কুমিল্লার নগরীর প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড়ে বছরে একবার কোরবানির মাংস বিক্রির হাট বসে। হাটকে কেন্দ্র করে নিম্নআয়ের মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয় এখানে। যারা মাংস সংগ্রহ করেন, তারা কিছুটা রেখে বাকিটা হাটে নিয়ে আসেন। এছাড়া যারা কোরবানি দিতে পারেন না, কম দামের আশায়, তারাও এ হাটে আসেন।
নির্মাণ শ্রমিক মো. সোহেল এসেছেন শাকতলা থেকে। দেড় হাজার টাকায় আড়াই কেজির মত মাংস কিনেছেন। মাংস কিনতে তিনি দুপুর থেকে অপেক্ষা করছেন। কোরবানির কাজ শেষ হওয়ায় হাট জমে ওঠে। তারপর সোহেল মাংস কিনেছেন।
শনিবার বিকেলে সরেজমিন দেখা যায়, কান্দিরপাড়ে যানজট নেই। যেটুকু জটলা হয়ে আছে, সেটা মাংসের হাটের জন্য। এই হাটের ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই নিম্নআয়ের মানুষ। পূবালী ব্যাংকের সিঁড়ির সামনে মূলত হাটটি বসে। তারপর ধীরে ধীরে হাটের পরিধি বাড়তে থাকে। তবে এ বছর ভ্রাম্যমাণ এই মাংসের হাট বসেছে নগরীর কান্দিরপাড়, ঝাউতলা, পুলিশ লাইন ও পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড।
এই হাটে মাংস বিক্রি করতে এসেছেন রঙের শ্রমিক ধর্মপুরের সোবহান মিয়া। সকালে নামাজ আদায় করে বাড়িতে ছেলে-মেয়ে নিয়ে ডিম-তরকারি দিয়ে ভাত খেয়েছেন। দুপুর হলে ব্যাগ হাতে বেরিয়ে যান। আশপাশের এলাকা ঘুরে ৬ কেজি মাংস পেয়েছেন। বাড়িতে তিন কেজির মতো রেখে, বাকিটা কান্দিরপাড় হাটে এনে বিক্রি করেছেন দেড় হাজার টাকায়।
এ বছর হাটে ক্রেতাদের অভিযোগ, বেশি লাভের আশায় হোটেল মালিকরা বাড়তি দাম দিয়ে হাটের মাংস কিনে নিয়ে যান। ফলে যারা নিম্নআয়ের মানুষজন হাটে মাংস কিনতে এসেছেন, দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদের অনেকে পরিমাণ মতো মাংস কিনতে পারেননি।
এদিকে বেশ কয়েকজন ভাতের হোটেলের মালিক নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, বাজার থেকে মাংস কিনলে, কসাইরা প্রতি কেজিতে আড়াইশ থেকে তিনশ গ্রাম হাড় দেয়। এছাড়া মাংসে চর্বিও থাকে। যারা হোটেলে খেতে আসেন, তারা শুধু মাংস চান, চর্বি ও হাড় দেখলে পাল্টে দিতে বলেন। এতে রান্না করা মাংস বিক্রি করে তেমন মুনাফা করা সম্ভব হয় না। এই জন্য কম দামে মাংস কিনতে এই হাটে আসে ভাতের হোটেল মালিকরা।
বিডি প্রতিদিন/এমআই