যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ধনকুবের প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের সম্পর্ক ঘিরে চলমান উত্তেজনার মধ্যে নতুন করে আলোচনায় এসেছে বিতর্কিত ‘এপস্টেইন ফাইল’। সম্প্রতি মাস্ক দাবি করেন, এই ফাইলে ট্রাম্পের নাম রয়েছে এবং সেটিই নথিগুলো প্রকাশ না হওয়ার মূল কারণ। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই মাস্ক নিজেই ওই পোস্ট মুছে ফেলেন।
‘এপস্টেইন ফাইল’ বলতে বোঝানো হয় যৌন অপরাধ মামলায় অভিযুক্ত জেফরি এপস্টেইনের মৃত্যু (আত্মহত্যা) পরবর্তী মামলাসংক্রান্ত গোপন নথি। এসব নথিতে এপস্টেইনের ভ্রমণ, কাদের সঙ্গে দেখা করেছেন, কারা তার নেটওয়ার্কে ছিলেন—এসবের বিস্তারিত তথ্য রয়েছে। নথিগুলোর বড় একটি অংশ এখনো গোপন রাখা হয়েছে, যা জনমনে ব্যাপক কৌতূহল ও নানা ষড়যন্ত্র তত্ত্বের জন্ম দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ ( আগেন নাম টুইটার), মাস্ক লেখেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম এপস্টেইন ফাইলে রয়েছে। এ কারণেই তা প্রকাশ করা হচ্ছে না। ভালো থাকো, ডেজেটি (ডোনাল্ড জন ট্রাম্প)!
এই পোস্ট করার কিছু সময় পরই মাস্ক তা মুছে দেন। তবে ততক্ষণে তা ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন মাধ্যমে এবং ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।
এই ঘটনার মধ্যে ফান্ড ম্যানেজার বিল অ্যাকম্যান টুইটারে মাস্ক ও ট্রাম্পকে উদ্দেশ করে ‘সমঝোতা’ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে থাকলে অনেক বেশি শক্তিশালী।’ উত্তরে মাস্ক লেখেন, ‘আপনি ভুল বলেননি।’
সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা এখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে মাস্কের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কিছু বলার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে বলছেন। এমনটাই জানিয়েছে রাজনৈতিক সংবাদমাধ্যম পলিটিকো।
ট্রাম্প যদিও এই দ্বন্দ্বকে হালকা করে দেখানোর চেষ্টা করেছেন। পলিটিকোকে ফোনে তিনি বলেন, ‘সবকিছু ঠিক আছে। আগের চেয়ে ভালো চলছে।’
তবে ইলন মাস্ক এর আগেও বলেছিলেন, তার ছাড়া ট্রাম্প নির্বাচনে হারতেন, কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে ডেমোক্র্যাটরা নিয়ন্ত্রণ পেত এবং সিনেটে রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকত না।
ট্রাম্পও পাল্টা জবাব দিয়েছেন। তার নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ পোস্ট করে বলেন, ‘ইলন আমার বিরুদ্ধে গেলেও আমি কিছু মনে করিনি, কিন্তু ওটা ওর অনেক আগেই করা উচিত ছিল।’
সম্প্রতি মাস্ক সরকারি ব্যয়ের একটি বিলকে ‘জঘন্য’ বলে সমালোচনা করেন, যা এই দ্বন্দ্বের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প ও মাস্কের এই সম্পর্কের টানাপোড়েন শুধু ব্যক্তিগত নয়, এর পেছনে রাজনৈতিক ও আর্থিক হিসাবও জড়িয়ে আছে। এপস্টেইন ফাইল ঘিরে এই নতুন মোড় তাদের সম্পর্ক এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিতে পারে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল