শেরপুরের ঝিনাইগাতীর ৬ নং হাতীবান্ধা ইউনিয়নসহ ঝিনাইগাতীর বিভিন্ন স্থানে বেআইনি যত বিয়ে নিবন্ধন করতেন কাজী বাছেদ মিয়া। তিনি প্রায় দুই মাস আগে হাতীবান্ধা ইউনিয়নে পাগলার মুক গ্রামে বাল্য বিয়ে পড়াচ্ছেন, এমন খবর আসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল মাহমুদের কাছে। এরপর নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই বাছেদ মিয়া পালিয়ে যায়। ঘটনার পরের দিন ওই কর্মকর্তা কাজী বাছেদ মিয়াকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে স্বশরীরে ভলিউমসহ যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করেন।
এর পর নির্বাহী কর্মকর্তা বিভিন্ন মাধ্যমে নিশ্চিত হন ওই কাজী আসলে ভুয়া। বিষয়টি টের পেয়ে ভুয়া কাজী বাছেদ মিয়া দুই মাস পালিয়ে থাকেন। দুই মাস পর বাছেদ মিয়া গত সপ্তাহে হাজির হন নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে। কাজী অনুরোধ করেন তিনি যে কোন শাস্তি মেনে নিতে রাজী আছেন তবুও তার (কাজী) বিরুদ্ধে যেন আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়।
নির্বাহী কর্মকর্তা শর্ত দেন, আপনি (বাছেদ) ভুয়া কাজী এই কথা স্বীকার করে ৭ দিন নিজে উপজেলায় মাইকিং করবেন। আর ১০০ টাকার ১০০ টি স্ট্র্যম্পে ই্উনিয়ন পরিষদে অঙ্গীকার করতে হবে।
শর্ত মোতাবেক আজ বৃহস্পতিবার ছিল মাইকিং করার শেষ দিন। এই ৭ দিন ধরেই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বাছেদ মিয়াকে মাইকিং করতে দেখা গেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কর্তৃক কাজীকে অভিনব এই শাস্তি ও কাজীর এই কান্ডে এই নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে বেশ আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।
বাছেদ মিয়া নিজ খরচে ইজিবাইকে করে তিনি মাইকিং করে নিজে বলছেন, আমি যা করেছি অন্যায় করেছি, আমি আরো অঙ্গীকার করছি যে ভবিষ্যতে আমি কোন প্রকার বাল্যবিবাহ পড়ারো না, অনৈতিক কোন কাজ করবো না।
এদিকে বাছেদ মিয়ার এমন মাইকিংয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে বেশ আনন্দের খোরাক জুগিয়েছে। নির্বাহী কর্মকর্তার এমন কাজকে মানুষ সাধুবাদ জানিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবেল মাহমুদ বলেন, এই কাজীর সরকারি কোন নিবন্ধন নেই, কাজী পরিচয়ে এলাকায় অন্যায় ভাবে বিবাহ সম্পাদন করে আসছিল দীর্ঘদিন ধরেই। অভিনব এই শাস্তিতে ভুয়া কাজীদের উপদ্রব কমবে। বিয়ের মত একটি স্পর্শকাতর কাজ ভুয়া কাজী নিবন্ধন করবেন তা মেনে নেওয়া যায় না।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল