সামান্য বৃষ্টি হলেই বেহাল হয়ে পড়ে নারায়ণগঞ্জের আদমজী-চাষাঢ়া সড়ক। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে ১২ কিলোমিটারের এ সড়কের বেশিরভাগ স্থানেই ইট-খোয়া-পাথর উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এ সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী যানবাহন ও পথচারীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। স্থানীয়রা জানায়, আদমজী-চাষাঢ়া সড়ক সিদ্ধিরগঞ্জবাসীর নারায়ণগঞ্জ শহরের যাতায়াত করার অন্যতম প্রধান পথ। পাশাপাশি ডিপিডিসির কার্যালয়, সিদ্ধিরগঞ্জ সাইলো, সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন, আদমজী ইপিজেড, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা, র্যাব-১১ এর সদর দপ্তর, সিদ্ধিরগঞ্জ টেলিফোন অফিস, পদ্মা ও মেঘনা ডিপো, জেলা প্রশাসকের বাংলো, ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালসহ সড়কের দুই পাশে রয়েছে অসংখ্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। রয়েছে অসংখ্য গার্মেন্ট কারখানা।
সরেজমিন দেখা যায়, সড়কের বেহাল দশার কারণে যানবাহনগুলোকে ছোট-বড় গর্ত এড়িয়ে চলতে হচ্ছে এঁকেবেঁকে। দুর্ঘটনার শঙ্কা নিয়েই যাত্রীদের এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। অনেক সময় অনেকে রিকশা থেকে পড়ে গিয়ে আহত হচ্ছেন। বিশেষ করে সড়কটির সিদ্ধিরগঞ্জ পুল, আদমজী ইপিজেড, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা, আইটি স্কুল মোড়, হাজীগঞ্জ, খানপুর, চাষাঢ়া এলাকার অবস্থা খুবই খারাপ। হাজীগঞ্জ দুর্গের সামনে সৃষ্ট গর্ত দূর থেকে দেখলে ছোট পুকুর মনে হয়। সড়কের এই অংশটুকু পার হতে ছোট ছোট যানবাহন থেকে শুরু করে বড় যানবাহনগুলোকেও অনেক সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে। এতে যানবাহনের ধীরগতির কারণে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। অটোরিকশা চালক মাসুম আহমেদ বলেন, সড়কের এ অবস্থার কারণে বড় যানবাহনগুলো কোনোরকম চলাচল করতে পারলেও ছোট যানবাহনে চলাচল করা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। অধিকাংশ সময় অটোরিকশা হেলে পড়ে। অনেক সময় যাত্রী পড়ে আহত হন। কলেজ শিক্ষার্থী নাজমুল হোসেন বলেন, সড়কটির অধিকাংশ স্থানেই কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের জন্য এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করাটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু বিকল্প রাস্তায় অনেক ঘুরতে হয়। তাই এই রাস্তা দিয়ে না এসেও পারা যায় না। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অহিদুল ইসলাম ছক্কু বলেন, বৃষ্টি কমে গেলেই সংস্কার কাজ শুরু হবে। কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেলে আশা করি আর কোনো ভোগান্তি থাকবে না। সংশ্লিষ্টরা জানান, সড়কটির সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড় থেকে পাঠানটুলী এলাকা পর্যন্ত অংশ নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) এর অধীনে। পাঠানটুলী থেকে নারায়ণগঞ্জ সদরের চাষাঢ়া পর্যন্ত অংশ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের অধীনে। নাসিক উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাজেট হয়ে গেলেই কাজ শুরু হবে। আমরা আইটি স্কুলের মোড় থেকে চাষাঢ়া পর্যন্ত সড়ক সংস্কার করে দিব। নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সহজ) এর নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস বলেন, খুব শিগগিরই শিমরাইল থেকে আদমজী এলাকা পর্যন্ত সড়ক সংস্কার করা হবে। আমাদের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এখন শুধু বাজেটের অপেক্ষায় রয়েছি। আপাতত আদমজী এলাকায় সৃষ্ট বড় বড় খানাখন্দ সাময়িক সময়ের জন্য সংস্কার করে দিচ্ছি।