সম্পূরক বৃত্তি, জকসু নীতিমালা ও সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে ‘ব্রেক দ্য সাইলেন্স’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত ছাত্রনেতারা। কর্মসূচির অংশ হিসেবে ওইদিন প্রশাসনিক ভবনের সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে দুই দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন ছাত্রনেতারা। এ সময় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আতিকুর রহমান তানজিল বলেন, গত দু’দিন ধরে আমরা দুই দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি, কিন্তু প্রশাসনের কেউ এখনো এসে একবার খোঁজ-খবর নেয়নি। আগামী রবিবারের মধ্যে যদি নীতিমালা পাস না করে আমরা কঠোরতম কঠোর আন্দোলন করব।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ জবি শাখার আহ্বায়ক ফয়সাল মুরাদ বলেন, দীর্ঘ ১৬২ বছর ধরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদযাত্রা। কিন্তু ঢাকার প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থান করা সত্ত্বেও আমরা সকল সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছি। এ প্রশাসন আমাদের সাথে প্রতারণা করে আসছে শুরু থেকেই। আমরা সুস্পষ্ট করে জানিয়ে দিতে চাই, ‘আগামী রবিবারে যদি বিশেষ সিন্ডিকেট ডেকে জকসু নীতিমালা পাস না করা হয় তাহলে ঢাবি সিন্ডিকেট সহ পুরো প্রশাসনের দড়ি ধরে টান দেব।’
জবি শাখা শিবির সেক্রেটারি আব্দুল আলিম আরিফ প্রশাসনকে দোষারোপ করে বলেন, আমরা দুর্বল প্রশাসনের কারণে বঞ্চনার শিকার হয়ে আসছি। আমরা ছাত্রদের অধিকার নিয়ে লংমার্চ টু যমুনা থেকে সম্পূরক বাজেট পাস করে নিয়ে আসার পরেও কেন এতদিনে এটি চালু হয়নি। আমরা একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ চাই যেখানে ছাত্ররা লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি বাদ দিয়ে গণতান্ত্রিক চর্চা করবে। আমরা প্রশাসনের কাছে জবাব চাই, ‘কেন এতদিনেও জকসু নীতিমালা চূড়ান্ত হয়নি?’ আমরা বিগত এক বছরে এ প্রশাসনের দৃশ্যমান কোনো কাজ বা অগ্রগতি দেখি নাই। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের বিষয়ে সোচ্চার হতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান।
আপ বাংলাদেশ জবি শাখার আহ্বায়ক মাসুদ রানা বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে সম্পূরক বৃত্তি ও জকসুর দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি দুদিন ধরে। আমরা সুস্পষ্ট রোডম্যাপ চাই কবে থেকে আমাদের সম্পূরক বৃত্তি ও জকসু আইন পাস হবে। নতুবা আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলব।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি একেএম রাকিব বলেন, আমাদের কোনো হল নেই বেশিরভাগ শিক্ষার্থী মেসে থাকে। আমরা গত কয়েকমাস ধরে সম্পূরক বৃত্তির বিষয়ে প্রশাসনকে বলে আসলেও তারা কোনো সুস্পষ্ট কিছুই জানায়নি। ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে তারা গড়িমসি করে আসছে। গত দুই দিনে আমাদের দুই দফা দাবি নিয়ে তারা কিছুই বলেনি?
নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে তিনি আরও বলেন, আগামী রবিবার দুপুর ১২টার মধ্যে সম্পূরক বৃত্তির সুস্পষ্ট তারিখ ও বিশেষ সিন্ডিকেট বসিয়ে জকসু নীতিমালা অনুমোদন না করা হলে প্রশাসনিক ভবনের সামনে ‘ব্রেক দ্য সাইলেন্স’ কর্মসূচি পালন করব। এ কর্মসূচির আওতায় ওইদিন প্রশাসনিক ভবনের সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি রবিবার সকাল থেকে আমাদের অবস্থান কর্মসূচি চলমান থাকবে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত