শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মানুষ এক প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে—মহাবিশ্বে কোটি কোটি গ্রহ থাকা সত্ত্বেও কেন আমরা কোনো বুদ্ধিমান প্রাণের দেখা পাচ্ছি না?
এবার একদল বিজ্ঞানী বলছেন, হয়তো মহাজাগতিক জীবেরা (এলিয়েন) একসময় তাদের আশপাশ ঘুরে দেখেছিল। কিন্তু পরে বিরক্ত হয়ে পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা বন্ধ করে দিয়েছে।
এই ধারণা এসেছে মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড. রবিন করবেটের একটি নতুন গবেষণাপত্র থেকে। তিনি নাসার গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের গবেষক। করবেট এই ধারণাকে বলেছেন radical mundanity অর্থাৎ ‘অতি সাধারণ সম্ভাবনা’। এর মানে এলিয়েনরা আমাদের মতোই প্রযুক্তিতে কিছুটা এগিয়ে, কিন্তু খুব বেশি নয়।
তার ভাষায়, তাদের প্রযুক্তি হয়তো আমাদের চেয়ে সামান্য উন্নত যেমন আইফোন ১৭-এর চেয়ে আইফোন ৪২, কিন্তু তেমন বিশাল পার্থক্য নয়।
বিজ্ঞানীরা আগে ‘ফার্মি প্যারাডক্স’ নিয়ে নানা ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কেন মহাবিশ্বে এত গ্রহ থাকা সত্ত্বেও আমরা অন্য বুদ্ধিমান প্রাণের কোনো প্রমাণ পাইনি। কেউ বলেছিলেন, হয়তো তারা এত উন্নত যে আমরা তাদের শনাক্তই করতে পারি না। কেউ বলেছেন, হয়তো পৃথিবীকে ‘মহাজাগতিক চিড়িয়াখানা’ ভেবে তারা ইচ্ছে করেই দূরে থেকেছে।
কিন্তু করবেটের মতে, বাস্তব ব্যাখ্যা হতে পারে তারা আমাদের মতোই প্রযুক্তিগত সীমায় পৌঁছে গেছে। তাদের কাছে আলো-গতির চেয়ে দ্রুত ভ্রমণ, ডার্ক এনার্জি বা ব্ল্যাকহোল-নির্ভর যন্ত্র এসব নেই। তাই তারা কোটি বছর ধরে শক্তিশালী লেজার সংকেত পাঠাতে বা গ্রহে গ্রহে ঘোরাফেরা করতে সক্ষম নয়। সম্ভবত তারা কিছু সময় রোবট পাঠিয়ে মহাবিশ্ব ঘুরে দেখেছে, পরে সেই কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে।
বিখ্যাত বিজ্ঞান কল্পকাহিনি লেখক আর্থার সি. ক্লার্ক একবার বলেছিলেন, দুটি সম্ভাবনা আছে—আমরা একা, অথবা আমরা একা নই। দুটোই ভয়ংকর।
তবে সব বিজ্ঞানী একমত নন। যুক্তরাজ্যের জ্যোতির্বিজ্ঞানী প্রফেসর মাইকেল গ্যারেট বলেন, এই তত্ত্বটা মানুষের একধরনের অলসতার ভাবনা। আমি মনে করি না, অন্য কোনো সভ্যতা হয়তো এত দ্রুত এগিয়েছে যে আমরা তাদের শনাক্ত করতে পারি না। সূত্র : গার্ডিয়ান
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল