সম্প্রতি ভারতজুড়ে চলছে পশু হত্যা এবং কেনাবেচা সংক্রান্ত বিষয়ে নানা তর্ক-বিতর্ক-সমালোচনা। আর এরই মধ্যে গবাদি পশু বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা বিধি নিয়ে সুর অনেকটাই নরম করল বিজেপি।
এ প্রসঙ্গে দলের অন্যতম নেতা জানিয়েছেন, গরুহত্যা নিয়ে রাজ্যগুলোর সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতা রয়েছে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও জানিয়েছেন, পশু হত্যার ব্যাপারে রাজ্যের আইনের সঙ্গে কেন্দ্রের নির্দেশিকার কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ, পশুহাট থেকে হত্যার জন্য গবাদি পশু কেনাবেচায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। ওই হাট মূলত চাষিদের জন্য। পশু ব্যবসায়ীদের জন্য নয়।
এরই মধ্যে প্রতিবাদের নামে প্রকাশ্যে বাছুর হত্যার জেরে কান্নুরে আট যুব কংগ্রেস কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি, গরুর মাংস খাওয়ার ঘোষণা করে সমালোচনার মুখে পড়েছেন ‘মেক মাই ট্রিপ’-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা কেয়ুর জোশী। টুইটারে নিজেকে মোদি-সমর্থক বলে জানিয়েও খাদ্য স্বাধীনতার পক্ষে প্রশ্ন করেন তিনি। বুধবার রাতেই টপ ট্রেন্ডিং হয়ে যায় ‘বয়কটমেকমাইট্রিপ’। পরে অবশ্য চাপের মুখে ক্ষমা চেয়ে জোশী টুইটটি মুছে দেন।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে পশুহাট থেকে কেনা গবাদি পশু হত্যায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রণালয়। পশুদের উপর নিষ্ঠুর আচরণ নিয়ন্ত্রণ আইন এ ক্ষেত্রে কাজে লাগানো হয়। জেটলি এ বিষয়ে বলছেন, বিভিন্ন রাজ্যে পশু হত্যা সংক্রান্ত নির্দিষ্ট আইন রয়েছে। কেন্দ্রের নির্দেশিকার সঙ্গে সেগুলোর কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ, সংবিধানের ৪৮ নম্বর ধারায় নির্দিষ্ট কয়েকটি পশুকে রক্ষার বিষয় উল্লেখিত আছে। তার মধ্যে গরুও আছে। কিন্তু রাজ্যগুলোকে গরু হত্যা রোধে আলাদা করে আইন আনতে বলা হয়েছিল। বহু রাজ্য সেই আইন আনেনি।
প্রায় একই ধরনের মন্তব্য করেছেন মেঘালয়ের দায়িত্বে থাকা বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র নলিন কোহলি। বিতর্ক এড়াতে তিনি মেনে নিয়েছেন যে, ওই রাজ্যের সিংহভাগ বিজেপি নেতা গরুর মাংস খান। তাই গরু হত্যা নিষিদ্ধ করবে কি না, তা নিয়ে রাজ্যগুলো নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেবে। তাঁর মত, কেন্দ্র এ বিষয়ে স্পষ্টভাবেই বক্তব্য জানিয়েছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণের বিভিন্ন রাজ্যে স্থানীয় মানুষ গরুর মাংস খান। স্থানীয় মানুষের খাদ্যাভ্যাসের দিকে নজর রেখেই সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলো গরু হত্যা নিয়ে আইন আনা বা না আনার কথা ভাববে। কেন্দ্রের এ বিষয়ে কিছু বলার নেই।
বিডি-প্রতিদিন/৩ জুন, ২০১৭/ওয়াসিফ