বসুন্ধরা কিংস একাডেমির বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আজ শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে বসুন্ধরা কিংস একাডেমি ফিউচার লিজেন্ডস ফুটবল টুর্নামেন্ট।
তিনটি বয়সভিত্তিক ক্যাটাগরিতে অংশ নিচ্ছে একাডেমির তিন শতাধিক ফুটবলার, যারা মোট ২২ দলে বিভক্ত হয়ে খেলছে। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী দিনে মাঠে উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান এবং প্রধান কোচ রবার্তো কার্লোস মারিও গোমেজ।
এবারের আসরে ৬ থেকে ১০ বছর বয়সীদের জন্য রয়েছে ৮টি দল, ১১ থেকে অনূর্ধ্ব-১৪ বয়সীদের জন্য আরও ৮টি দল এবং ১৫ থেকে ২২ বছর বয়সীদের জন্য ৬টি দল। দলগুলোর নামকরণ করা হয়েছে নানা রঙে। যেমন লিলি, রোজ, মেরিগোল্ড ইত্যাদি। একাডেমির এই উৎসবমুখর টুর্নামেন্ট নিয়ে উচ্ছ্বসিত ক্ষুদে ফুটবলাররাও, আনন্দে মাতোয়ারা তাদের অভিভাবকেরাও।
এক বছর আগে যাত্রা শুরু করা একাডেমির অগ্রগতি নিয়ে আশাবাদী বসুন্ধরা কিংস সভাপতি ইমরুল হাসান বলেন, ‘আমাদের একাডেমির কার্যক্রম শুরু হয়েছিল ঠিক এক বছর আগে। এখনই দেখতে পাচ্ছি, এটি ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। খুব শিগগিরই আমরা এর ফলাফল হাতে পাব। ইতোমধ্যে এই একাডেমির কয়েকজন ফুটবলার মূল দলের সঙ্গে অনুশীলন করছে। এটা আমাদের জন্য বিশাল প্রাপ্তি। প্রতিবছর যদি এভাবে কিছু খেলোয়াড় উঠে আসে, তাহলে একাডেমি তার উদ্দেশ্য পূরণে সফল হবে। ’
ফুটবল তরুণদের মানসিক বিকাশে ভূমিকা রাখছে বলেও মনে করেন ইমরুল হাসান। তিনি বলেন, ‘আজকে দেখছেন, ছেলেমেয়েরা মাঠে খেলছে, অভিভাবকরা আনন্দে পাশে আছেন। এটা এক উৎসবের পরিবেশ। এতে করে তারা মোবাইল ও ডিভাইসের আসক্তি থেকে মুক্তি পাচ্ছে। এটাই আমাদের জন্য বড় অর্জন। ’
দেশের ক্রীড়াঙ্গনে দীর্ঘদিন ধরে পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে বসুন্ধরা গ্রুপ। ভবিষ্যতেও দেশের খেলাধুলার উন্নয়নে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন ইমরুল হাসান। তিনি বলেন, ‘বসুন্ধরা কিংস শুধু ফুটবল নয়, ক্রিকেট, কাবাডি, দাবা, স্কোয়াশসহ নানা খেলায় পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে। ঢাকার বাইরে আঞ্চলিক পর্যায়েও আমরা ক্রীড়াঙ্গনে সহায়তা দিচ্ছি। বিশেষ করে ফুটবলের দুর্দিনেও বসুন্ধরা গ্রুপ ছিল মাঠে, আর এখন যখন ফুটবলে নবজাগরণ এসেছে, আমরা চাই এই অগ্রযাত্রা দীর্ঘস্থায়ী হোক। ’
বসুন্ধরা কিংসের প্রধান কোচ রবার্তো কার্লোস মারিও গোমেজ বলেন, ‘এই একাডেমি থেকেই গড়ে উঠবে দেশের ভবিষ্যৎ ফুটবলাররা। এটি শুধু বসুন্ধরা কিংস নয়, বরং বাংলাদেশের ফুটবলের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। এই বয়সে শেখার সঠিক পরিবেশ পাওয়া খুব জরুরি, আর বসুন্ধরা সেটিই দিচ্ছে। ভিত্তি শক্ত হলে ভবিষ্যৎও উজ্জ্বল হবে। ’
টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া এক ক্ষুদে ফুটবলার জানায়, ‘এটা বসুন্ধরা কিংস একাডেমির প্রথম টুর্নামেন্ট। ভাবিনি এত সুন্দর আয়োজন হবে। মাঠে খেলার সুযোগ পেয়ে দারুণ লাগছে, এতে সবাই একে অপরের সঙ্গে আরও ভালোভাবে মিশে যাচ্ছে। ’
অভিভাবকদের মধ্যেও আনন্দের ছোঁয়া। এক অভিভাবক বলেন, ‘আমরা এটিকে দারুণ একটি উদ্যোগ হিসেবে দেখছি। বাচ্চারা এখন সারাক্ষণ ঘরে মোবাইলে সময় কাটায়, কিন্তু মাঠে এভাবে খেলার মাধ্যমে তারা শুধু শারীরিকভাবে নয়, মানসিকভাবেও উন্নতি করছে। দলগতভাবে খেলার ফলে তাদের মধ্যে সহযোগিতা ও মানবিক মূল্যবোধও বাড়ছে। ’
বসুন্ধরা কিংস একাডেমির হাতে ধরে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে দেশের ক্ষুদে ফুটবলাররা। তাদের চোখে এখন ভবিষ্যতের বড় তারকা হওয়ার স্বপ্ন; যারা একদিন দেশের ফুটবলে আলো ছড়াবে নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি হয়ে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ