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং) বিদ্যুৎ কুমার ভৌমিক বলেন, ‘বসুন্ধরা আবাসিক এলাকাকে আমরা মেগাসিটি হিসেবে ঘোষণা দিয়েছি। তার একটি অন্যতম উপকরণ হচ্ছে পার্ক। অনেক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েও চেয়ারম্যান মহোদয়ের নির্দেশনায় আমরা বসুন্ধরা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সদস্যদের জন্য খুলে দিয়েছি। মোটকথা, বসুন্ধরায় যারা বসবাস করেন সবার জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। এইটা হচ্ছে একটা পার্ট।
এখানে যে সুবিধাগুলো আছে, এসব সুবিধা দিয়ে এন ব্লকে বসুন্ধরা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের পেছনে পূর্ব এবং দক্ষিণ কোণে প্রায় ১০০ বিঘার উপরে বসুন্ধরার বাসিন্দাদের জন্য একটি গ্রিন পার্কের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘চেয়ারম্যান মহাদয়ের বসুন্ধরা স্মার্ট সিটি নিয়ে কিছু মেগা পরিকল্পনা আছে। খুব সম্ভবত আগামী বছরের প্রথম দিকে এন ব্লকে প্রায় ৫০ বিঘার ওপরে বসুন্ধরা এন্টারটেইনমেন্ট ওয়ার্ল্ড নামে আরেকটি পার্ক ওপেন করা হবে। এখানে দুটো জোন থাকবে। একটি কিডস্ জোন, আরেকটি জেনারেল জোন। কিডস্ জোনটা আগামী বছরের মার্চ অথবা এপ্রিলে ওপেন করতে পারব। আর জেনারেল জোন একই বছরের শেষের দিকে ওপেন করা হবে। এছাড়া ৩০০ ফিটের পাশে বসুন্ধরা এন্টারনেইনমেন্ট ওয়ার্ল্ড-টু নামে আরেকটি পার্ক হবে। এটিও সামনের বছর চালু করা হবে। এই পার্কের পাশেই ৫২ থেকে ৫৩ বিঘার ওপরে বসুন্ধরা একোয়া ওয়ার্ল্ড নামে আরেকটি পার্ক আগামী বছর করা হবে।’
জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ও বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা ইমদাদুল হক মিলন বলেন, ‘কয়েকদিন আগে বসুন্ধরায় থাকা আমার এক বন্ধু বললেন এখানে হাঁটার জায়গা নেই। আমরা বিকালের দিকে হাঁটতে চাই, বাচ্চাদের নিয়ে বেড়াতে যেতে চাই, কেউ কেউ হাঁটতে যেতে চাই। তখন আমি বললাম, না, বসুন্ধরায় তো অনেক হাঁটার জায়গা আছে। সে বলল, নির্দিষ্ট একটা হলে ভালো হয়। তো আমি দেখলাম যে চেয়ারম্যান সাহেবকে সে কথা বলার আগেই আজ পার্কের উদ্বোধন হলো। এখানে হাঁটার ব্যবস্থাতো আছেই, চা কফি খাওয়ার ব্যবস্থা আছে এবং শিশুদের জন্য সাইকেল চালানো, বেড়ানো এবং আনন্দ করার মতো পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে এমন একটি পার্ক বসুন্ধরার জন্য জরুরি ছিল।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরে কোনো পার্ক নেই। মাঠগুলো উধাও হয়ে গেছে। হাঁটার জায়গা নেই। সেই তুলনায় বসুন্ধরা এতো সুপকিল্পতভাবে করা অনেকে চিন্তাও করতে পারে না। আরামে বসবাস আর জীবনযাপনের জন্য এর চেয়ে ভালো জায়গা আর হতে পারে না। আমার ধারণা, বসুন্ধরার ভেতরে আরো দু-চারটে পার্ক হবে।’
বসুন্ধরা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মোক্তার হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার আমরা যারা বাসিন্দা তাদের জন্য আজকে আনন্দের দিন। উন্নয়নের জন্য নগর জীবনকে আরো সমৃদ্ধ করার জন্য আমাদের যেমন আবাসনের দরকার। তেমনি সুস্থ্য মানসিক চর্চার জন্য সুন্দর পার্ক ও জলাশয় দরকার। যেটা আমরা বসুন্ধরা কমিউনিটি পার্কের মধ্যে দেখতে পাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘এখানে বাচ্চাদের জন্য খেলাধুলার ব্যবস্থা আছে। জিমের ব্যবস্থা আছে। বয়স্কদের জন্য হাঁটাচলা, সাইকিলিং ব্যবস্থা আছে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ব্র্যান্ড হচ্ছে নিরাপত্তা, এই পার্কটিও নিরাপদ থাকবে আমরা এটাই আশা করি। বাসিন্দাদের জন্য সুস্থ্য বিনোদনের জন্য পার্কটি গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বসুন্ধরায় নাগরিক সব সুবিধা থাকার কারণে বাসিন্দারা স্বাচ্ছন্দে বসবাস করছেন। এই জন্য হাউজিং কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা।’