গত চারদিন ধরে টানা বৃষ্টিতে বরিশাল নগরীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সড়কে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। সড়কগুলোতে হাঁটুপানি জমে যাওয়ায় অফিস আদালত, স্কুল কলেজে যাওয়া ছাড়াও জরুরি কাজের জন্য বের হওয়া নগরবাসী ভোগান্তিতে পড়ছেন।
নগরবাসীর অভিযোগ বর্ষা মৌসুমে ড্রেন নির্মাণ ও সংস্কারসহ অপরিকল্পিত উন্নয়নের কারণে পানি নামতে পারছে না। এ নিয়ে নগরবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বৃষ্টির প্রভাবে নগরীর মেজর এম এ জলিল সড়কের বটতলা থেকে চৌমাথা পর্যন্ত পুরো সড়কটিতে হাঁটুপানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া জীবনানন্দ দাশ সড়কের সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের এলাকা, অক্সফোর্ড মিশন রোড, মুন্সির গ্যারেজ এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এছাড়াও বরিশাল নগরীর পলাশপুর, ভাটিখানা, রসুলপুর, মোহাম্মদপুর, কাউনিয়া ও আলেকান্দার কিছু অংশ, ধান গবেষণা রোড, বিএম স্কুল রোড, আমানতগঞ্জ, করিম কুটির, মুনসুর কোয়ার্টার, ব্রাউন কম্পাউন্ড, শ্রীনাথ চ্যাটার্জি লেন, রূপাতলী হাউজিংসহ নিচু সড়কে পানি উঠেছে। পানিবন্দি হয়ে চরম দুর্ভোগে সময় কাটাচ্ছে এসব নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা। তবে অতীতের মত সদর রোড, আগরপুর রোড, প্যারারা রোডসহ জনগুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু সড়কে জলাবদ্ধতা দেখা যায়নি। এছাড়া নিম্নাঞ্চলেও অতীতের তুলনায় কিছুটা কম জলাবদ্ধতা দেখা গেছে।
নগরীর শীতলাখোলা এলাকার বাসিন্দা মিঠু বলেন, শুস্ক মৌসুমে ড্রেন ও রাস্তার কাজ করবে না। বর্ষা এলেই শুরু হয় অপরিকল্পিত উন্নয়ন কাজ করে। এতে ভোগান্তিতে পড়ি আমরা সাধারণ মানুষ।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের বরিশাল বিভাগীয় সমন্বয়কারী মো. রফিকুল আলম বলেন, পরিকল্পিতভাবে ড্রেন নির্মাণ করা ছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসন সম্ভব নয়। কারণ বরিশাল নগরীর সকল ড্রেন সংযোগ খালের লেয়ারের চেয়ে নিচে। নদীতে পানি ভরা থাকলে ড্রেন দিয়ে পানি নামতে পারে না। বর্তমানে নদী ভরা। তাই ড্রেন দিয়ে পানি নামতে না পারায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
বরিশাল আবহাওয়া অফিস জানিয়েছেন, এ মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়। মঙ্গলবার বিকেল তিনটা থেকে বুধবার বিকেল ৩ টা পর্যন্ত বরিশালে ১৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা ইউসুফ আলী বলেন, প্রতিনিয়তই শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা সক্রিয় রাখতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হচ্ছে। বর্তমানে সাময়িক জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে কারণ শহরের চেয়ে কীর্তনখোলা নদীর পানির উচ্চতা বেড়েছে। ড্রেন থেকে পানি নদীতে নামতে পারছে না উল্টো নদী থেকে ড্রেন হয়ে পানি শহরে ঢুকছে। বর্তমানে পাঁচটি টিমে ১০০ কর্মী খালগুলো পরিষ্কার করতে অধিক গুরুত্ব দিচ্ছি। আমাদের প্রচেষ্টা দ্রুত সময়ে ভোগান্তি লাঘব করা।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল