ম্যানচেস্টারে কনসার্টে আত্মঘাতী হামলার দুই সপ্তাহ পরেই আবারও রক্তাক্ত হলো যুক্তরাজ্য। এবার হামলা হলো দেশটির প্রাণকেন্দ্র লন্ডন ব্রিজ, যা টেমস নদীর ওপর অবস্থিত। এতে ৬ জন সাধারণ মানুষ এবং তিন সন্দেহভাজন হামলাকারী নিহত হয়। আহত হয়েছেন আরও ৪৮ জন। হামলাটিকে সন্ত্রাসী হামলা উল্লেখ করে দেশজুড়ে সতর্কতা জারি করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্র তেরেসা মে।
এদিকে, আগামী ৮ জুন অনুষ্ঠিতব্য দেশটির সাধারণ নির্বাচনের আগে এমন হামলা চিন্তায় ফেলে দিয়েছেন দেশটির সরকারের নীতি নির্ধারকদের। তবে এমন হামলার নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খান। তিনি বলেন, সন্ত্রাসীরা ব্রিটেনের গণতন্ত্র ও আগামী ৮ জুনের নির্বাচন ব্যহত করতে চায়। কিন্তু আমি স্পষ্ট বলতে পারি, এই হামলা নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলবে না।
শনিবার রাতে হামলার সময় বিবিসির সাংবাদিক হলি জোন্স লন্ডন ব্রিজে ছিলেন। তিনি জানান, লন্ডনের কেন্দ্রে ব্যস্ত লন্ডন ব্রিজে পথচারীদের ওপর দ্রুত গতির একটি ভ্যান উঠিয়ে দেয় সন্দেহভাজন হামলাকারীরা। তিনি বলেন, একজন পুরুষ "ঘণ্টায় প্রায় ৫০ কিলোমিটার গতিতে" গাড়িটি চালাচ্ছিল।
খবরে বলা হয়, একই সাথে লন্ডন ব্রিজের কাছে বারো মার্কেট এলাকায় ছুরি হাতে সাধারণ মানুষের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে। বারো মার্কেট এলাকায় অনেক রেস্তোঁরা ও বার রয়েছে।
এদিকে, বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসিকে জানায়, লন্ডনে হামলাকারীদের মধ্যে একজনের শরীরে নকল সুইসাইড ভেস্ট পরা ছিল। তবে লন্ডন পুলিশ এই খবর গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
পুলিশ জানায়, গুলি করে হত্যা করার আগ পর্যন্ত মোটামুটি আট মিনিট ধরে চলে হামলা। প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন জানান, ছুরিকাঘাতের সময় হামলাকারীরা ‘এটা সৃষ্টিকর্তার জন্য’ বলে চিৎকার করছিল। এটিকে সন্ত্রাসী হামলা বলে নিশ্চিত করেছে লন্ডন পুলিশ। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে এই হামলাকে ‘ভীতিকর ঘটনা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
এর আগে মার্চ মাসে ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজে পথচারীদের ওপর গাড়ি চালিয়ে দেওয়ায় পাঁচজন নিহত হন। এ ছাড়া পার্লামেন্টের বাইরে পুলিশের এক কর্মকর্তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এরপর গত ২২ মে ম্যানচেস্টারে কনসার্টে আত্মঘাতী হামলায় ১৯ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
বিডি-প্রতিদিন/০৪ জুন, ২০১৭/মাহবুব