মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ফুল পাল্টে দিয়েছে জীবন

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

ফুল পাল্টে দিয়েছে জীবন

শুরু হয়েছে বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। এ উপলক্ষে জমে উঠেছে বগুড়ার ফুলের বাজার। এ মাসে ফুল ব্যবসায়ীরা প্রায় ১৫ লাখ টাকার ফুল বিক্রি করবেন বলে জানিয়েছেন। তবে সারা বছর বগুড়ার বাজারে প্রায় ৪ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনা হয়ে থাকে। এর মধ্যে খুচরা দোকানে প্রায় আড়াই কোটি টাকা আর পাইকারি বাজারে দেড় কোটি টাকার ফুল বেচাকেনা হয়। বিভিন্ন দিবসে, বিয়ের অনুষ্ঠানসহ রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ফুলের চাহিদা রয়েছে। তবে ডিসেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত ফুলের চাহিদা বেশি থাকে। বিক্রিও বেড়ে যায়।

বগুড়ায় কৃষিতে নতুন সংযোজন হয়েছে ফুল চাষ। অনেক বেকার যুবক লাভবান হওয়ার পর থেকে বগুড়ায় ফুল চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষ শুরু হয়েছে। সদর উপজেলাসহ শিবগঞ্জ, শাজাহানপুর ও সোনাতলা উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষ হচ্ছে। তবে জেলার মহাস্থানগড় এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষ শুরু হয়েছে অনেক আগেই। প্রায় সব ধরনের ফুলই চাষ হচ্ছে। যেমন-  গোলাপ, রজনীগন্ধা, গ্লাডিয়া, জার্বেরা, গাদা ফুল, জিপসি, কামিনি পাতা, চন্দ্রমল্লিকা, গ্যালোডিলাক্স, কম্পোন, রড স্টিক। বগুড়ার চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য জেলাতেও এসব ফুল বিক্রি হচ্ছে। নব্বই দশকে বগুড়া শহরের খোকন পার্কের সামনে কিছু ব্যবসায়ী গোলাপ ফুল বিক্রি শুরু করেন। বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে এই ফুলের চাহিদা বাড়তে থাকে। পরে চাহিদার দিকে খেয়াল রেখে বগুড়া পৌরসভা থেকে ১৭টি দোকান করে দেওয়া হয়।

ফুল মার্কেটের ব্যবসায়ী সূত্রে জানা যায়, এই মার্কেটে ১৭টি দোকান রয়েছে। প্রতিদিন প্রতিটি দোকানে ৭ হাজার টাকার ফুল বিক্রি করলেও এক দিনে দাঁড়ায় ১ লাখ ১৯ হাজার টাকা। এ হিসাবটি শুধু বগুড়া শহরের খোকন পার্কের ফুল মার্কেট ব্যবসায়ীদের। এর সঙ্গে প্রায় শতাধিক নার্সারি আছে যারা প্রতিদিন পাইকারি বাজারে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকার ফুল বিক্রি করে থাকে। প্রতিদিন প্রায় লাখ টাকার ফুল বেচাকেনা হয়। এতে বছরে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকার ফুল বিক্রি দাঁড়ায়। সারা বছর ফুল বিক্রি হলেও বিশেষ দিবস ও উৎসবকে সামনে রেখে বিভিন্ন মোকাম থেকে ফুল আনা হয়। ফেব্রুয়ারি মাসে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ফুল বিক্রি হয় এ ফুল মার্কেটে। বগুড়া ফুল মার্কেটের জুয়েল ফুল ঘরের মালিক রমজান আলী জানান এখন বগুড়াতে সব ধরনের ফুলের চাষ হচ্ছে। আমরা স্বল্প পরিবহন খরচে সহজে ফুল পেয়ে থাকি। বগুড়ায় ফুলের চাহিদা আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। লাভলী ফুল ঘরের মালিক মাইনুল ইসলাম জানান, আমরা প্রতিদিন প্রায় ৭-১০ হাজার টাকার ফুল বিক্রি করি। এখন বেচাকেনা একটু কম। দু-চার দিনের মধ্যে বেচাকেনা বেড়ে যাবে। বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. আবদুর রহিম জানান, জেলায় ২৬ হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হয়েছে। বগুড়ায় ফুলের চাহিদা এবং চাষ দুটোই বেড়ে গেছে। অনেক বেকার যুবক ফুল চাষ করে লাভবান হয়েছেন। বগুড়ায় ফুলের চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, রংপুর, দিনাজপুর, সিরাজগঞ্জসহ অন্যান্য জেলায় বিক্রি হচ্ছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর