বৃহস্পতিবার, ১৮ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
সরগরম সিটি নির্বাচনের মাঠ

নির্বাচনকেন্দ্রিক আলাপে উন্নয়নের কথা

রাজশাহী

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

নির্বাচনকেন্দ্রিক আলাপে উন্নয়নের কথা

রাজশাহী নগরীতে এখন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের (রাসিক) আমেজ। ঘুরেফিরে আসছে বর্তমান জনপ্রতিনিধিরা কী করেছেন আর কী করেননি সেসব আলোচনা। নান্দনিক সড়কবাতির জন্য দেশজুড়ে বিশেষ পরিচিতি পেয়েছে রাজশাহী। তবে অবকাঠামোগত উন্নয়ন ম্রিয়মাণ হচ্ছে নাগরিক সেবার ঘাটতির কারণে। স্বচ্ছ ও সুপেয় পানির বড় সংকট। রাস্তা ও ফুটপাতে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজি, মাদকের ছড়াছড়ি, কিশোর গ্যাংয়ের দাপটসহ নানা ধরনের নাগরিক সংকটের কথা উঠে আসছে নির্বাচনকেন্দ্রিক আলাপে। উন্নয়নচিত্র যেমন ধরা পড়ছে তেমনি নানা সমস্যার কথাও আসছে আলোচনায়। সুশাসন বিশ্লেষক সুব্রত পাল বলেন, নগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেববাজার অপরিকল্পিত, নোংরা। একটু বৃষ্টিতেই সড়কে পানি জমে। জিরো পয়েন্ট থেকে মণি চত্বর পর্যন্ত যানবাহন দূরের কথা, হাঁটতেও বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। আরডিএ মার্কেটের সামনে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে সুবিধা হয়েছে দখলদারদের। এতে যানজট কমেনি বরং বেড়েছে। নগরীর ২ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম মোল্লাপাড়ার মো. আবদুল্লাহ পেশায় কলেজশিক্ষক। এ মহল্লায় তাঁর দুই তলার একটি বাড়ি আছে। বাড়ির সামনে গিয়ে দেখা গেছে, পোলের পরিবর্তে বাঁশ দিয়ে বিদ্যুতের তার বাড়ি পর্যন্ত নিতে হয়েছে। যে রাস্তা ধরে তিনি বিদ্যুতের তার এনেছেন সেই রাস্তাটি কাঁচা, নেই সড়কবাতি। এমনকি পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য নেই নালার ব্যবস্থা। এ পরিস্থিতির জন্য এলাকাবাসী স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে দায়ী করেন। কারণ হিসেবে তারা জানান, উন্নয়ন কাজের সুষম বণ্টন হচ্ছে না। ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার চাহিদাপত্র অনুসারে কাজ করা হয়নি। মেয়রসহ নেসকোর চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে। নেসকো প্রাইভেট হলেও সেবার মান বাড়েনি। উন্নতি না হয়ে অবনতি হয়েছে।

ওরা ওদের মনমতো কাজ করে।’ কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে মধ্যশহর এলাকার প্রশস্ত সড়ক ও নান্দনিক ফুটপাত সাধারণ নগরবাসীর কাজে আসছে না।

নগরীর সাহেববাজার, নিউমার্কেট, লক্ষ্মীপুর, কোর্ট এলাকা, তালাইমারী, ভদ্রা ও বিনোদপুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এলাকাগুলোর নবনির্মিত ফুটপাতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সড়কগুলোও দখল হয়ে গেছে। ফুটপাত বা সড়কে হাঁটার উপায় নেই। সড়কেরও অর্ধেকটা দখল হয়ে গেছে। ফলে যান চলাচলও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এই নাগরিক সংকট দূর করতে কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) রাজশাহী জেলা সভাপতি আহমদ সফিউদ্দিন বলেন, এই শিক্ষানগরীতে আছে বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, পলিটেকনিকসহ অনেক সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। নতুন করে নির্মাণ হচ্ছে আরও দুটি সরকারি স্কুল ও কলেজ। রাজশাহীর বাহ্যিক উন্নয়ন দৃশ্যমান। চলমান উন্নয়ন কাজগুলো বাস্তবায়ন হলে রাজশাহীর গুরুত্ব আরও বাড়বে। মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহী নগরীর জন্য প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প এনেছি। মাত্র ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এবার নির্বাচিত হলে বাকি টাকার পাশাপাশি আরও ৩ থেকে ৪ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হবে। সেসব কাজ সম্পন্ন হলে নগরবাসীর আর কোনো সমস্যা থাকবে না।

আগামী ২১ জুন রাসিক নির্বাচন। এবারও মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন। মাঠে বিএনপি নেই, শক্ত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীর কথা এখনো শোনা যায়নি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে প্রথম রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন লিটন। ২০১৩ সালে বিএনপির মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের কাছে হেরে যান। ২০১৮ সালে পুনরায় মেয়র নির্বাচিত হন।

 

সর্বশেষ খবর