বগুড়ার বাজারে সবজির দাম আকাশছোঁয়া। কিছুতেই স্বস্তি ফিরছে না। এমন পরিস্থিতি নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। টানা বৃষ্টিতে কৃষকের ফসলের ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় সরবরাহ সংকটে বগুড়ার বাজারগুলোতে। ফলে ৬০-১০০ টাকা কেজির কমে মিলছে না বেশিরভাগ সবজি। এমন অস্বস্তিতে মাস পেরিয়ে গেলেও ব্যবসায়ীরা বলছেন, সবজির দাম সাধারণের নাগালে আসতে আরও সময় লাগবে।
জানা গেছে, টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে জেলায় অনেক সবজির ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। এতে করে স্থানীয় হাট-বাজারগুলোতে সবজির সরবরাহ ঘাটতি দেখা দেয়। ফলে সবজির দাম চড়া। কৃষক কিছুটা সহনশীল দামে তাদের উৎপাদিত সবজি বিক্রি করলেও মধ্যস্বত্বভোগীরা সেই সবজি কয়েক হাত ঘুরে ভোক্তার কাছে তা দ্বিগুণ দামে তুলে দিচ্ছেন। এ কারণেও সবজির দাম বাড়ছে। বাজারে প্রায় সব সবজিই ৬০ থেকে ১০০ টাকার কমে মিলছে না। এতে করে বিপাবে পড়ছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ।
শুক্রবার বগুড়ার রাজাবাজার, ফতেহ আলী বাজার, কলোনী, খান্দার ও বকশি বাজারসহ বেশকিছু বাজার ঘুরে দেখা যায়- পটল, করলা, ঢেঁড়স ও ঝিংগা ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। মূলা ও চিচিংগার কেজি ৬০ টাকা, বেগুনের কেজি ১০০ থেকে ১২০টাকা, বরবটি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, শিম ২৪০ টাকা, নতুন ফুলকপি ১৮০টাকা, কাঁচামরিচ ১৬০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৫০ টাকা, পেঁপেঁ ২৫ টাকা, বইকচু ৬০ টাকা, আলু প্রকারভেদে ২০ থেকে ২৫ টাকা, পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, আদা ১৪০ টাকা, রসুন মানভেদে ১২০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে ফতেহ আলী বাজারে প্রতি কেজি বিআর-২৮ চাল ৬০ থেকে ৬২ টাকা, বিআর-৪৯ চাল ৬২ থেকে ৬৩ টাকা, স্বর্ণা ৫৮ থেকে ৬০টাকা, কাটারিভোগ ৭২ থেকে ৭৫টাকা, নাজিরশাইল ৮৫ থেকে ৮৬ টাকা এবং মিনিকেট চাল ৭৫ থেকে ৭৬ টাকায় বেচাকেনা হতে দেখা যায়। ডিমের হালি ৪৬ টাকা, দেশি মুরগির কেজি ৫২০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৮০টাকা এবং ককরেল মুরগি ২৭০ টাকায় বেচাকেনা হতে দেখা যায়। এছাড়া গরুর মাংস ৭২০ থেকে ৭৫০ এবং খাসির মাংসের কেজি ১০৫০ থেকে ১১শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিন আড়াই থেকে তিন কেজি ওজনের সিলভার কার্প মাছ প্রতি কেজি ২৫০ টাকা, তিন কেজি ওজনের কাতল মাছ ৩৫০ টাকা এবং দেড় থেকে দুই কেজি ওজনের রুই মাছ ৩০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা যায়। চিংড়ির কেজি ৮০০ টাকা, টেংরা মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০টাকা, পাবদা ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
রাজাবাজারের সবজি ব্যবসায়ী রিপন মিয়া জানান, টানা বৃষ্টিতে কৃষকের ফসলের ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এর প্রভাবে স্থানীয় হাট-বাজারগুলোতে সবজি সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ফলে সবজির বাজারে এমন অস্বস্তি বিরাজ করছে। আমাদেরকেও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তবে কয়েক দিনের মধ্যে বাজারে শীতের সবজি উঠতে শুরু করবে। তখন বাজার স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
বাজার করতে আসা শহরের কলোনী এলাকার সালমা আক্তার জানান, ৬০ থেকে ১০০ টাকার কমে সবজি মিলছে না। প্রায় এক থেকে দুই মাস বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। সবজির দাম এমন চড়া হওয়ায় দিশেহারা নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ।
বিডি প্রতিদিন/এএম