২১ অক্টোবর, ২০২০ ১৬:০৭

উদ্বোধনের অপেক্ষায় ৭ মার্চ স্মরণে নির্মিত উঁচু তর্জনী ভাস্কর্য

সঞ্জিত সাহা, নরসিংদী

উদ্বোধনের অপেক্ষায় ৭ মার্চ স্মরণে নির্মিত উঁচু তর্জনী ভাস্কর্য

নরসিংদীতে নির্মিত তর্জনী ভাস্কর্য "মুক্তির ডাক" (Call for redemption) এর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। জানা গেছে, ৪১ ফুট উঁচু ভাস্কর্যটি বিশ্বের হাত ভাস্কর্যের মধ্যে উচ্চতার দিক থেকে তিনটির একটি। ১৩ মাস আগে শুরু করা ঐতিহাসিক এ ভাস্কর্যটি চলতি মাসেই উন্মুক্ত হওয়ার কথা সর্বসাধারণের জন্য। মুজিব বর্ষ উপলক্ষে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ওপর নরসিংদী শহরের প্রবেশ মুখে সাহে-প্রতাপ মোড়ে নির্মিত ভাস্কর্যটি উন্মোচনের অপেক্ষায় দিন গুণছে। এর ভাস্কর অলি মাহমুদ।

ভাস্কর্যটির বেদীর চারপাশে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৬৬'র ছয় দফা দাবি, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ঐতিহাসিক মুহূর্তগুলো টেরাকোটার মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। নানা ধরনের অত্যাধুনিক অপটিক্যাল ফাইবার, হোয়াইট সিমেন্ট, পাথরসহ নানা দ্রব্যাদি দিয়ে নির্মিত ভাস্কর্যটি। আলোকসজ্জা, টাইলস, মার্বেল পাথরের বেদীর ওপরে আছে বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক তর্জনীটি। মূল বেদির চারপাশে নান্দনিক পানির ফোয়ারা নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও দ্রুত গতিতে ল্যান্ডস্কেপের  কাজ চলছে। এর মাঝে তর্জনী ভাস্কর্যটির দেখতে প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী ভিড় জমাচ্ছে।

এ বিষয়ে ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোক্তা নরসিংদী পৌরসভার মেয়র ও নরসিংদী শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি কামরুজ্জামান কামরুল বলেন,  নতুন প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার প্রয়াসেই নরসিংদী পৌরসভা থেকে ভাস্কর্যটি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করি, এ শিল্পকর্মটি একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।

এ ভাস্কর অলি মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু মানেই শক্তি, উৎসাহ আর প্রেরণা। বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। তাঁর অসাধারণ বাগ্মিতা, মানবিকতা, মানুষের প্রতি সহমর্মিতার গুণেই তিনি চির অমলিন। তাঁর ৭ই মার্চের ভাষণ আমাদের শিহরিত করে, অনুপ্রাণিত করে। তাঁর উদার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও শোষণহীন সমাজ গড়ার প্রত্যয় আমাদের উজ্জীবিত করে। বঙ্গবন্ধু বাঙালী জাতিকে ৭ মার্চ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বজ্রকণ্ঠে স্বাধীনতার যে ইশারা দিয়েছিলেন সেই বিষয়টি নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার প্রয়াসে মূল বেদিতে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের গুরত্বপূর্ণ সব বিষয় স্থান পাবে। মূল ভাস্কর্যটি বঙ্গবন্ধুর তেজদীপ্ত তর্জনীকে প্রকাশ করেছে। এই তর্জনীর ইশারায় আমারা পেয়েছি স্বাধীন ভূখণ্ড, একটি লাল সবুজের পতাকা। আজ থেকে ১৩ মাস আগে কাজ শুরু করেছিলাম। ইচ্ছে ছিলো মুজিববর্ষের শুরুতেই উদ্বোধন করার। কিন্তু মাঝখানে মহামারি করোনার কারণে কাজে স্থবিরতা আসে। এখনো সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ কিছু অংশ বাকি আছে। আশা করি, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই পুরো কাজ শেষ করে নরসিংদীসহ পুরো দেশবাসীকে নান্দনিক এই ঐতিহাসিক শিল্পকর্মটি উপহার দিতে পারবো।

এর আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার দা সূর্যসেনের আবক্ষ ভাস্কর্য, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের মুরাল বাংলার ঈগল, নরসিংদী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সেবা বৃত্ত, জাগ্রত জাতিসত্তা, লৌহজং উপজেলা কার্যালয়ের সামনে হিমালয়, রায়পুরা কলেজে মহানায়ক নামক শিল্পকর্ম নির্মাণ করে দারুণ প্রশংসিত হন এই তরুণ ভাস্কর।

উল্লেখ্য, পৃথিবীর ইতিহাসে হাত নিয়ে যত শিল্পকর্ম হয়েছে উচ্চতার দিক দিয়ে এটি তিনটির একটি। আর শুধু তর্জনীকে প্রতিপাদ্য করে নির্মাণ করা  ভাস্কর্যের মধ্যে এটি সবচেয়ে উঁচু ভাস্কর্য বলে দাবি করছেন ভাস্কর অলি মাহমুদ।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর