কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা ও নির্যাতনের নানা ঘটনার সত্য উদ্ঘাটনে রবিবার ‘গণতদন্ত কমিশন’ গঠন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। শনিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে এ কথা জানান তিনি।
পোস্টে হাসনাত আব্দুল্লাহ লেখেন, ‘গত ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগের পোষ্য গুন্ডা বাহিনী ছাত্রলীগ দেশের শিক্ষাঙ্গণগুলোতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। ছাত্রলীগ বিরোধীমতের শিক্ষার্থীদের ওপর নগ্ন হামলা, নির্যাতন ও নিপীড়ন চালিয়েছে। এমনকি ছাত্রদল, ছাত্রশিবির কিংবা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগ এনে অনেক সময় শিক্ষার্থীদের উপরও অমানবিক নির্যাতন করেছে তারা। ’
তিনি আরও লিখেন, ‘জুলাই বিপ্লবের পুরোটা সময় দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রলীগ ধারাবাহিকভাবে হামলা চালিয়েছে এবং আন্দোলনকারীদের বিভিন্নভাবে বাধা দিয়েছে।’
১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে রক্তাক্ত করেছে ছাত্রলীগ- অভিযোগ তুলে ছাত্র আন্দোলনের এই সমন্বয়ক লেখেন, ‘নারী শিক্ষার্থীরাও ছাত্রলীগের নৃশংসতা থেকে এই দিন রেহাই পায়নি। ঢাকা মেডিকেলকে মনে হচ্ছিল কোনো যুদ্ধের আহত ক্যাম্প। এই নরপশুরা সেদিন ঢাকা মেডিকেলের ভেতর চিকিৎসাধীন অবস্থায়ও হামলার নির্মম নজির স্থাপন করেছিল।’
তিনি আরও লেখেন, ‘জুলাই বিপ্লবে ক্যাম্পাসগুলোতে হামলাকারী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, হল প্রশাসন এবং শিক্ষার্থীদের নিয়ে রবিবার গণতদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। জুলাই বিপ্লবের আগেও গত ১৬ বছর ধরে ছাত্রলীগের যারা নানা সময়ে নৈরাজ্য, হামলা, নির্যাতন-নিপীড়নে যুক্ত ছিল, বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসনকে তাদের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করতে হবে।’
‘গণতদন্ত কমিটি গঠন করে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উদ্যোগ নিয়ে ছাত্রলীগের হামলাকারী ও নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবে। এটাই জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার্থীদের অন্যতম প্রধান দাবি। এই দাবিতে কালক্ষেপণের সুযোগ নেই। কালক্ষেপণ করে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের পুনর্বাসনের সুযোগ করে দিলে শিক্ষার্থীদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জবাবদিহি করতে হবে’ বলে হুঁশিয়ার করেন এই ছাত্রনেতা।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল