দেশের পোশাকশিল্পের অস্থিরতা নিয়ে খাতসংশ্লিষ্টরা বলেছেন, শিল্পঘন এলাকায় শ্রমিক আন্দোলন বা শ্রমিক অসন্তোষ নয়। এটা রপ্তানি আয়ের ৮৪ ভাগ নেতৃত্ব পোশাকশিল্পকে ধ্বংসের আন্দোলন। শ্রমিকের সব দাবি মেনে নেওয়ার পরও তাদের আন্দোলন চলমান থাকায় বোঝা যায় এটার পেছনে কলকাটি নাড়ছে তৃতীয় পক্ষ। গতকাল রাজধানীর গলফ গার্ডেনে আয়োজিত ‘পোশাকশিল্পের চলমান অস্থিরতা দূরীকরণে করণীয়’ বিজিএমইএর সাধারণ সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় শিল্পোদ্যোক্তাদের কাছ থেকে এসব কথা উঠে আসে। সভায় সভাপতিত্ব করেন ফোরাম সভাপতি এম এ সালাম। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পোশাক খাতের শিল্পোদ্যোক্তারা।
স্বাগত বক্তব্যে ডাকসুর সাবেক সদস্য, ফোরাম সাধারণ সম্পাদক এবং নেক্সাস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুর রশিদ হোসাইনী বলেন, গার্মেন্টশিল্পের অরাজকতা, শ্রমিক অসন্তোষের নামে যারা দেশের অর্থনীতিকে ধূলিসাৎ করতে চায়, যারা পাশের দেশের স্বার্থ রক্ষায় নিয়োজিত, তাদের বিষয়ে দেশের সুশীলসহ সবার কাছে একটাই দাবি- যারা শ্রমিকের টাকা পরিশোধ করে না, টাকা পাচার করে, তাদের তুলে ধরুন। তাদের কারণে বেকায়দায় থাকেন সত্যিকারের মালিকরা। সবার কথাগুলো আমরা যথাযথভাবে কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরব।
বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক লুৎফর আমিন বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে যেভাবে প্রচার হয়েছে সেটার সল্যুশন নিয়ে কথা বলছেন না। ভাঙচুর, হুমকি চলছে। আমার কারখানা ভাঙচুর না হলেও পাশেরগুলোর অবস্থা তো ভালো না। একজন উদ্যোক্তা কারখানা বন্ধ করবেন, বকেয়া দিয়ে দিচ্ছেন। এক মাসের বেতন দেওয়া কোনো কারণে হয়নি। এই অবস্থায় সাভার রোডে দুই দিন ৩০ কিমি যানজট তৈরি হলো। আর্মির লোক এসে কথা বলে চলে যায়, পুলিশ আসে না। ১৮ বছর ধরে কারখানা চালানোর পর সেই উদ্যোক্তাকে আটক করা হলে এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে। শিল্পপুলিশ আমাদের পাসপোর্ট সম্পর্কে জানতে চায়, কেন। দেশের অর্থনীতির জন্য এতকিছু করার পর কেন আমাদের ভিলেন হতে হবে।
বিজিএমইএর সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ফয়সাল সামাদ বলেন, বিগত ৩০ দিন ধরে যেসব সদস্যের কারখানা বন্ধ হয়েছে, আজ তাদের কথা বলার সুযোগ হয়েছে। যারা আশুলিয়ায় আক্রান্ত কারখানার মালিক, তারা আজ আসেননি, কেন? আজ বিজিএমইএ সদস্যরা হতাশ। আজ আপনার কারখানায় সমস্যা, কাল যে আমার সমস্যা হবে না, এটার গ্যারান্টি নেই। সবাইকে কথা বলতে হবে, সমাধান নিয়ে। রাইজিং গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ খান বাবু বলেন, এই মুহূর্তে আশুলিয়ায় যা হচ্ছে সেটা শ্রম আইন সমস্যা নয়, এটা আইনশৃঙ্খলার সমস্যা। যে আইন ভঙ্গ করবে তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে আসছি। বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, দরকষাকষি বা নিজেদের দাবি আদায় করার বিষয়ে মুখ খুঁজে পাচ্ছি না। অথচ এটা ফোরাম বা বিজিএমইএর দাবি নয়। প্রধান উপদেষ্টা পোশাক খাত নিয়ে ভিশন বিচলিত, সমাধান খুঁজছেন।
বায়ারের দাম নিয়েও উনি কথা বলবেন। উনার মতো বিশ্ববরেণ্যকে ব্যবহার করতে না পারলে আমাদের (বিজিএমইএ) ব্যর্থতা। আমরা উনার কাছে গিয়ে দাবিদাওয়া উপস্থাপন করতে প্রস্তুত আছি। আমরা কোনো দলের কথা চিন্তা না করে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বসতে হবে। এক্সিট পলিসি নিয়ে কাজ করতে পারব, এতদিন আমরা পারিনি।