ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ ১০৫তম দিনে গড়িয়েছে। এ যুদ্ধে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ওপর চাপ বাড়িয়ে চলেছে ক্রেমলিন।
রাশিয়ার স্বাধীন সংবাদমাধ্যম মস্কো টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাইবেরিয়ার বুরিয়াটিয়া অঞ্চলের ইংরেজি শিক্ষক ইয়েলেনা বাগায়েভা (৩১) স্কুলে যুদ্ধ নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেন। এই শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের বোঝাতে চেয়েছিলেন, যেকোনো যুদ্ধই খারাপ। ইউক্রেনীয়দের মৃত্যু কামনা বা ঘৃণা করা ঠিক নয়। কারণ, তারাও মানুষ।
এই আলোচনা এক ছাত্র রেকর্ড করে। পরের দিন ওই ছাত্রের মা পুলিশের কাছে ইয়েলেনার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন। তার বিরুদ্ধে রুশবিরোধী প্রচারের অভিযোগ আনা হয়।
ইয়েলেনার বিরুদ্ধে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীকে বদনামের অভিযোগ এনে ৪০ হাজার রুবল জরিমানা করা হয়। সম্প্রতি রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা নিয়ে অপপ্রচার সংক্রান্ত আইন করেছে। ইয়েলেনাকে সেই আইনে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর একে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ বলে প্রচার করছে ক্রেমলিন। যুদ্ধের পক্ষে জনসমর্থন তৈরিতে সমাজের সর্বস্তরে বার্তা ছড়ানো হচ্ছে। শিশু শ্রেণির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও বাদ যায়নি।
ক্রেমলিন সমালোচক অ্যালেক্সি নাভালনির আন্দোলনের সমর্থক টিচার্স অ্যালায়েন্স ইউনিয়নের প্রধান দানিল কেন বলেন, সারা দেশের বেশির ভাগ স্কুলে যুদ্ধের পক্ষে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম দেখলে যে কেউ ধারণা করতে পারবেন, রাশিয়ার ৯৫ শতাংশ স্কুলে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রতি সমর্থন রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন স্কুলশিক্ষক বলেন, তাদের স্কুলের সব শিক্ষককে যুদ্ধের সমর্থনে শিক্ষার্থীদের নিয়ে ক্লাস বৈঠক আয়োজন করতে বলা হয়েছে। কোনো শিক্ষক আদেশ পালনে ব্যর্থ হলে অন্য শিক্ষককে তা করতে হবে। এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
দানিল কেন জানান, টিচার্স অ্যালায়েন্স প্রতি সপ্তাহে ১০-১৫ জন শিক্ষকের চিঠি পাচ্ছে, যারা যুদ্ধবিরোধী মনোভাবের জন্য চাকরিচ্যুত, চাকরি ছাড়ার চাপ ও জরিমানার শিকার হয়েছেন। তবে প্রকৃত সংখ্যা এর বেশি হতে পারে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল