ম্যানচেস্টারে কনসার্টে আত্মঘাতী হামলার দুই সপ্তাহ পরেই আবারও রক্তাক্ত হলো যুক্তরাজ্য। এবার হামলা হলো দেশটির প্রাণকেন্দ্র লন্ডন ব্রিজ, যা টেমস নদীর ওপর অবস্থিত। এতে ৬ জন সাধারণ মানুষ এবং তিন সন্দেহভাজন হামলাকারী নিহত হয়। আহত হয়েছেন আরও ৪৮ জন। হামলাটিকে সন্ত্রাসী হামলা উল্লেখ করে দেশজুড়ে সতর্কতা জারি করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্র তেরেসা মে।
হামলার প্রত্যক্ষদর্শী ব্রিটিশ সাংবাদিক আয়ান জানালেন, রাত দশটা নাগাদ উন্মত্ত গতিতে ছুটে আসা গাড়িটি চোখে পড়েছিল। অফিসের কাজ চুকিয়ে লন্ডন ব্রিজ ধরে বাড়ির পথে হাঁটছিলাম। তিনি জানান, ধেয়ে আসা গাড়িটি এড়িয়ে লাফ দিয়ে কোন মতে পাশে চলে যেতে পেরেছিলেন বলে রক্ষা পেয়েছেন তিনি।। না হলে যে কী হতো, ৫৫ বছর বয়সি ব্রিটিশ সাংবাদিক আর ভাবতেও পারছেন না!
ঘটনার পরে আয়ান বলছিলেন, ‘‘হঠাৎ দেখি ভীষণ জোরে ছুটে আসছে গাড়িটি। মানুষ চিৎকার করছে। এদিক ওদিক ছুটে পালাচ্ছে। তবু ওই গাড়িটির মুখে পড়ে গিয়েছে কেউ কেউ।’’ লন্ডন ব্রিজের অদূরেই দু’টি ব্রিটিশ কাগজের অফিস। স্বভাবতই ওই চত্বরে ছিলেন অনেক সাংবাদিক। আয়ানের কথায়, ‘‘এক বার সরে গিয়েও মনে হলো ফের আমার দিকেই যেন ধেয়ে আসছে গাড়িটি। পিছিয়ে গেলাম ফুটপাথের দিকে। তখনই বুঝলাম আমার বাঁ হাত ঘেঁষে বেরিয়ে গেল সেটা।’’
ঘটনার সময়ে লন্ডন ব্রিজের উপরেই ছিলেন আর এক ব্রিটিশ চ্যানেলের সাংবাদিক হলি জোন্স। তিনি বলেন, ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার বেগে ছুটছিল ভ্যানটা। তাঁর ডান দিক ছুঁয়ে বেরিয়ে যায় ভ্যান। হলি জানান, তাঁর চোখের সামনেই ভ্যানের ধাক্কায় লুটিয়ে পড়েন চার পাঁচ জন।
ঘটনাস্থল থেকে কয়েক মিটার দূরে সেন্ট ক্রিস্টোফারর্স ইন-এ বসে ছিলেন স্টিভেন গিবস। তিনি বলেছেন, একটা কালো ট্যাক্সি ছুটে গেল। শুনলাম কে যেন বলে উঠল, ‘জঙ্গি হামলা হয়েছে। পালাও!’ তার পরেই স্টিভেন উঠে দেখার চেষ্টা করেন কী হচ্ছে। তত ক্ষণে পুলিশের গুলির আওয়াজ আর মানুষের চিৎকার চারদিকে। গিবস আশ্রয় নেন বারের বেসমেন্টে। ততক্ষণে হুইট্সহিফ পাব-এ গুলি মেরে আততায়ীদের কাবু করে ফেলেছে পুলিশ। আশপাশে অনেক পাবেই আতঙ্ক ছড়ায়। যে যেখানে ছিলেন, প্রত্যেকেই ভেবে নেন, তাঁর পাবেই হামলা হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে পুলিশকে সাহায্য করেন স্থানীয় লোকজনও। সূত্র: আনন্দবাজার।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার